আনোয়ারায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষে পুলিশ ও আ.লীগের সভাপতিসহ ১৮ জন আহত পুলিশের গুলি

আনোয়ারা প্রতিনিধি : জেলার আনোয়ারায় বাজেটকে স্বাগত জানিয়ে আনন্দ মিছিলকে কেন্দ্র করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক এম.এ মান্নান চৌধুরী ও পুলিশ সদস্য মোহাম্মদ জাবেরসহ ১৮ নেতাকর্মী আহত হয়েছে।

আজ শুক্রবার (৭ জুন) বিকালে উপজেলার বন্দর সেন্টারে দু’পক্ষের অবস্থান কর্মসূচিতে এ ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কর্ণফুলী থানা পুলিশ ৬ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে।

সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ও বর্তমান অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান এমপি’র সমর্থকদের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

প্রতক্ষ্যদর্শী কয়েকজন জানান, দুই পক্ষ মুখোমুখি হলে জাবেদ গ্রুপের নেতাকর্মীরা মন্ত্রী ওয়াসিকা গ্রুপের নেতাকর্মীদের আপত্তিকর বক্তব্য ও গালাগাল করলে ঘটনার সূত্রপাত ঘটে।

.

সংঘর্ষে সময় আওয়ামী লীগের ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা সাবেক ভূমিমন্ত্রীর সমর্থিত উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক এম এ মান্নান চৌধুরী, কাইয়ুম চেয়ারম্যান ও বরুমচড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহাদাত হোসেন চৌধুরীকে গণপিটুনি দিয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জাতীয় সংসদে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে একই দিনে একই স্থানে অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান এমপি’র গ্রুপ ও সাবেক মন্ত্রী সাংসদ সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ গ্রুপের আনন্দ মিছিলের আয়োজন করে। এতে বন্দর সেন্টার এলাকার দুই গ্রুপের নেতাকর্মীর অবস্থানে উত্তেজনা সৃষ্টি করে। একপর্যায়ে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে জাবেদ গ্রুপের উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক এম এ মান্নান চৌধুরী, বরুমচড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহাদাত হোসেন চৌধুরী সহ ১২ জন আহত হয়, অন্যদিকে ওয়াসিকা গ্রুপের চারজন আহত হয়। এছাড়া এক পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত হয়। পরে পুলিশ ছয় রাউন্ড গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জসিম উদ্দিন বলেন, সরকারের প্রস্তাবিত ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের বাজেটকে স্বাগত জানিয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে আমাদের অভিভাবক মাননীয় সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপির পক্ষে আনন্দ মিছিলের ঘোষণা করা হয়। কিন্তু একই স্থানে তারাও পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা করায় আমাদের কর্মসূচিটি স্থগিত করে শুক্রবার বিকেলে পালন করার উদ্যোগ নিই। এরপর তারা আবারও পাল্টা কর্মসূচির ঘোষণা দেন একই স্থানে। বিকালে আমাদের নেতাকর্মীরা জড়ো হলে আমাদের উপর হামলা করে তারা। হামলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যপক এম.এ মান্নান চৌধুরী, বরুমছড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান শাহদাত হোসেন চৌধুরী, আওয়ামী লীগ নেতা অজিত কুমার দাশ, চাতরী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি তাজু উদ্দিন, যুবলীগ নেতা সাইফুদ্দিনসহ ১৩জন নেতাকর্মী গুরুতর আহত হয়।

আনোয়ারা উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী মোজাম্মেল হক বলেন, ‘বাজেট ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে গতকাল আমরা আনোয়ারা সদরে কর্মসূচি দিয়েছিলাম। একই সময়ে সদরে তারাও কর্মসূচি দেওয়ার কারণে আমরা সেটি চাতরী চৌমুহনী বাজারে নিয়ে আসি। আজ শুক্রবার বিকেলে কাফকো সেন্টারে আমার সমর্থকরা কর্মসূচি ঘোষণা করলে তারাও একই সময়ে কর্মসূচি ঘোষণা করে। কর্ণফুলী থানার ওসির উপস্থিতিতে এ ঘটনাটি ঘটে। এতে মোহাম্মদ টিপুসহ আমার ৪ জন নেতাকর্মী গুরুতর আহত হয়েছে।’

কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জহির হোসেন বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৬ রাউন্ড গুলি এবং টিয়ার সেল ছুঁড়ে। দু’পক্ষের সংঘর্ষে আমাদের এক পুলিশ সদস্যও গুরুতর আহত হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

চাটগাঁ নিউজ/ সাজ্জাদ/এসআইএস

Scroll to Top