টাকা ফেরত পেতে একীভূত ৫ ব্যাংককে চাপ দিচ্ছেন আমানতকারীরা!

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: একের পর এক মামলা, অবস্থান কর্মসূচী, সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধনের মাধ্যমে দিন দিন একীভূত হওয়া পাঁচ ব্যাংকের ওপর চাপ বাড়াচ্ছেন আমানতকারীরা।

এতে একীভূত হওয়া পাঁচটি ইসলামি ব্যাংকের (নবগঠিত সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক) আমানতকারীরা অবিলম্বে টাকা ফেরতের ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন। আমানত বিমা সুরক্ষা আইনের আওতায় প্রত্যেক আমানতকারীর ২ লাখ টাকা দ্রুত ছাড় দেওয়ার পাশাপাশি বাকি আমানত ফেরতের একটি সুস্পষ্ট ও লিখিত রোডম্যাপ প্রণয়ন করে তা গেজেট আকারে প্রকাশেরও আহ্বান জানান তারা।

এ লক্ষ্যে মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন ভুক্তভোগী আমানতকারীরা। এসময় তারা এসব দাবি তুলে ধরেন।

আমানতকারীদের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় ব্যাংক একাধিকবার অর্থ ফেরতের আশ্বাস দিলেও এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি। এতে করে সাধারণ আমানতকারীদের উদ্বেগ ও অনিশ্চয়তা দিন দিন বাড়ছে।

অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া আমানতকারীরা বলেন, তাদের জীবনের সারা বছরের সঞ্চয় আজ চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে আছে। তারা জানান, এই আন্দোলনের মাধ্যমে তারা শুধু নিজেদের কষ্ট নয়, বরং দেশের ব্যাংকিং খাতের ভবিষ্যৎ ও সামগ্রিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিয়েও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছেন।

ভুক্তভোগীরা আরও বলেন, আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক, চাকরিজীবী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, অসুস্থ রোগী, প্রবাসী ও রেমিট্যান্সযোদ্ধাদের পরিবার রয়েছে। অনেক বাবা-মা সন্তানের পড়াশোনার জন্য জমানো অর্থ, আবার অনেক বিধবা নারী দৈনন্দিন জীবনের একমাত্র অবলম্বন হিসেবে স্বামীর রেখে যাওয়া সঞ্চয়ের ওপর নির্ভর করছিলেন। সেই অর্থ আজ দীর্ঘদিন ধরে আটকে থাকায় তাদের জীবনযাপন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

এই সংকটের দায় কার— এ প্রশ্ন তুলে আমানতকারীরা বলেন, তারা একযোগে সব টাকা ফেরত চান না এবং ব্যাংক ব্যবস্থার বাস্তবতা তারা বোঝেন। তবে তারা জানতে চান, কত সময়ের মধ্যে কীভাবে আমানত ফেরত দেওয়া হবে, সম্পূর্ণ টাকার নিশ্চয়তা কীভাবে নিশ্চিত করা হবে এবং কোন কর্তৃপক্ষ এ দায়ভার নেবে। তাদের ভাষায়, নীরবতা কোনো সমাধান নয়; প্রয়োজন একটি স্পষ্ট ও বিশ্বাসযোগ্য রোডম্যাপ।

কর্মসূচিতে আমানতকারীদের পক্ষ থেকে কয়েকটি নির্দিষ্ট দাবি জানানো হয়। এর মধ্যে রয়েছে— অবিলম্বে আমানত বিমা সুরক্ষার আওতায় ২ লাখ টাকা প্রদান শুরু করা, পাঁচটি ইসলামি ব্যাংকের চলতি ও সঞ্চয়ী হিসাব, এফডিআর, ডিপিএস ও মুদারাবাসহ সব ধরনের আমানত ফেরতের নিশ্চয়তা দেওয়া এবং সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের এনপিএসবি, এটিএমসহ সব অনলাইন সেবা দ্রুত চালু করে লেনদেন স্বাভাবিক করা।

অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া আমানতকারীরা ‘ব্যাংকে আমার টাকা থাকতে আমি কেন চিকিৎসার অভাবে?’, ‘লেনদেন স্বাভাবিক করো, দুর্নীতিবাজদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করো’ এবং ‘হয় আমাদের টাকা দিন, নয়তো আমাদের জীবন নিন’— এ ধরনের স্লোগানসংবলিত প্ল্যাকার্ড বহন করেন।

চাটগাঁ নিউজ/জেএইচ

Scroll to Top