আনোয়ারা প্রতিনিধি : আনোয়ারা বরুমচড়া ভরাশঙ্খ খালে নির্মিত দেশের প্রথম হাইড্রোলিক এলিভেটর ড্যাম এলাকায় গড়ে উঠেছে অবৈধ বালু মহাল। প্রতিদিন শঙ্খ নদী থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে মহালে এনে শতাধিক ট্রাক দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় চালান করা হয়। এতে হুমকির মুখে কোটি টাকার হাইড্রোলিক এলিভেটর ড্যাম, খালের বেড়িবাঁধ ও সড়ক।
জানা যায়, ২০২০ সালে বরুমচড়া ইউনিয়নের ভরাশঙ্খ খালের উপর নির্মিত হাইড্রোলিক এলিভেটর ড্যাম উদ্বোধন হয়। এটি নির্মাণের পর ওই এলাকায় কৃষি উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রেখে চলেছে। এছাড়া ড্যাম এলাকা পরিণত হয়েছে পর্যটন এরিয়ায়। প্রতিদিন দূরদূরান্ত থেকে ঘুরতে আসে অসংখ্য মানুষ।
তবে হাইড্রোলিক এলিভেটর ড্যাম উদ্বোধনের পরপরই স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা মোঃ আবছারসহ কয়েকজন ব্যক্তি গড়ে তুলেন অবৈধ বালু মহাল। এতে ওই এলাকা পরিণত হয়েছে ব্যস্ততম বালু মহাল হিসেবে। ফলে নষ্ট হচ্ছে এলাকার সুন্দর পরিবেশ ও সড়ক।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বালু মহালে প্রতিদিন শতাধিক ট্রাক চলাচলের কারণে নষ্ট হয়েছে সড়ক। ভাঙনের কবলে পড়েছে খালের বেড়িবাঁধ। নষ্ট হয়েছে ড্যাম, এলাকার সৌন্দর্য। ধুলোবালিতে ভরে গেছে পুরো এলাকা। এতে দূরদূরান্ত থেকে আসা পর্যটক ও স্থানীয়রা ফিরছে হতাশা নিয়ে।
স্থানীয় কৃষক আবদুর রহিম জানান, হাইড্রোলিক এলিভেটর ড্যাম নির্মাণের পরে জোয়ার, বৃষ্টি ও বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়া থেকে কৃষি জমি রক্ষা পেয়েছে। এতে কৃষিতে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে বরুমচড়া ইউনিয়ন সহ আশপাশের কয়েকটি ইউনিয়ন। কিন্তু এখানে বালু মহাল গড়ে উঠার কারণে ক্ষতি হচ্ছে ড্যামসহ ফসলি জমি, বেড়িবাঁধ, সড়ক ও এলাকার পরিবেশ। এসব বালু মহাল বন্ধ না হলে ড্যামটির ব্যাপক ক্ষতি হবে।
ঘুরতে আসা পর্যটক এরফানুল হক সোহেল জানান, শঙ্খ নদীর মোহনায় নির্মিত হয়েছে দেশের প্রথম হাইড্রোলিক এলিভেটর ড্যাম। দুপাশে রোপণ করা হয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। এতে পরিণত হয়েছে সুন্দর মনোরম পরিবেশ। সৌন্দর্য উপভোগ করতে বন্ধু বান্ধব, পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসে সবাই। এখানে বন্ধের ছুটিতে বন্ধু বান্ধব নিয়ে ঘুরতে আসি। কিন্তু ড্যামের পাশে বালু মহালের কারণে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ আর কমেছে সৌন্দর্য। এতে সৌন্দর্য ধরে রাখতে দ্রুত বালু মহাল বন্ধ করতে হবে।
এ বিষয়ে বিএডিসির উপ-সহকারী প্রকৌশলী আজমানুর রহমান জানান, অবৈধ বালু মহালের কারণে কেটি টাকার নির্মিত হাইড্রোলিক এলিভেটর ড্যামের ক্ষতি হচ্ছে। এছাড়া দুপাশে রোপণ করা বিভিন্ন প্রজাতির গাছগুলোও নষ্ট হচ্ছে। এতে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলার পরিকল্পনার ব্যাঘাত হচ্ছে। এসব বন্ধ করতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এর আগে কয়েকবার প্রশাসন অভিযান চালালেও বালু মহাল বন্ধ হয়নি।
আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিনা আক্তার জানান, হাইড্রোলিক এলিভেটর ড্যাম এলাকা সহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বালু মহালে অভিযান চালিয়ে অনেকবার জরিমানা করা হয়েছে। তবে বিএডিসি ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চাটগাঁ নিউজ/সাজ্জাদ/জেএইচ