চট্টগ্রাম চেম্বার নির্বাচনে পরিচালক পদে ৭১ জনের মনোনয়ন জমা

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : দেশের শতবর্ষী বাণিজ্য সংগঠন চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের নির্বাচনে পরিচালক পদে নির্বাচনের জন্য চারটি ক্যাটাগরিতে ৭১ জন ব্যবসায়ী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। রোববার মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষ দিনে প্রার্থীরা চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে নির্বাচন কমিশনে এসব মনোনয়নপত্র জমা দেন।

এর মধ্যে চট্টগ্রামের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আমিরুল হক টিম লিডার হিসেবে অর্ডিনারি ক্যাটাগরিতে ২২ জন, অ্যাসোসিয়েট ক্যাটাগরিতে ৮ জন এবং ট্রেড ও গ্রুপ ক্যাটাগরিতে ৬ জনের মনোনয়নপত্র জমা দেন।

রোববার দুপুর আড়াইটায় নির্বাচন কমিশনে মনোনয়নপত্র জমা দান শেষে এই ব্যবসায়ী নেতা বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে কোনো রাজনীতি করি না। রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত চেম্বার গড়ে তোলাই আমার লক্ষ্য। আমাদের টিমের কনসেপ্ট হচ্ছে- আমরা টিম হিসেবে ফরম জমা দিলাম। আমরা চাই ইকোনোমিক রিফর্ম অব দি চিটাগং। আমরা বে-টার্মিনালের বাস্তবায়ন চাই।

তিনি বলেন, আমরা জানি কমার্শিয়াল ক্যাপিটাল চট্টগ্রাম অবহেলিত। আমরা কাস্টমসের হয়রানি থেকে মুক্তি চাই। চট্টগ্রামের প্রতি যে বৈষম্যমূলক আচরণ সেখান থেকে বের হয়ে আসতে চাই। সারা দেশের মধ্যে কেবল চট্টগ্রামে মহাসড়কে স্কেল বসানো হয়েছে। একটি গাড়িতে ১৩ টন পণ্য পরিবহণ নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। চট্টগ্রামের প্রতি এটা বিমাতাসুলভ আচরণ। আমরা এসব কিছু থেকে পরিত্রাণ চাই। টিম ওয়ার্ক হিসেবে চেম্বারে ব্যবসায়ীদের পক্ষে কাজ করতে চাই।

এশিয়ান অ্যাপারেলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএ সালাম বলেন, চিটাগাং চেম্বার নির্বাচনের নমিনেশন ফরম জমা দেওয়ার শেষ দিন আজ। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বিশেষ করে ২০২৪ সালের ৫ আগস্টে যে পরিবর্তন হয়েছে যে নতুন বাংলাদেশের আমরা স্বপ্ন দেখছি সেই হিসেবে চেম্বারের নতুন নির্বাচন। অনেক অবহেলিত নেতা আছেন, অনেক অভিজ্ঞ নেতা আছেন। সবাই নির্বাচন করতে চান। সবারই একটা স্বপ্ন নতুন বাংলাদেশ তৈরি করা। সবাই নতুন চেম্বার করতে চায়। সবার আগ্রহ দেখে ভালো লাগছে। ভবিষ্যতে যেন একটি ভালো চেম্বার হয়। এক বছর প্রশাসকের অধীনে কাজ করেছি আমরা। নির্বাচিত যে হবে হোক, নির্বাচন যেন সুন্দরভাবে হয়। ব্যবসায়ীরাই যেন চেম্বার চালাতে পারে। সবাইকে অনুরোধ করবো, জটিলতা তৈরি না করে আমরা সবাই ব্যবসায়ী আমাদের সবার কিছু না কিছু দোষ থাকতেই পারে। সবাই মিলেমিশে চলুন। নির্বাচন করে নতুন নেতৃত্ব তৈরি করি, নতুন চেম্বার তৈরি করি, নতুন বাংলাদেশ তৈরি করি।

চট্টগ্রাম সচেতন ব্যবসায়ী সমাজের আহ্ববায়ক এসএম নুরুল হক বলেন, চিটাগাং চেম্বারে গত ২০ বছর ধরে সুন্দর নির্বাচন কেউ পায়নি। আমরা চাই প্রত্যেক ব্যবসায়ী (ভোটার) যেন এসে ভোট দিতে পারেন। তারা যাকে পছন্দ করবে সেই নির্বাচিত হবে, চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিত্ব করবে। নির্বাচনী কার্যক্রমে কোনো বাধা নেই। আমরা খুশি।

ফ্রেশ ফ্রুটস অ্যান্ড ভেজিট্যাবলস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মাহবুবু রানা বলেন, দীর্ঘদিন পর সত্যিকার নির্বাচন হচ্ছে চিটাগাং চেম্বারে। তাই আমরা ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানাব কেন্দ্রে এসে ভোটাধিকার প্রয়োগ করুন। সঠিক নেতৃত্ব নির্বাচন করুন।

দোকান মালিক সমিতির সভাপতি ছালামত আলী বলেন, আমরা চাই চিটাগাং চেম্বারে ভালো নেতৃত্ব আসুক। যাতে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের জন্য কাজ করতে পারেন। চট্টগ্রাম চেম্বারে এবার একটি সুষ্ঠু সুন্দর ভোট হবে আশা করি।

ঘোষিত শিডিউল অনুযায়ী আগামী আগামী ১ নভেম্বর চট্টগ্রাম চেম্বার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। রোববার ছিল মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষ দিন। উৎসবমুখর পরিবেশে প্রার্থীরা তাদের মনোনয়ন জমা দেন। যাচাই-বাছাই ও প্রত্যাহার শেষে আগামী ৫ অক্টোবর চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে।

চেম্বার সূত্র জানায়, ২৪টি পরিচালক পদের মধ্যে ১৮টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। এর মধ্যে অর্ডিনারি ক্যাটাগরি ১২টি পদ ও অ্যাসোসিয়েট ক্যাটাগরির ৬টি পদ রয়েছে। অর্ডিনারির ১২টি পদের বিপরীতে মনোনয়নপত্র নিয়েছিলেন ৪৮ জন। আর অ্যাসোসিয়েট ক্যাটাগরির ৬টি পদের বিপরীতে মনোনয়নপত্র নিয়েছিলেন ১৭ জন। তাদের সবাই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

টাউন অ্যাসোসিয়েশন ও ট্রেড গ্রুপের ৬টি পদে নির্বাচন হবে না। এই দুটি ক্যাটাগরিতে ছয়টি প্রতিষ্ঠানের ছয়জন প্রার্থী পূর্বনির্ধারিত থাকায় তারা বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হবেন।

চাটগাঁ নিউজ/এসএ

Scroll to Top