চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে শীর্ষ তিন পদে বিজয়ী হয়েছেন ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল। ভিপি পদে মো. আবু সাদিক (সাদিক কায়েম), জিএস পদে এস এম ফরহাদ ও এজিএস পদে মহিউদ্দিন খান জয় পেয়েছেন।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকালে সাড়ে ৮টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে আনুষ্ঠানিকভাবে ডাকসু নির্বাচনের ফল ঘোষণা করা হয়।
ফলে দেখা গেছে, ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের ভিপি প্রার্থী মো. আবু সাদিক (সাদিক কায়েম) সর্বমোট ১৪ হাজার ৪২ ভোট পেয়েছেন, জিএস পদে এস এম ফরহাদ ১০ হাজার ৮৯৪ ভোট পেয়েছেন ও এজিএস পদে ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের প্রার্থী মহিউদ্দিন খান পেয়েছেন ৯ হাজার ৫০১ ভোট।
ডাকসুতে নবনির্বাচিত এই তিন ছাত্রপ্রতিনিধির কার বাড়ি কোথায়, তা তুলে ধরা হলো—
সাদিক কায়েম
সাদিক কায়েম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী। তার বাড়ি খাগড়াছড়ি শহরের বাজার এলাকায়। তার বাবা জেলা শহরের একজন কাপড় ব্যবসায়ী। তার ছোট ভাইও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে জানা গেছে।
ছোটবেলা থেকেই মেধাবী সাদিক খাগড়াছড়ি বায়তুশ শরফ জব্বারিয়া আদর্শ মাদ্রাসা থেকে দাখিল এবং পরে চট্টগ্রামের বায়তুশ শরফ থেকে আলিম পাস করেন। এরপর ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে। মেধাবী এই তরুণ স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ফলাফলে নিজ বিভাগে তৃতীয় হয়েছিলেন। স্নাতকে তার সিজিপিএ ছিল ৩ দশমিক ৭৮। তবে স্নাতকোত্তরে তার সিজিপিএ কত ছিল সেটি জানা সম্ভব হয়নি।
সাদিক কায়েম পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র সংসদের সাবেক সভাপতি, হিল সোসাইটি সাবেক প্রতিষ্ঠাতা, সেভ ইয়ুথ-স্টুডেন্টস অ্যাগেইনস্ট ভায়োলেন্সের সাবেক ফ্যাসিলিয়েটর, সূর্যসেন হল অ্যাসোসিয়েশন অব পলিটিক্যাল সায়েন্সের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক, বাংলাদেশ ইয়ুথ ইনিশিয়াটিভ-বিওয়াইআইয়ের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
এস এম ফরহাদ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এস এম ফরহাদ। রাঙামাটির ছেলে ফরহাদ ওই জেলার মাইনী গাথাছড়া বায়তুশ শরফ মাদ্রাসার থেকে দাখিল পাস করেন। এরপর চট্টগ্রামের বায়তুশ শরফ মাদ্রাসা থেকে আলিম পাস করেন তিনি।
এস এম ফরহাদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটির নেতা ও জসিমউদদীন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলেন। পাশাপাশি জসিমউদদীন হল ডিবেটিং ক্লাবের দায়িত্বেও ছিলেন। এ ছাড়া তিনি ঢাবিতে অধ্যয়নরত পার্বত্য চট্টগ্রামের শিক্ষার্থীদের সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র সংসদের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
মহিউদ্দীন খান
মহিউদ্দীন খান ঢাবির লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী ও বিজয় একাত্তর হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। তিনি স্নাতকে ৩.৯৩ সিজিপিএ পেয়ে এককভাবে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়েছিলেন। এবার মাস্টার্সের ফলাফলেও সিজিপিএ ৩.৯৭ পেয়ে প্রথম হয়েছেন তিনি। তার বাড়ি রাজশাহী বিভাগের জয়পুরহাট জেলায়।
প্রসঙ্গত, এবার ডাকসুতে ২৮টি পদের বিপরীতে প্রার্থী হয়েছেন ৪৭১ জন। আর ১৮টি হল সংসদে নির্বাচন হবে ১৩টি করে পদে। হল সংসদের ২৩৪টি পদের বিপরীতে প্রার্থী হয়েছেন ১ হাজার ৩৫ জন।
ডাকসুতে এবার মোট ভোটার ৩৯ হাজার ৮৭৪। এর মধ্যে পাঁচটি ছাত্রী হলে ১৮ হাজার ৯৫৯ আর ১৩টি ছাত্র হলে ভোটার ২০ হাজার ৯১৫ জন। এবারের নির্বাচনে ডাকসুতে ২৮টি পদের বিপরীতে ৪৭১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের মধ্যে বিভিন্ন পদে ছাত্রী ৬২ জন। এ ছাড়া প্রতি হল সংসদে ১৩টি করে ১৮টি হলে মোট পদের সংখ্যা ২৩৪টি। এসব পদে ভোটে লড়েছেন ১ হাজার ৩৫ জন।
চাটগাঁ নিউজ/এসএ