পিআরটা কী সেটাই তো বুঝি নারে ভাই: মির্জা ফখরুল

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: গণভোট ও পিআর ছাড়া নির্বাচন হবে না- এমন দাবিতে যারা আন্দোলন করছেন, তাদের উদ্দেশ্য ভালো নয় বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘পিআরটা কী সেটাই তো আমরা বুঝি নারে ভাই।’

বুধবার (১৫ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টায় ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার গড়েয়া ইউনিয়নে ‘সুধী সমাজ, হিন্দু ধর্মালম্বী ও মহিলা সমাবেশের’ মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ফখরুল বলেন, ‘হিংসার রাজনীতি আমরা (বিএনপি) চাই না। আমরা হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ-খ্রিস্টানের মধ্যে কোনো বিভেদ সৃষ্টি করতে চাই না। আমরা কখনই হিংসার রাজনীতিকে প্রশ্রয় দিতে চাই না। আমরা চাই একটা শান্তির রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হোক, এটাই আমাদের চাওয়া।’

তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতা আমাদের অস্তিত্ব, সেটাকে ভুলে যাওয়ার কোনো কারণ নাই। ঠিক তেমনি ২০২৪ এর ৫ আগস্টকে আমরা ভুলব না, কারণ এদিন আমাদের ছেলেরা রক্ত দিয়ে আমাদের ওপর যে দানব স্বৈরাচারকে সরিয়ে দিয়েছে। সুতরাং সেটাকেও আমরা কোনদিন ভুলতে পারব না। এই যে একসঙ্গে সবাইকে নিয়ে চলা এটাই হবে নতুন বাংলাদেশ।’

রাজতৈনিক দলগুলোর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনাদেরকে বারবার যেটা বলতে চাই- ভাগাভাগি আর কইরেন না, দেশটার বহু ক্ষতি হয়ে গেছে, আর ক্ষতি আমরা করতে চাই না। আমরা সবাই মিলে এই বাংলাদেশে সত্যিকার অর্থে সুন্দর করে একটা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ দেখতে চাই। আমরা ভালোবাসার মধ্যে প্রেমের মধ্যে, সৌহার্দ ও ভাতৃত্বের মধ্যে আমরা দেশটাকে তৈরি করতে চাই। এটাই হচ্ছে মূল কথা।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘দয়া করে দেশটাকে বাঁচান, এখন আর বিভাজন সৃষ্টি করবেন না। এখন আর ভিন্ন কোনো দাবি-দাওয়া তুলে গণভোট হতে হবে, না হলে হবে না বা পিআর হতে হবে, না হলে ভোট হবে না! আচ্ছা আপনারা পিআরটা বোঝেন? আপনারা এখানে শিক্ষিত মা-বোনেরা আছেন? পিআর কেউ বোঝে না তা হলে সেটা কেমন করে হবে। ভোটটা পিআরকে দেবো, না আলমগীর সাহেবকে দেবো, না দেলোয়ার সাহেবকে দেবো?’

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘পিআর হচ্ছে মানুষকে মানে প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার দরকার নাই, দলটাকে ভোট দিতে হবে। এখন কথা হলো- আমি তো জানি আমার প্রার্থী কে, আমার এমপি কে, এখন আমার প্রার্থীকে যদি ভোট দিতে না পারি তাহলে আমি যাবো কার কাছে? এই জিনিসগুলো মাথার মধ্যে নিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘পিআর নিয়ে আমরা পার্লামেন্টে গিয়ে আলোচনা করি, তর্ক-বিতর্ক করি। আমরা বলেছি, পরবর্তী পার্লামেন্টে তর্ক-বিতর্ক করে যদি দেশের জনগণ পিআর চায় তাহলে আমরা সেটা করব। না ওরা এসব শুনবে না, তারা মিছিল করে যাচ্ছে পিআরের জন্য, এখনো মিছিল করে যাচ্ছে। প্রত্যেকদিন মিছিল করে যাচ্ছে আর বলছে- পিআর চাই, পিআর চাই! পিআরটা কী সেটাই তো আমরা বুঝি নারে ভাই।’

যারা পিআর চাচ্ছে তাদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে ফখরুল বলেন, ‘দয়া করে নির্বাচনটা তাড়াতাড়ি করতে দেন। এই মানুষগুলো বাঁচুক। এই অস্থিরতার মধ্যে মানুষগুলো আছে, সেই অস্থিরতা কাটুক।’

তিনি আরও বলেন, ‘আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ থাকবে- সঠিক সিদ্ধান্ত দেবেন। আর দলগুলোর প্রতি আমার আবেদন- সব দাবি দাওয়া এখন বন্ধ রেখে, আর কিছু প্রতিষ্ঠান আছে তারাও দাবি-দাওয়া তুলছে; এসব আন্দোলনের উদ্দেশ্যেটা ভালো না। নির্বাচনটাকে পণ্ড করতে চায়।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা তো ভোট দিতে চাই, জনগণও ভোট চায়। দয়া করে এসব বাদ দিয়ে নির্বাচনটা শেষ করেন, নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের একটা প্রতিনিধি আসুক, তারপর এসব বিষয়গুলো নিয়ে আরও তর্ক-বিতর্ক করা যাবে, আরও কথা বলা যাবে এবং কাজ করা যাবে।’

এ সময় ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, পৌর বিএনপির সভাপতি শরিফুল ইসলাম শরিফ, গড়েয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রেদো শাহ চৌধুরীসহ বিএনপি ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীরা বক্তব্য দেন।

চাটগাঁ নিউজ/এমকেএন

Scroll to Top