“ক্লুলেস” হাসান তারেক হত্যার মূল হোতা ডিবির জালে ধরা

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : চট্টগ্রাম নগরে এক বছর আগের “ক্লুলেস” হাসান তারেক হত্যা মামলার মূল পরিকল্পনাকারী ও সরাসরি হত্যায় জড়িত কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলাউদ্দিন ওরফে আলো (৪১) কে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি (পশ্চিম)।

মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এই তথ্য নিশ্চিত করেন ডিসি (ডিবি পশ্চিম) মাহবুব আলম খান।

তিনি বলেন, গতকাল রাতে চকবাজার থানাধীন দামপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে আলাউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার হেফাজত থেকে ১২ বোতল নিষিদ্ধ কোডিন ফসফেট ও ট্রিপোলিডিন হাইড্রোক্লোরাইড যুক্ত কাশির সিরাপ উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ জানায়, আসামি জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন, নিহত হাসান তারেক (৩৯) আগে থেকেই তাদের মাদক চক্রের তথ্য পুলিশের কাছে ফাঁস করেছিলেন। ২০২৪ সালের ১০ জানুয়ারি তারেকের তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ তাদের একটি মাদকের চালান আটক করে। সে ঘটনায় আলো ও তার সহযোগী মোর্শেদ আলম ওরফে সোহেল গ্রেপ্তার হয়ে দীর্ঘদিন জেলে ছিলেন। জামিনে মুক্তির পর তারা প্রতিশোধ নিতে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

ডিবির তদন্তে জানা গেছে, ঘটনার প্রায় ১৫ থেকে ২০ দিন আগে আলাউদ্দিন, শওকত আকবর ও মোর্শেদ আলম চট্টগ্রাম নগরের জামালখান এলাকার এক গলিতে বসে হত্যার পরিকল্পনা করেন। এর পর ১১ অক্টোবর ২০২৪ রাতে কাজীর দেউড়ী এলাকায় তারেককে ফাঁদে ফেলা হয়। শওকত ২০ হাজার টাকা খরচের জন্য আলোকে দেন। পরে তারা হাটহাজারী থেকে সাকিব (২২) ও ইকবাল হোসেন ওরফে বাবু (১৯) নামের দুই যুবককে ভাড়া করা সিএনজি নিয়ে ঘটনাস্থলে নিয়ে আসে।

তারেককে কৌশলে সিএনজিতে তোলার পর বায়েজীদ লিংক রোডের নির্জন স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নাইলনের রশি দিয়ে হাত বেঁধে গলায় ফাঁস দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। প্রায় ২০ মিনিট পর তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে লাশ সিএনজিতে করে পাহাড়তলী থানাধীন খেজুরতলী রাসমনি ঘাটের পাশে ফেলে দেওয়া হয়।

ডিবির ভাষ্যমতে, লাশ ফেলে হত্যাকারীরা সিএনজি নিয়ে পাহাড়তলী থানার পাশ দিয়ে ওয়াসাস্থ কুটুমবাড়ি রেস্টুরেন্টে গিয়ে রাতের খাবার খান। পরে শওকত প্রদত্ত টাকার ভাগ-বাটোয়ারা করেন আলো—মোর্শেদকে ৫ হাজার, সাকিব ও ইকবালকে ২ হাজার করে এবং সিএনজি চালককে ২ হাজার টাকা দেন। এরপর সবাই নিজ নিজ গন্তব্যে চলে যায়।

গ্রেপ্তারকৃত মোহাম্মদ আলাউদ্দিন ওরফে আলো চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন থানায় হত্যা, চুরি ও মাদক সংক্রান্ত মোট ১৮টি মামলার আসামি বলে নিশ্চিত করেছে ডিবি (পশ্চিম)।

সিএমপি ডিসি (ডিবি পশ্চিম) মাহবুব আলম খান বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ডটি দীর্ঘদিন ধরে ‘ক্লুলেস’ হিসেবে ছিল। আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি ও মাঠ পর্যায়ের গোয়েন্দা তৎপরতার মাধ্যমে আমরা অবশেষে মূল পরিকল্পনাকারীকে ধরতে সক্ষম হয়েছি। বাকি আসামিদেরও গ্রেপ্তারের অভিযান চলছে।’

চাটগাঁ নিউজ/এসএ

Scroll to Top