চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: কক্সবাজারে আয়োজিত ডিসি (জেলা প্রশাসক) গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট ২০২৫-এর ফাইনাল ম্যাচটি শুক্রবার দর্শকের তাণ্ডবে পণ্ড হয়ে গেছে। স্টেডিয়ামের মূল ভবন, গ্যালারি ও অন্যান্য স্থাপনাও ভাঙচুর করা হয়েছে, গ্যালারিতে দেওয়া হয়েছে আগুন।
আজ শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ফাইনাল ম্যাচটিকে ঘিরে এসব ঘটনা ঘটে। এদিকে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও ছুটোছুটিতে কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিলুফা ইয়াসমিনসহ অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন।
দর্শকদের অভিযোগ, স্টেডিয়ামের ধারণক্ষমতার চেয়ে ৬ গুণ বেশি টিকিট বিক্রি করা হয় এবং তা অতিরিক্ত মূল্যে। বসার জায়গার সংকট থেকেই বিশৃঙ্খলার সূচনা। এতো বড় আয়োজনে নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে কেউ কেউ।
জানা গেছে, কক্সবাজারের বীরশ্রেষ্ঠ মোহাম্মদ রুহুল আমিন স্টেডিয়ামে গত ১ সেপ্টেম্বর শুরু হওয়া এই টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্যাচটি শুক্রবার বিকেল ৩টায় রামু ও টেকনাফ উপজেলা একাদশের মধ্যে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সকাল ৭টা থেকেই দর্শকরা স্টেডিয়ামে এসে টিকিট সংগ্রহ শুরু করেন। যদিও টিকিটের মূল্য নির্ধারিত ছিল ৫০ টাকা, কিন্তু দর্শকের ভিড় দেখে দাম ক্রমাগত বাড়তে থাকে। দুপুর ২টা পর্যন্ত আয়োজক কমিটি অতিরিক্ত মূল্যে ধারণক্ষমতার ৬ গুণ টিকিট বিক্রি করে।
দর্শকরা জানান, প্রতিটি টিকিট ২০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি হয়েছে। যেখানে স্টেডিয়ামের ধারণক্ষমতা ৫ হাজার, সেখানে বিক্রি করা হয়েছে প্রায় ৩০ হাজার টিকিট। ফলে অতিরিক্ত দর্শক গ্যালারিতে বসার জায়গা না পেয়ে আড়াইটার দিকে গেট ভেঙে মাঠে ঢুকে পড়েন। এতে খেলা শুরু করা সম্ভব হয়নি। আয়োজক, পুলিশ, র্যাব ও সেনা বাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলেও সফল হয়নি।
এর মধ্যে যারা স্টেডিয়ামে ঢুকতে পারেননি, তারা বাইরে থেকে ভবনে ভাঙচুর শুরু করেন। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনে। বিকেল ৫টা ১৫ মিনিটে মাঠে থাকা দর্শকদের লাঠিচার্জ করে বের করে দেওয়া হয়। খেলা শুরু করার প্রস্তুতি নেওয়া হলেও গ্যালারি ও বাইরে থাকা দর্শকরা একযোগে হামলা চালিয়ে গ্যালারি, মাঠ, প্রেস বক্সসহ সবকিছু ভাঙচুর করে এবং ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। এতে ইউএনও নিলুফা ইয়াসমিনসহ অন্তত ৫০ জন আহত হন। কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ১৫ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জরুরি বিভাগের দায়িত্বশীল চিকিৎসক।
এ ঘটনার প্রেক্ষিতে ফাইনাল খেলা স্থগিত করা হলেও আয়োজক কমিটি, জেলা প্রশাসক কিংবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এখনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে।
চাটগাঁ নিউজ/জেএইচ