ঝোপ-জঙ্গলে ভরা টংকাবতী ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র

বান্দরবান প্রতিনিধি: দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় ঝোপঝাড়ে ছেয়ে গেছে বান্দরবানের সদর উপজেলার টংকাবতী স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র। এলাকাবাসীরাও বলতে পারছে না ঠিক কখন এটি সর্বশেষ খোলা হয়েছিল। এই কেন্দ্র দেখার যেনো কোন কর্তৃপক্ষই নাই।

এদিকে মাসের পর মাস অনুপস্থিত থেকে সরকারি বেতন-ভাতা এবং সুযোগ সুবিধা ভোগ করছে এই স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাছাড়াও দায়িত্বরত উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পরিদর্শনে না গিয়েই নিচ্ছে ভ্রমন ভাতাসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা।

স্থানীয়রা জানায়, দীর্ঘদিন ধরে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনুপস্থিতির কারণে এই কেন্দ্রের ওষুধ ও চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত প্রান্তিক জনগোষ্ঠী। প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে পাহাড়ী-বাঙ্গালী রোগীরা সেবা না পেয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে।

সরেজমিনে পরিদর্শনে গেলে দেখা যায়, কেন্দ্রটি ঝোপঝাড়ে পরিণত হয়েছে। চারপাশে রয়েছে বড় বড় আগাছা ও জঙ্গল যা মশাবাহিত রোগের বিস্তার ঘটাচ্ছে। কেন্দ্রের মূল ফটকে ও ভেতরে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নেই বললেই চলে। অফিসের প্রবেশ মুখ ব্যবহারের অনুপযোগী, বিভিন্ন স্থানে জমে আছে ময়লা পানি।

স্থানীয়রা আরো জানায়, কিছুদিন আগে এই কেন্দ্রের তিনজন কর্মচারীকে অনুপস্থিতি ও গাছ কেটে বিক্রির অভিযোগে বদলি করা হলেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে বর্তমানে দায়িত্বে থাকা কর্মচারীরাও ঠিক মতো অফিসে আসেন না।

স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ রফিক বলেন, দুর-দূরান্ত থেকে শত শত পাহাড়ী-বাঙ্গালী রোগীরা আসে সেবা নিতে। কিন্তু কেন্দ্রটি নিয়মিত কার্যক্রম না থাকায় ফিরে যেতে হচ্ছে সবাইকে।

এদিকে জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ সুত্রে জানা গেছে, এই কেন্দ্রের দেখাশুনার দায়িত্বে আছেন বান্দরবান সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মেডিকেল অফিসার ডা. রাশেদ নিজাম। তিনি যোগদানের পর থেকে কোনদিন এই কেন্দ্র পরিদর্শন করেননি অথচ বিল ভাউচার জমা দিয়ে পরিদর্শন ভাতা নিয়েছেন অসংখ্যবার।

বিষয়টি নিয়ে ডা. রাশেদ নিজামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগটি অস্বীকার করেন এবং বলেন গেল ৭ আগস্ট টংকাবতীতে সংহিতা দেবীকে বদলি করা হয়েছে এবং সেই এক মাসের ছুটি নিয়েছে। ছুটি শেষে যোগদান করবেন।

বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের আহ্বায়ক রাজুময় তঞ্চ্যাঙ্গা বলেন, ইতোমধ্যে তিনজন কর্মচারীকে বদলি করা হয়েছে। পরিষদের মুখ্য নির্বাহীকে নিয়ে আরো তদন্ত করার জন্য চেয়ারম্যান আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। তদন্তে প্রমানিত হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বান্দরবান জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. লেনিন তালুকদার বলেন, দুইটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। যারা কর্মস্থলে অনুপস্থিত বা দায়িত্ব অবহেলা এবং সরকারি গাছ কাটার সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

চাটগাঁ নিউজ/ইলিয়াছ/এমকেএন

Scroll to Top