আছাদুজ্জামান মিয়ার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চেয়ে দুদকে আবেদন

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : জ্ঞাত আয় বহির্ভূত বিপুল সম্পদ অর্জনের অভিযোগ ওঠায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) আবেদন করেছেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সালাহউদ্দিন রিগ্যান।

আজ বৃহস্পতিবার(২৭ জুন) তিনি দুদকে এই অভিযোগ দেন। সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া ২০১৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর অবসরে যান।

দুদক চেয়ারম্যান বরাবর করা আবেদনে আইনজীবী সালাহউদ্দিন রিগ্যান বলেন, ‘আমি বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্টের একজন আইনজীবী ও সচেতন নাগরিক। মানবাধিকার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। গত ১৬ই জুন, ২০২৪ তারিখে দৈনিক মানবজমিনে ‘মিয়া সাহেবের যত সম্পদ’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। গত ২০শে জুন দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত শিরোনাম ‘এবার আলোচনায় আছাদুজ্জামান মিয়ার বিপুল সম্পদ এবং ২১শে জুন দৈনিক খবরের কাগজ পত্রিকায় প্রকাশিত শিরোনাম “আছাদুজ্জামানের কত সম্পদ?” প্রকাশিত হয়। অত্যন্ত দুঃখের বিষয় জাতীয় দৈনিকের পাতাজুড়ে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পরেও অনুসন্ধানের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষ কোন উদ্যোগ গ্রহণ করে নাই। যাহা দুদকের নিষ্ক্রিয়তা, যেখানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সকল ধরনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে “জিরো টলারেন্স’” নীতি গ্রহণ করেছেন।” তিনি আরো বলেন, জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্ট রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস ক্ষুণ্ন করে এবং জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে। এ বিষয়ে যথাযথ অনুসন্ধানের উদ্যোগ গ্রহণ করে জানানোর জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করেন সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী।

এর আগে গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, পুলিশের সাবেক এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার স্ত্রীর নামে ঢাকায় একটি বাড়ি ও দুটি ফ্ল্যাট এবং মেয়ের নামে একটি ফ্ল্যাট রয়েছে। এছাড়া ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জে তার স্ত্রী ও সন্তানদের নামে ৬৭ শতক জমি রয়েছে। এই তিন জেলায় তার পরিবারের সদস্যদের নামে রয়েছে আরও ১৬৬ শতক জমি। অনুসন্ধানে আরও উঠে আসে, রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার এল ব্লকের লেন-১-এ ১৬৬ এবং ১৬৭ নম্বরে ১০ কাঠা জমির ওপর ছয়তলা একটি বাড়ি রয়েছে। এছাড়া গাজীপুরের কালীগঞ্জের চাঁদখোলা মৌজায় ২০১৭ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে সর্বমোট ১০৬ শতক জমি কেনা হয় আছাদুজ্জামানের স্ত্রী আফরোজা জামানের নামে। এছাড়া ২০১৮ সালে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের কৈয়ামসাইল-কায়েতপাড়া মৌজায় আফরোজার নামে ২৮ শতক জমি কেনা হয়। একই বছর একই মৌজায় আরও ৩২ শতক জমি কেনা এবং পূর্বাচলের নিউ টাউনের ১ নম্বর সেক্টরের ৪০৬/বি রোডে ১০ কাঠা জমি রয়েছে। এছাড়া পরিবারের সদস্যদের নামে রাজধানীর আফতাবনগরে ৩ নম্বর সেক্টরের এইচ ব্লকের ৮ নম্বর রোডে ২৬ নং প্লটে ২১ কাঠা জমি এবং নিকুঞ্জ-১-এ ছোট ছেলের নামে একটি বাড়ি রয়েছে বলে গণমাধ্যমের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।

উল্লেখ্য, আছাদুজ্জামান মিয়া সিভিল সার্ভিস ক্যাডারের ৮৫ ব্যাচে পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে যোগদানের পর সুনামগঞ্জ, পাবনা, টাঙ্গাইল জেলার পুলিশ সুপার, চট্টগ্রাম ও সৈয়দপুরে রেলওয়ের পুলিশ সুপার ছিলেন। তিনি ২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি ডিএমপি কমিশনার হিসেবে যোগদান করেন এবং দায়িত্ব পালন শেষে অবসরে যান। পরে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে তাকে জাতীয় নিরাপত্তাসংক্রান্ত সেলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পদে নিয়োগ দেয় সরকার। ২০২২ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর তার নিয়োগের ৩ বছরের চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়। আছাদুজ্জামান মিয়া ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ৩৩তম কমিশনার ছিলেন।

চাটগাঁ নিউজ/এসআইএস

Scroll to Top