এমপি হওয়ার দৌড়ে চট্টগ্রামের যেসব নেত্রীরা

চাটগাঁ নিউজ ডেস্কঃ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরপর নারী সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচন নিয়ে আলোচনায় সরগরম রাজনীতির মাঠ। চট্টগ্রাম থেকে সংরক্ষিত আসনে এমপি হয়ে সংসদে যাওয়ার দৌড়ে আছেন ক্ষমতাসীন দলের বেশ কয়েকজন নেত্রী। একাদশ সংসদে চট্টগ্রাম থেকে দু’জন নারী সংরক্ষিত আসনে এমপি ছিলেন। এবার সেই সংখ্যা বেড়ে তিনও হতে পারে।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ২২৩টি, জাতীয় পার্টি ১১টি, জাসদ ১টি, ওয়ার্কার্স পার্টি ১টি, কল্যাণ পার্টি ১টি, স্বতন্ত্র ৬২টি আসন পেয়েছে। এরমধ্যেই দ্বাদশ সংসদের সংরক্ষিত ৫০টি আসনের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতি নেয়ার কথা জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা।

একাদশ সংসদে সংরক্ষিত আসনে সংসদ সদস্য ছিলেন চট্টগ্রামের প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা আতাউর রহমান খান কায়সার ও আওয়ামী লীগ নেত্রী নিলুফার কায়সারের মেয়ে ওয়াসিকা আয়শা খান এবং আরেক প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা রফিকুল আনোয়ারের মেয়ে খাদিজাতুল আনোয়ার সনি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৫ (ফটিকছড়ি) আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে সরাসরি নির্বাচনে অংশ নেন খাদিজাতুল আনোয়ার সনি। চট্টগ্রামের ১৬ আসনের মধ্যে একমাত্র এই নারী প্রার্থী বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়ী হন।

এবার দেখে নেওয়া যাক, চট্টগ্রাম থেকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নারী সংরক্ষিত আসন নিয়ে কে কার থেকে এগিয়ে আছে।

ওয়াসিকা আয়শা খান:- বর্তমানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক তিনি। দশম সংসদেও তিনি সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। একাদশ সংসদে তিনি বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। এর আগেও একাধিক সংসদীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। সংরক্ষিত নারী আসনে সংসদ সদস্য হওয়ার দৌড়ে তাই ওয়াসিকা আয়শা খানের নাম আলোচনায় আসছে চট্টগ্রামের রাজনৈতিক মহলে।

বাসন্তী প্রভা পালিত:- আগ্রহীদের মধ্যে রয়েছেন উত্তর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাসন্তী প্রভা পালিত। এই নিয়ে গণমাধ্যমকে তিনি জানান, “সংরক্ষিত ও সরাসরি নির্বাচনের জন্য ৮ বার আমি দলীয় মনোনয়নপত্র নিয়েছি। এবারও হাটহাজারী আসনে দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলাম। ২০১৩ সাল থেকে আমি উত্তর জেলার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছি। আমার সাংগঠনিক কার্যক্রম বিবেচনা করে নেত্রী যদি আমাকে উপযুক্ত মনে করেন, তাহলে নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে দায়িত্ব পালন করব”।

সেলিনা খান বাদল:- সংরক্ষিত নারী আসনের মনোনয়ন বিষয়ে জানতে চাইলে জাসদ নেতা মইন উদ্দিন খান বাদলের স্ত্রী সেলিনা খান বাদল জানান, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাতেই সবকিছু। চাইবে অনেকেই, তা বলে সবাই সংরক্ষিত আসনে সংসদ হবেন বিষয়টি এই রকম নয়। এই পদের জন্য কী কী যোগ্যতা থাকা প্রয়োজন আশা করি সবাইকে জানানো হয়েছে”।

জিনাত সোহানা চৌধুরী:- উত্তর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক জিনাত সোহানা চৌধুরীও রয়েছেন এই দৌড়ে। গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে আমি কাজ করছি। মহামারীর সময়ে দেশের সংকটকালে জনগণের পাশে ছিলাম। এছাড়া গত বেশ কয়েক বছর ধরে মাদ্রাসায় জাতীয় সংগীত গাওয়া, জয় বাংলা স্লোগান দেওয়া, মুক্তিযু্দ্ধের ইতিহাস প্রচার এবং জঙ্গীবাদ বিরোধী সচেতনামূলক কর্মসূচি পালন করছি। সেই ঝুঁকি আমি নিয়েছি। স্মার্ট বাংলাদেশ বির্নিমাণে জননেত্রী তরুণদের প্রাধান্য দিচ্ছেন। সুযোগ দিলে আশা করি সেই লক্ষ্য অর্জনে ভূমিকা রাখতে পারব”।

হাসিনা মহিউদ্দিন:- সংরক্ষিত আসনের মনোনয়নের ব্যাপারে চট্টগ্রাম মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসিনা মহিউদ্দিন বলেন, ইচ্ছে আছে এবার সংরক্ষিত আসনে নির্বাচনের ব্যাপারে। সারা জীবন তো আওয়ামী লীগের জন্য কাজ করেছি। প্রতিটি আন্দোলন–সংগ্রামে রাজপথে ছিলাম। তফসিল ঘোষণা করা হলে সংরক্ষিত আসনের জন্য মনোনয়ন চাইবো। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যদি মনোনয়ন দেন, তাহলে দলের জন্য আরো বৃহৎ পরিসরে কাজ করার সুযোগ পাবো।

শোনা যাচ্ছে এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনে লড়তে পারেন কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক সাজেদা সুরাত, দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি চেমন আরা তৈয়ব, দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীমা হারুন লুবনা, মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক চসিক কাউন্সিলর নীলু নাগ।

তাছাড়া এই দৌড়ে পিছিয়ে নেই সাতকানিয়া–লোহাগাড়া আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভীর স্ত্রী রিজিয়া রেজা চৌধুরী, সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত ডা. আফছারুল আমীনের স্ত্রী ডা. কামরুন্নেছা, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা খালেদা আক্তার চৌধুরী, উত্তর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দিলোয়ারা ইউসুফ, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক মহিলা বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট কামরুন নাহার, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা জোবাইরা নার্গিস খান, চট্টগ্রাম মহানগর যুব মহিলা লীগের আহ্বায়ক অধ্যাপিকা সায়েরা বানু রৌশনী, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি রুমানা নাসরীন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ কমিটির সদস্য সাবরিনা চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী শারমিন সুমি, সাবেক কাউন্সিলর রেহানা বেগম রানু‘র মতো ক্ষমতাসীন নেত্রীরা।

চাটগাঁ নিউজ/এসবিএন

Scroll to Top