সিপ্লাস ডেস্ক: একটি দুর্নীতির মামলায় পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে, যদিও তিনি এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। প্রধানমন্ত্রী পদে থাকার সময় তিনি যেসব উপহার পেয়েছিলেন, সেগুলো বিক্রি করে পাওয়া অর্থ সম্পর্কে ঘোষণা না দেওয়ার কারণে ইসলামাবাদের একটি আদালত এই রায় দিয়েছে। তাকে অতিসত্বর গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানোরও আদেশ দেয়া হয়।
বর্তমান ক্ষমতাসীনদলের আইনপ্রণেতারা গত বছর এই অভিযোগ তুলেছিলেন। যদিও ইমরান খান বরাবরই এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।
সেনাবাহিনীর নির্বাচন ‘ভীতি’
একদিন আগে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বিবিসি হার্ডটক অনুষ্ঠানে বলেছেন, চলতি বছরের শেষের দিকে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া নির্বাচন নিয়ে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী ‘প্রচণ্ড ভীত’ হয়ে পড়েছে।
২০১৮ সালে ইমরান খান নির্বাচিত হওয়ার পর চার বছরেরও কম সময় ক্ষমতায় ছিলেন। সংসদীয় অনাস্থা ভোটে গত বছর তিনি ক্ষমতাচ্যুত হন। তিনি বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনই কেবল স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনবে।
হার্ডটক উপস্থাপক স্টিফেন স্যাকার সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে জিজ্ঞেস করেন, সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সম্পর্ক শীতল হওয়ার পর থেকেই কি রাজনীতিতে ‘সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ’ নিয়ে তার সমালোচনা শুরু হয়েছে?
অভিযোগ অস্বীকার করে ইমরান বলেন, ‘তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) পাকিস্তানের একমাত্র দল, যেটি সামরিক একনায়কদের দিয়ে তৈরি হয়নি।
পাকিস্তানের রাজনীতিতে দেশটির সেনাবাহিনী সব সময় সামনে থেকে কিংবা পর্দার আড়া; থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনে করেছে। গত কয়েক মাসে ইমরান খানের দল পিটিআই ছেড়েছে অনেকে এবং অনেকে আটক হয়েছেন। তবে ইমরানের দাবি, তার দল অক্ষত রয়েছে। তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রযন্ত্র প্রকাশ্যে আমাদের বিরুদ্ধে গেলেও, আমাদের ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করলেও, সরকার থেকে বেরিয়ে আসার পর উপনির্বাচনে কিভাবে আমরা ৩৭টির মধ্যে ৩০টিতে জয়লাভ করলাম?’
সেনাবাহিনীকে ইঙ্গিত করে পিটিআই প্রধান বলেন, রাষ্ট্রযন্ত্র পরিচালনাকারীদের আশা ছিল তাকে ক্ষমতা থেকে অপসারণের পর তার দল দুর্বল হয়ে যাবে। ‘সাধারণত কিছু সময়ের জন্য ক্ষমতার বাইরে থাকলে এটিই ঘটে। কিন্তু যা ঘটেছিল তারপর উল্টো দলের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। তারা সব ধরনের চেষ্টা করেছে। নারী ও শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীসহ তারা ১০ হাজার মানুষকে জেলে ঢুকিয়েছে।’
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্রদ্রোহ, সন্ত্রাসবাদ এবং হত্যায় মদদ দেওয়াসহ প্রায় ২০০টি অভিযোগ তার বিরুদ্ধে আনা হয়েছে।
ইমরান বলেন, সামরিক ভবনগুলোতে হামলার ঘটনার সঙ্গে তাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। একই সঙ্গে এই মামলাগুলো আলাদাভাবে তদন্ত করা দরকার বলে উল্লেখ করেন তিনি। সেই সঙ্গে জোর দিয়ে তিনি বলেন, পুলিশের পরিবর্তে তাকে গ্রেপ্তারে সেনা পাঠানোর মতো ঘটনাই বিশৃঙ্খলা উসকে দিয়েছিল।
লাহোর থেকে বিবিসির সঙ্গে কথা বলার সময় ইমরান বলেন, ‘সত্যি হলো, দেশ একটি বড় বিপর্যয়ের দ্বারপ্রান্তে। আমার মনে হচ্ছে আমরা অন্ধকার যুগের দিকে যাচ্ছি। পাকিস্তানের একমাত্র সমাধান হলো অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন। এটিই এই বিশৃঙ্গখলা থেকে বেরিয়ে আসার একমাত্র উপায়।’
সূত্র : বিবিসি