চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তাঁর চিকিৎসা নিয়ে চলমান উত্তেজনার মধ্যে এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে ভিড় জমিয়েছেন হাজারও উৎসুক মানুষ এবং দলটির নেতাকর্মীরা। সেখানে কেউ মোবাইল বের করে তুলছেন ছবি, করছেন ভিডিও কেউবা লাইভ দিচ্ছেন ক্ষণে ক্ষণে। ফেসবুকে আপডেট দিয়ে জানান দিচ্ছেন তারা বিএনপির ত্যাগী নেতা এবং নেত্রীর পরম আত্মীয়! হঠাৎ কেউ আসলে ভেবে বসবেন এ যেন হাসপাতাল নয়, বিনোদন কেন্দ্র!
এসব কারণে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে হাসপাতালটির সামনের মূল সড়ক। এ অবস্থায় নিরাপত্তা ও রোগীসেবায় বিঘ্ন ঘটছে বলে জানান পুলিশ এবং হাসপাতাল–সংশ্লিষ্টরা। বারবার ভিড় সরিয়ে দিলেও পরক্ষণে আবারও হাজির তারা। তাদের এসব কর্মকাণ্ডে এক প্রকার অসহায় নিরাপত্তা সংশ্লিষ্টরা।
আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকায় অবস্থিত এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে এই চিত্রটাই দেখা গেছে। যেখানে হাসপাতালের ঠিক প্রধান ফটকেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া দায়িত্ব পালন করছে বিশেষ নিরাপত্তায় নিযুক্ত হওয়া এসএসএফসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা।
এরইমধ্যে পুরো এলাকাজুড়ে অবস্থান নিয়েছেন বিএনপির হাজারো নেতাকর্মী, সঙ্গে রয়েছেন উৎসুক জনতাও। হাসপাতালের মূল ফটকের সামনে দফায় দফায় ফটোশুট ও সেলফি তুলতে দেখা গেছে বিভিন্ন বয়সী মানুষদের। কেউ হাসপাতালের সাইনবোর্ডকে ব্যাকগ্রাউন্ড ধরে সেলফি তুলছেন, কেউ ভিডিও করে “এভারকেয়ার লাইভ আপডেট” বানাচ্ছেন, আবার কেউ গেটের সামনে টিকটক স্টাইলের ক্লিপ করছেন।
নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে- প্রিয় নেত্রীর শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিতে অনেকেই ঢাকার বাইরে থেকে এসেছেন। তবে উৎসুক জনতার অতি আবেগ আর বাড়াবাড়িতে ক্ষুব্ধ তাদের অনেকেই।
রাজধানীর বাড্ডা এলাকা থেকে এসে এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছিলেন সাইদুর রহমান নামে এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, “ফেসবুকে নানারকম খবর ছড়িয়ে পড়ায় বাসায় আর থাকতে পারছিলাম না। তাই বিকেলের দিকে একটু দেখতে এলাম। যদিও ভিড় করা ঠিক না, তবুও কেমন জানি টান লাগে।”
এদিকে উৎসুক জনতাকে সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। হাসপাতালের রোগী পরিবহন ও জরুরি সেবা যেন ব্যাহত না হয়, সেই জন্য পুলিশ সদস্যরা সারাক্ষণ টহল দিচ্ছেন এবং দাঁড়িয়ে থাকা কিংবা ছবি তুলতে থাকা মানুষদের বারবার সরে যেতে বলছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ সদস্য বলেন, “মানুষের ভিড় হলে অ্যাম্বুলেন্স প্রবেশ–বাহিরে সমস্যা হয়। আমরা অনুরোধ করছি ভিড় না করতে। কিন্তু অনেকে ছবি তুলতেই আসছেন।”
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও বিষয়টি নিয়ে অস্বস্তি প্রকাশ করেছে। অতিরিক্ত ভিড় ও ক্যামেরার ফ্ল্যাশ রোগীসেবা বা হাসপাতালের স্বাভাবিক কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটাতে পারে বলে জানায় এভারকেয়ার কর্তৃপক্ষ।
চাটগাঁ নিউজ/জেএইচ






