চাটগাঁ নিউজ ডেস্কঃ ঢাকা-কক্সবাজার রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে ডিসেম্বর থেকে। আর রেলের নতুন এই রুট চালুর পর চাপ বেড়েছে চট্টগ্রামের শতবর্ষী কালুরঘাট সেতুর ওপর। যদিও সড়ক ও জনপদ বিভাগের পুনঃসংস্কারে কিছুটা নতুন রুপ পেয়েছে সেতুটি। তবে সেতু পুনঃসংস্কারের বিপরীত দিকে নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারণে ঝুঁকি বাড়ছে সেতুটির। পিলারের মাটি সরে যাওয়ায় যেকোনো মুহূর্তে ঘটতে পারে বড় ধরণের দুর্ঘটনা।
শুক্রবার (২২ মার্চ) সরেজমিনে চান্দগাঁও থানাধীন কালুরঘাটের বালুর টাল এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বিশাল এলাকা জুড়ে চলছে বালু উত্তোলনের কর্মযজ্ঞ। কর্ণফুলী নদী থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে বাল্কহেড ভর্তি করে এনে রাখা হচ্ছে কালুরঘাট সেতু সংলগ্ন এলাকা ও সড়কের পাশে।
জানা যায়, প্রতিদিন কালুরঘাট এলাকা থেকে ২০-২৫টি ড্রেজার দিয়ে বাল্কহেডে বালু উত্তোলন করা হয়। একেকটি ড্রেজার দিয়ে দিনে ৩০-৫০ হাজার ঘনফুট বালু উত্তোলন করা যায়। কর্ণফুলী নদীর আশপাশের এলাকায়ও রয়েছে বালু সিন্ডিকেটের দাপট। তারা ইজারা প্রাপ্তদের বালু উত্তোলনে বাধা প্রদান ও চাঁদাবাজি করে সেতুর উভয় পাশে গড়ে তুলেছে বালু বিক্রয়কেন্দ্র।
কালুরঘাট সেতু সংস্কারের সঙ্গে যুক্ত এক প্রকৌশলী জানান, বুয়েটের পরামর্শে সেতুটি ভারী ট্রেন চলাচলের জন্য মেরামত করা হয়েছে। কিন্তু সেতুর কাছেই অবাধে বালি উত্তোলন করায় আস্তে আস্তে সরে পড়ছে পিলারের মাটি। এভাবে বালি উত্তোলন করা হলে যেকোনো মুহূর্তে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
তবে তার বক্তব্যের বিপরীতে কালুরঘাট খেজুরতলা বালু ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. শামসুল আলম বলেন, আমাদের সমিতির সদস্য ৬০-৭০টি প্রতিষ্ঠান। কালুরঘাট সেতুর চারপাশ থেকে কারা অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে সে বিষয়ে জানা নেই।
এই বিষয়ে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী আবু জাফর মিয়া চাটগাঁ নিউজকে বলেন, কালুরঘাট সেতুর আশপাশে বালু উত্তোলন করা হলে নদীর তলদেশের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। রেলওয়ের পক্ষ থেকে কালুরঘাট সেতু রক্ষায় পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে চিঠি দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১ আগস্ট ৪৪ কোটি টাকা ব্যয়ে সংস্কার কার্যক্রম শুরু হয় ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটির। এর আগে ১৯৮৬-৮৭ এবং ২০০৪-০৫ সালে দুই দফায় সেতুর ব্যাপক সংস্কারকাজ করা হয়েছিল। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল বিভাগ ৪ নভেম্বর তিন দফায় ট্রায়াল রান সম্পন্ন করার পর ঢাকা-কক্সবাজার রুটে ডিসেম্বর থেকে সরাসরি ট্রেন চলাচল করছে।
চাটগাঁ নিউজ/এসবিএন