চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: আইনজীবী আলিফের ঘাড়ে বটি দিয়ে কোপ মারেন রিপন দাস। আর কিরিচ দিয়ে কোপান চন্দন দাস। আদালতে দেয়া ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে একথা স্বীকার করেছে আলিফ হত্যা মামলার আসামি রিপন দাস।
শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরকার হাসান শাহরিয়ারের আদালত এই জবানবন্দি গ্রহণ করেন।
এ নিয়ে হত্যা মামলায় মোট ৩ আসামি জবানবন্দি দিয়েছেন আদালতে। এর আগে গত সোমবার হত্যা মামলার প্রধান আসামি চন্দন দাস এবং গত শুক্রবার রাজিব ভট্টাচার্য আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
এতে উল্লেখ রয়েছে, আইনজীবীর ঘাড়ে বঁটি দিয়ে দুটি কোপ দেন রিপন দাস। আর কিরিচ দিয়ে কোপান চন্দন দাস। রাস্তায় পড়ে থাকা সাদা শার্ট ও কালো প্যান্ট পরা এক আইনজীবীকে লাঠি, বাটাম, ইট, কিরিচ, বঁটি দিয়ে তারা মারধর করেন।
আলিফ হত্যার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালী জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মাহফুজুর রহমান জানান, ঘটনার দিন চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তির দাবিতে আদালত প্রাঙ্গনে স্লোগান দেন রিপন দাশ। পরে চিন্ময়কে কারাগারে নিয়ে যাওয়ার সময় সেবক কলোনি এলাকায় চলে যান। সেখানে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়। জবানবন্দিতে আসামি বলেন, ঘটনার দিন আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে বঁটি দিয়ে কোপান রিপন নিজে। কিরিচ দিয়ে কোপান চন্দন দাস ও রাজিব ভট্টাচার্য। হত্যাকাণ্ডে অংশে নেওয়া ১০ থেকে ১২ জনকে চেনেন রিপন দাস।
এদিকে পুলিশ বলছে, আইনজীবী হত্যার ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, মাথায় ছাই রঙের হেলমেট, কমলা রঙের গেঞ্জি আর কালো প্যান্ট পরা ছিলেন চন্দন। হাতে ছিল কিরিচ। ঘটনার সময় রিপনের হাতে ছিল বঁটি। পরনে ছিল নীল রঙের গেঞ্জি, জিনস প্যান্ট ও মাথায় লাল হেলমেট। গত ২৯ নভেম্বর আলিফ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত অন্তত ১৫ জনকে আসামি করে মামলা হয়। মামলা করেন আলিফের বাবা জামাল উদ্দীন।
গত ২৬ নভেম্বর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চট্টগ্রাম আদালতে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন নামঞ্জুর করার পর কারাগারে পাঠানোর জন্য প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়। এসময় তার অনুসারীরা বিক্ষোভ করলে পুলিশ ও বিজিবি লাঠিচার্জ এবং সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ চলাকালে এদিন বিকেলে রঙ্গম কমিউনিটি হল সংলগ্ন এলাকায় কুপিয়ে হত্যা করা হয় অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফকে। এ ঘটনায় হওয়া ৬ মামলায় গ্রেপ্তার হন ৪০ জন। তাদের মধ্যে হত্যায় জড়িত অভিযোগে ১০ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন।
চাটগাঁ নিউজ/ইউডি