আনোয়ারায় হাতির আক্রমণে প্রাণ গেল আরও একজনের

আনোয়ারা প্রতিনিধি : চট্টগ্রাম আনোয়ারা উপজেলায় আবারও বন্য হাতির আক্রমণে মো. দুলাল (৬০) নামের এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন।

সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাত পৌনে ৯টায় উপজেলার বৈরাগ ইউনিয়নের আশ্রয়ন প্রকল্প এলাকায় হাতির আক্রমণের শিকার হয়। পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

নিহত দুলাল ইউনিয়নের গুয়াপঞ্চক ৪ নং ওয়ার্ডের মৃত মুজিবুল হকের পুত্র। নিহত বৃদ্ধ দিনমজুর। নিজস্ব জায়গা না থাকায় সরকারি আশ্রয়ন প্রকল্পে স্ত্রী সন্তান নিয়ে বসবাস করে আসছেন তিনি। নিহতের স্ত্রী, তিন কন্যা ও দুই পুত্র সন্তান রয়েছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, সন্ধ্যায় অতিরিক্ত গরমের কারণে বাসা থেকে বের হয়ে পাহাড়ের একটি টিলায় বসে আশ্রয়ণ প্রকল্পের কয়েকজন ব্যক্তি আড্ডা দেয়। কিছুক্ষণ পর দুলাল ওইখান থেকে উঠে দোকানে যাওয়ার পথে একটি বন্য হাতির সামনে পড়ে যায়। সাথে সাথে তাকে হাতি শুঁড়ে তুলে আছাড় দেয়। তার চিৎকার শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেলে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

নিহতের প্রতিবেশি মো. সুমন জানান, প্রতিদিনের মতো সন্ধ্যার দিকে দেয়াঙ পাহাড় থেকে একটি হাতি লোকালয়ে নেমে আসে। ওই সময় হাতিটি চারদিকে বিচরণ করে। হঠাৎ নিহত দুলাল দোকানে যাওয়ার সময় অন্ধকারের মধ্যে হাতির সামনে পড়ে যায়। কোনো কিছু বুঝার আগে হাতির শুঁড়ে তুলে আছাড় দেয়। তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে মেডিকেলে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

স্থানীয় বৈরাগ ইউপি চেয়ারম্যান মো. নোয়াব আলী চাঁটগা নিউজকে জানান, দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে বন্য হাতির আক্রমণে অতিষ্ঠ হয়ে গেছে বৈরাগসহ আনোয়ারা ও কর্ণফুলী উপজেলার কয়েকটি গ্রাম। সন্ধ্যা হলে খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে চলে আসায় এলাকায় ঘরবাড়ি ভাঙচুরসহ ফসলী জমি নষ্ট ও অনেক মানুষ হতাহতের শিকার হচ্ছেন। তবুও হাতিগুলোকে তাদের স্থানে ফিরিয়ে নিতে পারেনি বনবিভাগ। হাতির আক্রমণে আবারও আমার ইউনিয়নের আরেকজন বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন। বিষয়টি বনবিভাগ ও প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, দীর্ঘ ৫ বছর ধরে (২০১৮ সাল) কয়েকটি হাতি দেয়াঙ পাহাড়ে অবস্থান করে। সন্ধ্যা হলে খাবারের খোঁজে পাহাড়ের পাশে অবস্থিত আনোয়ারা উপজেলার বৈরাগ, গুয়াপঞ্চক, মুহাম্মদপুর, পশ্চিমচাল, বটতলী ও কর্ণফুলী উপজেলার বড় উঠান গ্রামের লোকালয়ে চলে আসে। এতে এলাকায় গাছপালা, ঘরবাড়ি ভাঙচুর ও ক্ষেত খামারের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

এছাড়া হাতির আক্রমণে আহত হয়েছে শিশু থেকে বৃদ্ধা অর্ধশতাধিক। নিহত হয়েছে দুই উপজেলার ২০ জন নারী ও পুরুষ। এর আগে ১১ সেপ্টেম্বর বুধবার রাতে কর্ণফুলী উপজেলার বড়উঠান ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামের এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন।

এদিকে কয়েকদিন ধরে প্রতিদিন দিনের বেলায় কেইপিজেড সড়কে হাতিগুলোকে দেখা যায়। হাতির বিচরণ দুই উপজেলার মানুষ অতিষ্ঠ হলেও টনক নড়ছে বন বিভাগের।

চাটগাঁ নিউজ/সাজ্জাদ/এসএ

Scroll to Top