লাদাখে বিক্ষোভ-সহিংসতা: পরিবেশকর্মী সোনম ওয়াংচুক গ্রেপ্তার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতে শুক্রবার লাদাখ পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন দেশটির খ্যাতিমান পরিবেশ কর্মী সোনম ওয়াংচুক। এর দুই দিন আগে লেহতে ষষ্ঠ তফসিলের অন্তর্ভুক্তির দাবিতে হওয়া আন্দোলন সহিংস হয়ে ওঠে।

আজ শুক্রবার দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে সংবাদ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার কথা থাকলেও এর আগেই তাকে আটক করা হয়। পরিবেশকর্মী ও উদ্ভাবক ওয়াংচুক লাদাখের পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা ও উপজাতিদের অধিকার রক্ষায় কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ষষ্ঠ তফসিলে অন্তর্ভুক্তির দাবিতে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন।

সেই সহিংসতায় বুধবার চারজনের মৃত্যু হয় এবং বহু মানুষ আহত হন।

ওয়াংচুককে গ্রেপ্তার করে লাদাখ পুলিশের একটি দল, যার নেতৃত্বে ছিলেন ডিরেক্টর জেনারেল অব পুলিশ এস ডি সিংহ জামওয়াল। লেহতে ইন্টারনেট সেবাও স্থগিত করা হয়েছে। কোন অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তা তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট হয়নি।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বুধবারের সহিংসতার জন্য ওয়াংচুককে দায়ী করে জানায়, তার ‘উসকানিমূলক মন্তব্য’র ফলেই এ ঘটনা ঘটে। তবে ওয়াংচুক অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি সহিংসতার নিন্দা জানান এবং এ ঘটনার পর বুধবার তার টানা দুই সপ্তাহের অনশন ভঙ্গ করেন।

‘আর্থিক অনিয়মের’ অভিযোগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার সোনম ওয়াংচুকের নেতৃত্বাধীন এনজিও স্টুডেন্টস এডুকেশনাল অ্যান্ড কালচারাল মুভমেন্ট অব লাদাখের এফসিআরএ লাইসেন্স বাতিল করে।

তবে ওয়াংচুক এই অভিযোগও প্রত্যাখ্যান করে বলেন, সিবিআই ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তদন্ত আসলে একটি ‘ডাইনি শিকার’। লাদাখকে রাজ্যের মর্যাদা দেওয়ার আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া এপেক্স বডি লেহ শুক্রবার জানায়, তাদের আন্দোলন শান্তিপূর্ণ এবং কিছু যুবকের নিয়ন্ত্রণ হারানোর কারণে ২৪ সেপ্টেম্বরের সহিংসতা ঘটে যায়।

তারা দাবি করে, চলমান অনশন চলাকালীন লেহতে সহিংসতায় সোনম ওয়াংচুকের কোনো ভূমিকা নেই।

এক বিবৃতিতে সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘আমাদের আন্দোলন শান্তিপূর্ণ ও অহিংস হবে। এই বার্তা ছড়ানোর জন্য আমরা সব ধর্মের প্রার্থনা আয়োজন করেছিলাম।

যখন সোনম ওয়াংচুক অনশন শুরু করেন, তখন কিছু মানুষ ছিল। আমরা গ্রাম থেকে লোকজনকে ডাকতাম। ২৪ সেপ্টেম্বর লেহ বন্ধের ডাক দেওয়া হয়েছিল।’

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘২৩ সেপ্টেম্বর আন্দোলনে অংশ নেওয়া দুজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। খবর ছড়িয়ে পড়তেই বিপুলসংখ্যক যুবক সেখানে জড়ো হয়। বন্ধের দিনে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি মানুষ ধর্মঘট স্থলে হাজির হন, যাদের বড় অংশ ছিল যুবক।’

এপেক্স বডির এক সদস্য জানান, সিনিয়র নেতাদের বারবার চেষ্টার পরও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসেনি এবং কিছু আন্দোলনকারী বিজেপির কার্যালয়ে ভাঙচুর চালায়।

তিনি বলেন, ‘এরপর যুবকেরা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। তারা বাইরে গিয়ে প্রতিবাদ করতে চেয়েছিল, কিন্তু আমরা আটকাই। আমাদের সিনিয়র নেতারাও থামতে বলেন। কিন্তু তারা শোনেনি। এরপর তারা বিজেপি কার্যালয়ে গিয়ে ভাঙচুর করে।’

চাটগাঁ নিউজ/জেএইচ

Scroll to Top