চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন মোট ১ হাজার ৬৩ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় সংসদের জন্য ৪৭৪ জন এবং হল সংসদের জন্য সংগ্রহ করেছেন ৫৮৯ জন। তবে ভিপি, জিএস ও এজিএস পদে কতজন শিক্ষার্থী মনোনয়ন নিয়েছেন তা এখনও জানানো হয়নি। মনোনয়ন জমা দেওয়ার জন্য প্রার্থীদের হাতে আরও একদিন সময় থাকলেও ইতোমধ্যে জমা দিয়েছেন ১৯ জন।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) মনোনয়নপত্র বিতরণের সময়সীমা শেষ হওয়ার পর সন্ধ্যায় এসব তথ্য জানান চাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্য সচিব অধ্যাপক একেএম আরিফুল হক সিদ্দিকী।
এর আগে, গত রোববার থেকে চাকসু ও হল সংসদের নির্বাচনের মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু হয়। নির্বাচন কমিশনের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, তিনদিনে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন এক হাজার ৬৩ জন। এর মধ্যে চাকসুতে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য নিয়েছেন ৪৭৪ জন। মনোনয়নপত্র বিতরণের শেষদিনে মঙ্গলবার চাকসুর জন্য ৩৭৭ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। শুরুর দিন রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) ২৬ জন এবং সোমবার ৭১ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন।
আর হল সংসদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য মনোনয়নপত্র নিয়েছেন ৫৮৯ জন। এর মধ্যে মঙ্গলবার শেষদিনে ৫১৬ জন, রোববার দু’জন এবং সোমবার ৭১ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন।
চবিতে মোট ১৫টি হল সংসদের নির্বাচন হবে। এর মধ্যে এ এফ রহমান হলে ৪২ জন, আলাওল হলে ৩৮ জন, আমানত হলে ৪৪ জন, বিজয়-২৪ হলে ৩৯ জন, অতীশ দীপঙ্কর হলে ৪৭ জন, ফরহাদ হলে ৫৭ জন, খালেদা জিয়া হলে ৩৭ জন, মাস্টারদা সূর্য সেন হলে ৩৮ জন, নবাব ফয়জুন্নেছা হলে ১৪ জন, প্রীতিলতা হলে ৩৩ জন, রব হলে ৩৭ জন, রশিদ হলে ২৫ জন, নাহার হলে ২৫ জন, শাহজালাল হলে ৪১ জন ও সোহরাওয়ার্দ্দী হলে ৭২ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।
গত ২৮ আগস্ট ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর)। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শুরু হবে ১৮ সেপ্টেম্বর। এর পর ২১ সেপ্টেম্বর প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করা হবে। এটি প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২৩ সেপ্টেম্বর বেলা সাড়ে ৩টা পর্যন্ত। প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ হবে ২৫ সেপ্টেম্বর। আর ১২ অক্টোবর সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত পর্যন্ত ভোটগ্রহণ হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৪টি বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা তাদের ১৪টি হলের অধীনে নির্বাচনে ভোট দিয়ে তাদের পছন্দের প্রার্থী নির্বাচন করবেন।
চাকসু গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, ভিপি, জিএস, এজিএস ছাড়াও ক্রীড়া সম্পাদক, সহ-ক্রীড়া সম্পাদক, সাহিত্য-সংস্কৃতি এবং প্রকাশনা সম্পাদক, সহ সাহিত্য-সংস্কৃতি এবং প্রকাশনা সম্পাদক, দফতর, সহ দফতর, নারী শিক্ষার্থীদের জন্য ছাত্রী কল্যাণবিষয়ক সম্পাদক, সহ ছাত্রী কল্যাণবিষয়ক সম্পদক, বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক, গবেষণা ও উদ্ভাবনবিষয়ক সম্পাদক, সমাজসেবা ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনবিষয়ক সম্পাদক, ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট ও আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক, যোগাযোগ ও আবাসনবিষয়ক সম্পাদক, সহ যোগাযোগ ও আবাসনবিষয়ক সম্পাদক, আইন ও মানবাধিকার এবং পাঠাগার ও ক্যাফেটেরিয়াবিষয়ক সম্পাদক পদে এবং পাঁচটি নির্বাহী সদস্যসহ ২৬টি পদে নির্বাচন হবে।
এছাড়া, হলগুলোতে ভিপি, জিএস, এজিএস ছাড়া ক্রীড়া সম্পাদক, সাহিত্য-সংস্কৃতি এবং প্রকাশনা সম্পাদক, দফতর, রিডিং, ডাইনিং ও হল লাইব্রেরি, সমাজসেবা, পরিবেশ ও মানবাধিকারবিষয়ক সম্পাদক, বিজ্ঞান, গবেষণা তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক, যোগাযোগ ও আবাসনবিষয়ক সম্পাদক এবং তিনটি নির্বাহী সদস্য পদে নির্বাচন হবে।
উল্লেখ্য, ১৯৬৬ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয়। এর পর মোট ছয়টি চাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৯৭০ সালে চাকসুর প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ১৯৭২, ১৯৭৪, ১৯৭৯, ১৯৮১ সালে এবং ১৯৯০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি সর্বশেষ চাকসুর নির্বাচন হয়।
১৯৮১ সালে ভিপি পদে জসীম উদ্দিন সরকার ও জিএস পদে আব্দুল গাফফারসহ ছাত্রশিবিরের পূর্ণ প্যানেল জয়ী হয়। ১৯৯০ সালের সর্বশেষ নির্বাচনে তৎকালীন জাতীয় ছাত্রলীগের নেতা নাজিম উদ্দিন (ভিপি), আজিম উদ্দিন (জিএস) ও ছাত্রদলের মাহবুবের রহমান শামীম (এজিএস) নির্বাচিত হয়েছিলেন। কিন্তু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ১৯৯০ সালের ডিসেম্বরে সর্বদলীয় ছাত্রঐক্যের নেতা ফারুকুজ্জামান নিহত হলে চাকসুর কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর পর গত ৩৫ বছরে আর চাকসু নির্বাচন হয়নি।
চাটগাঁ নিউজ/এসএ