নিজস্ব প্রতিবেদক : উৎসবমুখর পরিবেশে শেষ হলো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) বিকেলে চট্টগ্রামে সাগরপাড়ে হাজার হাজার ভক্তের উপস্থিতিতে বির্সজন দেওয়া হয় মহিষমর্দিনী, দুর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গাকে।
এসময় সেখানে ছিল বিষাদের সুর।
সরেজমিনে দেখা যায়, গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি অপেক্ষা করে সকাল থেকেই ঢাক-ঢোল, কাঁসর-ঘণ্টার বাজনার তালে তালে চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন মন্দির ও মহল্লা থেকে শোভাযাত্রা করে প্রতিমাগুলো পতেঙ্গা সীবিচে আনা হয়। পরে নৌকাযোগে সেগুলো নিয়ে যাওয়া হয় নদীর মাঝখানে, সেখানে সম্পন্ন করা হয় বিসর্জন।
এসময় ভক্তদের কারও চোখে দেখা যায় অশ্রু, কারও কণ্ঠে শোনা যায় দেবীর বন্দনা। কেউবা নদীর পানি ছিটিয়ে নিচ্ছিলেন নিজের ও পরিবারের সদস্যের শরীরে।
এ বছর দেবী দুর্গা মর্ত্যে এসেছেন গজে (হাতি) চড়ে। কৈলাসে ফিরে যাচ্ছেন দোলায় চেপে। গজে চড়ে দেবীর আগমনের অর্থ হলো শুভ। মনে করা হয়ে থাকে, দেবী যদি গজে চড়ে মর্ত্যে আসেন তাহলে তিনি সঙ্গে করে সুখ, সমৃদ্ধি নিয়ে আসেন। পৃথিবী হয়ে ওঠে শস্য শ্যামলা। কিন্তু সেই সঙ্গে অতি বর্ষণ বা প্লাবনের আশঙ্কাও দেখা দেবে। আর দশমীতে দেবী মর্ত্য ছাড়বেন দোলায় (পালকী) চড়ে। দোলায় চড়ে মর্ত্য ছাড়লে ভক্তের মড়ক বা মহাবিপর্যয়ের আশঙ্কা করা হয়।
নগরীর পাথরঘাটা থেকে আগত নবনীতা বর্মণ জানান, এই কয়েকটা দিন যেন স্বপ্নের মতো কেটেছে। মা দুর্গা আমাদের মাঝে ছিলেন, তাই আনন্দে ভরে উঠেছিল চারপাশ। কিন্তু আজ মা চলে যাচ্ছেন, সেই কষ্টে বুকটা ভরে উঠছে। আবারও এক বছরের অপেক্ষা। এবারের পূজায় আমি বিশেষ প্রার্থনা করেছি যেন আমাদের দেশ শান্তিময় হয়, সবার জীবনে সুখ ও সমৃদ্ধি নেমে আসে।
পতেঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মো. সুলতান আহসান উদ্দীন জানান, শান্তিপূর্ণভাবে সাগরে প্রতিমা বিসর্জন দিচ্ছেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। নির্বিঘ্নে প্রতিমা বিসর্জনের জন্য সৈকত ও আশপাশ এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এবছর চট্টগ্রাম মহানগরীর প্রধান পূজামণ্ডপ জেএম সেন হলসহ ১৬টি থানায় ব্যক্তিগত, ঘটপূজাসহ ২৯২টি পূজামণ্ডপে পূজা উদযাপন হচ্ছে। এছাড়া চট্টগ্রামের ১৫ উপজেলায় মোট মোট পূজামন্ডপের সংখ্যা ২ হাজার ২০২টি। এর মধ্যে প্রতিমা পূজামন্ডপের সংখ্যা এক হাজার ৫৮৫টি এবং ঘট পূজার সংখ্যা ৬১৭টি।
চাটগাঁ নিউজ/এসএ