চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : প্রতিবছর জশনে জুলুসের প্রথম দিকে সুফী মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে দেখা গেলেও এবার কেন দেখা যায়নি -এ নিয়ে জুলুসে আগত অনেক দর্শনার্থী এবং গাউছিয়া কমিটির অনেকেই বিভিন্ন জায়গায় প্রশ্ন করা শুরু করেছেন। কারও কাছে সদোত্তর ছিল না! অনেকে চাটগাঁ নিউজ ডট কম এর সাংবাদিক এবং অফিসে যোগাযোগ করে বিষয়টি জানতে চেয়েছেন। তাঁর অনুপস্থিতির বিষয়টি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমত দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
তবে এটাই সত্য, বন্দরনগরী চট্টগ্রামে দেশের বৃহৎ ‘জশনে জুলুস’ এর বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় সবসময় শিল্পগ্রুপ পিএইচপি পরিবারের চেয়ারম্যান সুফি মো. মিজানুর রহমান সামনের সারিতে অংশ নিলেও এবারই প্রথম ব্যতিক্রম ঘটেছে। জুলুসের শোভাযাত্রায় কোথাও সুফি মো. মিজানুর রহমান ও তার পরিবারের কাউকে দেখা মেলেনি। গুঞ্জন রয়েছে দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে তিনি স্বপরিবারে সৌদি আরবে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে।
সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে আনজুমান-এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনায় এবার ৫৩তম জশনে জুলুস অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জানা গেছে, সকাল ৯টার দিকে নগরীর ষোলশহর জামেয়া মাদ্রাসা সংলগ্ন আলমগীর খানকা-এ কাদেরিয়া সৈয়্যদিয়া তৈয়্যবিয়া থেকে শুরু হয় জুলুসটি। এতে নেতৃত্ব দেন দরবারে আলীয়া কাদেরিয়া ছিরিকোট শরীফের সাজ্জাদানশীন পীর আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ সাবির শাহ। প্রধান মেহমান ছিলেন আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ কাসেম শাহ।
এদিকে, প্রতি বছর পিএইচ পরিবারের চেয়ারম্যান সুফি মো. মিজানুর রহমান জশনে জুলুসে বিশেষ অতিথি হিসেবে অংশ নিলেও এবার তার অনুপস্থিতি ভক্ত ও অনুরাগীদের মনে নানা প্রশ্ন তৈরি করেছে। সেই সাথে তার তিন সন্তানও এবার অংশ নেয়নি এই বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা জশনে জুলুসে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেখা দিয়েছে এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সুফি মিজানের বড় ছেলে মোহাম্মদ মহসিন, মেঝো ছেলে মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন ও ছোট ছেলে মোহাম্মদ আকতার পারভেজ হিরুসহ পরিবারের সকলেই সৌদি আরব আছেন। স্বশরীরে উপস্থিত হতে না পারলেও সেখানে বসেই আয়োজক কমিটি আনজুমান-এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের সাথে যোগাযোগ করে খোঁজে খবর নিচ্ছেন। নিরাপত্তাজনিত কারণে তারা এবার উপস্থিত হতে পারেননি বলে।
প্রতিবারের মত এবার ‘জশনে জুলুস’ শোভাযাত্রা চট্টগ্রাম নগরীর বিবিরহাট মুরাদপুর, কাতালগঞ্জ, চকবাজার, চন্দনপুরা, সিরাজুদৌলা রোড হয়ে আন্দরকিল্লা, মোমিন রোড, জামালখান, গণিবেকারি প্রদক্ষিণ করে পুনরায় চকবাজার, কাতালগঞ্জ, মুরাদপুর হয়ে জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলীয়া মাদ্রাসা মাঠে সমাবেশ, আলোচনা সভা ও জোহরের নামাজের পর মোনাজাত শেষে জুলুসের সমাপ্তি ঘটে।
১৯৭৪ সালের ১২ রবিউল আউয়াল দরবারে আলিয়া কাদেরিয়া সিরিকোট শরীফের (পাকিস্তান) তৎকালীন সাজ্জাদানশীন, আধ্যাত্মিক সাধক, আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ তৈয়্যব শাহ্ (রহ.) এ জশনে জুলুসেরর প্রবর্তন করেন। এরপর থেকে আনজুমান-এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনায় প্রতিবছর ১২ রবিউল আউয়াল পালিত হয়ে আসছে এ জুলুস।
চাটগাঁ নিউজ/এআইকে/এসএ