আইনি প্রক্রিয়ায় চসিকে ফিরে আসবে প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়- মেয়র

নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আমাদের হাতে ফিরে আসবে বেসরকারি প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব বুঝে পেতে কিছুটা সময় লাগবে। সেই পর্যন্ত সবাইকে অপেক্ষা করতে হবে।

মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) টাইগারপাসে অস্থায়ী নগর ভবনে প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময় সভায় মেয়র একথা বলেন।

তিনি বলেন, শুরু থেকে চেয়েছিলাম আইনি প্রক্রিয়ায় প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটিতে ইন্টারভেন করতে। কিন্তু গত ২-৩ দিন আগে যে পরিস্থিতি উদ্ভব হয়েছে৷ সেখানে প্রায় ১৫ হাজার শিক্ষার্থী। অনেক অভিভাবক আমার কাছে এসেছেন, আমার বাসায়ও গেছেন। তারা উদ্বিগ্ন। সবকিছু সিটি করপোরেশনের পক্ষে আছে। আমরা আইনকে শ্রদ্ধা করি। যথাযথ প্রক্রিয়ায় আমরা এটা ফিরে পাব।

শাহাদাত হোসেন বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে আমরা চিঠি দিয়েছি৷ মন্ত্রণালয় থেকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে (ইউজিসি) চিঠি দেওয়া হয়েছে। কোর্টে একটা নিষেধাজ্ঞা আছে, সেটা ভেকেট করতে একজন আইনজীবীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

মেয়র জানিয়েছেন, ১৯৯২ সালের আইন অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় করতে ৫ কোটি টাকা জমা দিতে হয়। প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় করতে ২০০৩ সালে ৪৭ কোটি টাকা দেয় সিটি করপোরেশন। গত ১৬ বছর সিটি করপোরেশন বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করে৷ কিন্তু আমাদের রাজনীতিবিদরা নিজের স্বার্থ দেখে। পরে জোর খাটিয়ে পরিবারতান্ত্রিকতা করে এটা দখল করে নেওয়া হয়েছে। কারো নাম বলতে চাই না, সবাই জানেন।

আগামীতে এই বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার পরিকল্পনা তুলে ধরে মেয়র বলেন, এমন লোকজন দিয়ে প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি পরিচালনা করব যারা খুব দক্ষ। আর কোন মাফিয়া চক্র যেন দখল নিতে না পারে৷ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসরপ্রাপ্ত এমন শিক্ষকদের দায়িত্ব দিতে চাই। মন্ত্রণালয়ের আদেশ আসলে আগে
৬-৭ বছর যারা ছিলেন তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আন্দোলনের মুখে গত শুক্রবার রাতে প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির উপাচার্য ড. অনুপম সেন পদত্যাগ করেন। গত রোববার অস্থায়ী নগর ভবনে চসিক পরিচালনায় স্থানীয় সরকার বিভাগ গঠিত কমিটির বিশেষ সাধারণ সভায়, প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি চসিকের অধীনে পরিচালনার ঘোষণা দেন মেয়র শাহাদাত হোসেন।

উল্লেখ্য, মেয়র থাকাকালে চসিকের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়টির উপর করপোরেশনের কর্তৃত্ব ঠেকাতে ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে উচ্চ আদালতে রিট করেছিলেন চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী। চসিকের সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন দায়িত্বে থাকাকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্তৃত্ব নিয়ে মহিউদ্দিন চৌধুরীর সাথে বোর্ড অব ট্রাস্টিজ নিয়ে আইনি দ্বন্দ্ব শুরু হয়। তবে মালিকানা নিয়ে কিছু হয়নি। আদালত মালিকানা নিয়ে সিভিল কোর্টে আবেদন করতে বলেছিলেন। কিন্তু সময় স্বল্পতা ও নানা রাজনৈতিক জটিলতার কারণে আ জ ম নাছির উদ্দীনের পক্ষে তা আর করা হয়নি।

২০১৬ সালের জুনে ওই রিটের প্রেক্ষিতে দেওয়া রায়ে আদালত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ও ব্যবস্থাপনার এখতিয়ার চসিকের নেই বলে সিদ্ধান্ত দেয় ।

পাশাপাশি উদ্যোক্তা হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে মহিউদ্দিন চৌধুরীকে দেওয়ানী আদালতে যাওয়ার নির্দেশনা দেন উচ্চ আদালত। এরপর থেকে প্রতিষ্ঠানটির নিয়ন্ত্রণ মহিউদ্দিন চৌধুরীর পরিবারের হাতে ছিল।

চাটগাঁ নিউজ/ইউডি 

Scroll to Top