চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করায় বাকবিতণ্ডার জেরে মো. শাহেদ (২২) নামে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া একমাত্র ছেলেকে ছুরিকাঘাতে খুন করার অভিযোগ উঠেছে বাবার বিরুদ্ধে।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলাধীন মায়ানী ইউনিয়নস্থ আবুতোরাব ঘড়ি মার্কেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত শাহেদ ওই ইউনিয়নের শেখ আকনের বাড়ি মো. নুরুজ্জামান ও কামরুজ্জাহান বেগম দম্পতির একমাত্র ছেলে।
শাহেদ চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী। আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খুন হওয়া শাহেদের বাবা মো. নুরুজ্জামান (৬৫) সৌদি আরব থেকে আসার পর থেকে সব সময় স্ত্রী কামরুজ্জাহানকে তালাক দেওয়ার হুমকি দিয়ে আসছে।
নিহত মো. শাহেদের খালা নুর জাহান বেগম বলেন, সম্প্রতি নুরুজ্জামান দেশে ফিরে ২০ দিন আগে ছোট মেয়ের বিয়ে সম্পন্ন করেন। বিয়েতে নুরুজ্জামানের সাথে অপরিচিত এক নারী অতিথিকে দেখা যায়। এসময় পরিবারের সদস্যরা পরিচয় জানতে চাইলে বন্ধুর স্ত্রী হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন সকলের সাথে। কিন্তু গতকাল (মঙ্গলবার) কথিত বন্ধুর স্ত্রীকে বিয়ে করে নুরুজ্জামান নিজের গ্রামের বাড়িতে এনে বসবাস শুরু করেন। বিষয়টি জানতে পেরে বুধবার বিকেলে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিকে নিয়ে ওই বাড়িতে যাই। ওইখানে যাওয়ার পরপরই নুরুজ্জামান আমার বোন কামরুজ্জাহানের চুলের মুঠি ধরে ফেলে। তখন ছেলে শাহেদ মাকে বাঁচাতে গেলে তার বুকে ছুরি মেরে দেয় নুরুজ্জামান। আমরা এই হত্যার বিচার চাই।
শাহেদের মা কামরুজ্জাহান বেগম বলেন, আমার স্বামী মো. নুরুজ্জামান সৌদি আরব থাকা অবস্থায় সিলেট জেলার এক মহিলার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে সম্পর্ক গড়ে তুলেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল মঙ্গলবার ওই মহিলাকে বিয়ে করে বাড়িতে নিয়ে আসে। খবরটি শুনে বুধবার সন্ধ্যায় শহর থেকে বাড়িতে এসে জিজ্ঞেস করতে গেলে সঙ্গে সঙ্গে আমার স্বামী ছেলের বুকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে।
মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে (মস্তাননগর) হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. আর্যরাজ দত্ত বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে৷ বুকে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে৷ প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মৃত্যু হতে পারে৷
মিরসরাই থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আতিকুর রহমান বলেন, মায়ানী এলাকায় পারিবারিক কলহের জেরে বাবা-ছেলের কথা কাটাকাটি হয়৷এসময় বাবা ধারালো ছুরি দিয়ে ছেলেকে আঘাত করে৷ পরিবারের সদস্যরা বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে আসলে উন্নত চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন৷ এ বিষয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে৷
চাটগাঁ নিউজ/এসএ