চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে ‘গুরুতর’ অভিযোগ এনেছেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। মেয়র বলেছেন, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা প্রকল্পের ফাইল দেখলে সেটা মন্ত্রণালয়ে থেকে বাসায় নিয়ে যান এবং এর পর সেটা আর ফেরত আসে না। এভাবে মন্ত্রণালয় থেকে ফাইল গায়েব হয়ে যায়।
সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রামে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ‘পরিচ্ছন্নতা সচেতনতামূলক প্রচারাভিযান’ কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
শাহাদাত বলেন, ‘দিজ ইজ দ্য প্যাটিথিক সিনারিও দ্যাট উই আর ফেসিং এইচ এন্ড ইভরেডে।’ ফাইল আছে, সবই আছে। খুব চমৎকারভাবে উনারা বাসায় নিয়ে যান। মন্ত্রণালয় থেকে ফাইল গায়েব হয়ে যায়। এটা আমার গত ১১ মাসের অভিজ্ঞতার কথা বলছি।
মেয়র বলেন, ‘ফাইল আর মন্ত্রণালয়ে পাওয়া যায় না। আমি খুঁজতে খুঁজতে মন্ত্রণালয়ে, আমার ফাইল কই? বলে, ফাইল তো বাসায় নিয়ে গেছেন। বাসা থেকে ওটার আর পরে স্বাক্ষর হয় না। ওটা আর আসে না। ৪০০ কোটি টাকার প্রকেল্পর একটা প্রজেক্ট সাবেক মেয়র দিয়েছে। যাতে শহরের ময়লা পরিষ্কারের যন্ত্রপাতি কেনার কথা। ২ বছর ধরে প্রজেক্টটা কোনো কিছু হয়নি।
ইউকের প্রজেক্টটা আমি আর করতে পারিনি। জাপান ‘অ্যাজ ওয়েল অ্যাজ’ কোরিয়ার প্রজেক্টও। আজকে এগুলো যদি আমি অনেক দ্রুত পেতাম, তাহলে চট্টগ্রাম শহর অনেক সুন্দর করে দিতে পারতাম। বাট এটা শুধু চট্টগ্রাম সিটির ব্যর্থতা নয়, এটা রাষ্ট্রের ও সরকারের ব্যর্থতা।’
তিনি আরও বলেন, ‘এরই মধ্যে খাল ও ড্রেন খনন আমরা করছি। ফাইনালি ৪০০ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি কেনার যে প্রজেক্ট তা অর্থ মন্ত্রণালয়ে গিয়ে হয়ে গেল ২৯৮ কোটি টাকা। ১০০ কোটি টাকা কেটে দিয়ে বলে দিল, লোন নেওয়ার জন্য বাকিগুলো। ওই ফাইলটা কিন্তু এখনো পর্যন্ত ওই জায়গায় রয়ে গেছে। আমি এখনো দৌড়াচ্ছি, আমি প্রত্যেকটি মন্ত্রণালয়ে যাচ্ছি। প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছি। আমি কোথায় যাব? এর ওপর আর কেউ আছে? উনি চট্টগ্রামের মানুষ। উনাকে বলেছি, উনার পিএসকে বারবার বলেছি যে, কাজটা করে দেন। আমার মেশিনারিজ খুব দরকার। আমার আসলে মেশিনারিজ নেই।’
মেয়র শাহাদাত বলেন, ‘যে যন্ত্রপাতিগুলো আছে সেগুলো ১৫-২০ বছরের পুরনো। গত সরকার একটা ড্রেনেজ সিস্টেম করতে গিয়ে ১৪ হাজার কোটি টাকার মতো খরচ করেছে। আর এটা যন্ত্রপাতি কেনার জন্য তিন শ কোটি টাকার খুব গুরুত্বপূর্ণ প্রজেক্ট। কিন্তু সেখানে গিয়ে আমি ফেইল করলাম।’
মেয়রের বক্তব্যের পর বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা সব মিনিস্ট্রি, ফাইন্যান্স মিনিস্ট্রির সঙ্গে মারামারি করি। লিটারেলি মারামারি করছি। আমরা চাইলে বাজেটটা পাই না। যে বাজেটটা পাওয়া গেছে, যেহেতু মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশ, আপনাকে যদি ৫ শতাংশ দিয়ে থাকে তাহলে আপনি প্লিজ এই ফান্ডটা নিবেন এবং চট্টগ্রামের মানুষকে বঞ্চিত না করে এই ফান্ডটা দিয়ে কাজ শুরু করবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের যে উন্নয়নটা হয়েছে এ বছর জলাবদ্ধতা থেকে। চট্টগ্রামের মানুষকে জলাবদ্ধতা থেকে রেহাই দিতে পেরেছি। আমরা এ বছর গলা পরিমাণ পানি দেখিনি। আমি জানি না, আপনারা দেখেছেন কিনা। সিটি করপোরেশন, সিডিএ, নাগরিক সমাজ, ছাত্র ও শিক্ষক সমাজ যারা এ লক্ষ্যে কাজ করেছেন, তাদের সবাইকে ধন্যবাদ। আপনাদের মোটিভেশনটা আছে। এই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা যেটা শুরু হয়েছে, আশাকরি আগামী একবছরে সুফল দেখতে পাব।’
চাটগাঁ নিউজ/এসএ