চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিসহ ইসকন নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছেন ইসকন সমর্থকদের হামলায় নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের পিতা জামাল উদ্দিন সওদাগর।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে নিজ গ্রামে চতুর্থ দফা জানাজায় সমাবেত হাজার হাজার মুসল্লির সামনে এ দাবি জানান তিনি।
নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের পিতা জামাল উদ্দিন সওদাগর বলেন, আমার ৫ ছেলে ও ২ মেয়ের মধ্যে সাইফুল ছিল ৩য় সন্তান। আমার ছেলে নামাজি, নম্র ও ভদ্র প্রকৃতির মানুষ ছিলো, তাহাজ্জুদ নামাজও মিস করতো না। আমার ছেলে এভাবে আমার আগে চলে যাবে আমি কখনো কল্পনা করিনি। বিনা অপরাধে যারা আমার ছেলেকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে তাদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিসহ ইসকন নিষিদ্ধের দাবি জানাচ্ছি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও উপদেষ্টামণ্ডলীর কাছে।
এদিকে, লোহাগাড়া উপজেলার দরবেশহাট রোডস্থ টেন্ডল পাড়ায় সাইফুলের সেই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামজুড়ে শোকের মাতম চলছে। সাইফুল ইসলামের তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ইশরাত জাহান বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। সাইফুলের মা হোসনে আরা বেগম সন্তানের জন্য বিলাপ করছেন। শোকে কাতর হয়ে পড়েছেন বাবা। শিশু কন্যা মাশরুরা জাহানকে নিয়ে বসে আছেন সাইফুলের শাশুড়ি সাজেদা বেগম। দোষীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি জানিয়েছেন স্বজন ও স্থানীয়রা।
সাইফুলের ফুফাতো ভাই আতিকুর রহমান বলেন, সাইফুল খুব নম্র ও ভদ্র ছিলেন। এলাকায় সৎ ও ভালো ছেলে হিসেবে পরিচিত ছিলেন। সবসময় তাকে ভালো ও সামাজিক কাজে পাওয়া যেত। আমরা তার হত্যাকারীদের দ্রুত ফাঁসি চাই।
এরআগে চট্টগ্রামের আদালত এলাকায় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ (৩২) হত্যায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে লোহাগাড়ায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে ছাত্র-জনতা। গতকাল মঙ্গলবার রাতে লোহাগাড়া বটতলী স্টেশন প্রদক্ষিণ করে। একই সময় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের উদ্যোগে অপর একটি মিছিল বটতলী স্টেশন প্রদক্ষিণ করতে দেখা গেছে।
এসময় বক্তারা আইনজীবী সাইফুল হত্যায় জড়িত ইসকন সন্ত্রাসীদের শনাক্ত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানান। মিছিলকারীরা ইসকনকে নিষিদ্ধ করার দাবি ও তার দোসরদের আইনের আওতায় আনার জোর দাবিও জানান তারা।
গতকাল মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন নামঞ্জুর এবং কারাগারে পাঠানোকে কেন্দ্র করে ইসকন সমর্থকদের হামলায় নৃশংসভাবে নিহত হন আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ।
পারিবারিক সূত্র জানায়, পাঁচ ভাই ও দুই বোনের মধ্যে সাইফুল চতুর্থ। লোহাগাড়ার উপজেলার আধুনগর ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাশ করেন তিনি। পরে আইন বিভাগে পড়ালেখা করে চট্টগ্রাম আদালতের আইনজীবী পেশা শুরু করেন। বর্তমানে চট্টগ্রাম আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর নিযুক্ত ছিলেন।
চাটগাঁ নিউজ/এসএ