আনোয়ারা প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় কনকনে শীতের মধ্যে সড়কের পাশ থেকে উদ্ধার হওয়া দুই শিশুর পরিবারের খোঁজ মিলেনি এখনো। এরমধ্যে শিশুগুলোর পরিচর্যার দায়িত্ব নিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তাহমিনা আক্তার উদ্ধার হওয়া শিশু দুটিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নিয়ে আসেন। এ সময় জেলা প্রশাসক শিশুদের শারীরিক অবস্থা, পারিবারিক পরিচয়, উদ্ধারের প্রেক্ষাপট ও সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে বিস্তারিত খোঁজখবর নেন।
শিশুদের শারীরিক দুর্বলতা ও অসুস্থতার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও সিভিল সার্জনের তত্ত্বাবধানে আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালে ১৪ মাসের শিশু মোরশেদকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। অপরদিকে ৪ বছরের শিশু আয়েশাকে আনোয়ারা উপজেলা প্রশাসন ও বারখাইন ইউনিয়ন পরিষদের তত্ত্বাবধানে আশ্রয়দাতা মহিম দম্পত্তির হেফাজতে রাখা হয়। পাশাপাশি চিকিৎসা ব্যয় ও প্রাথমিক প্রয়োজন মেটাতে আর্থিক সহায়তাও প্রদান করা হয়।
এছাড়াও শিশুদের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা ও পুনর্বাসনের বিষয়টি নিশ্চিত করতে সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেন জেলা প্রশাসক। তিনি বলেন, শিশু দুটিকে একটি নিরাপদ ও সুরক্ষিত পরিবেশে লালন-পালন এবং ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা নিশ্চিত করা হবে।
আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিনা আক্তার জানান, শিশু দুটিকে উদ্ধারের পর জেলা প্রশাসককে অবহিত করা হয়। পরে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কার্যালয়ে তাদেরকে নিয়ে যাওয়া হয়। ছোট শিশুটির শারীরিক দুর্বলতা ও অসুস্থতার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে জেলা প্রশাসক তাৎক্ষণিকভাবে প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। বড় শিশুকে আশ্রয়দাতা মহিম দম্পত্তির হেফাজতে রাখা হয়। তাদের পরিবারের খোঁজ করতে প্রশাসন কাজ করছে।
উল্লেখ্য, উদ্ধার হওয়া শিশুদের মধ্যে চার বছর বয়সী মেয়েশিশুর নাম আয়েশা এবং দুই বছর বয়সী ছেলেশিশুর নাম মোরশেদ। রোববার সন্ধ্যায় আনোয়ারা উপজেলার বারখাইন ইউনিয়নের মাজারগেট এলাকায় কনকনে শীতের মধ্যে সড়কের পাশে বসে থাকা অবস্থায় স্থানীয় এক সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক শিশু দুটিকে উদ্ধার করেন।
পরে শিশুদের জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, এক আত্মীয় তাদের সড়কের পাশে রেখে চলে যান। বিষয়টি স্থানীয়দের মাধ্যমে প্রশাসনের নজরে এলে জেলা প্রশাসনের তৎপরতায় শিশু দুটির চিকিৎসা, নিরাপত্তা ও ভবিষ্যৎ ব্যবস্থাপনায় দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়।
জেলা প্রশাসনের এই মানবিক উদ্যোগে স্থানীয় সচেতন মহল সন্তোষ প্রকাশ করেছে এবং শিশুদের নিরাপদ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে প্রশাসনের এই ভূমিকার প্রশংসা করেছে।
চাটগাঁ নিউজ/এমকেএন







