চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: অধিকাংশ ‘বিএনপিপন্থী’ শিক্ষক নিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে বলে দাবি করেছে ইসলামী ছাত্রশিবির (চবি শাখা)। এর ফলে নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকবে কী না তা নিয়ে শঙ্কায় আছে সংগঠনটির নেতারা।
আজ বুধবার (১০সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে চাকসু নির্বাচন নিয়ে জরুরি এক সংবাদ সম্মেলনে এমন শঙ্কার কথা জানিয়েছেন চবি শাখা ছাত্রশিবির।
এছাড়া সংবাদ সম্মেলনে মানবিক বিবেচনায় ছাত্রত্ব ফিরিয়ে দেওয়া শিক্ষার্থীদের সুযোগ একাডেমিক পরিসর পর্যন্ত সীমাবদ্ধ রাখার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। অন্যথায় এটি প্রমাণিত হবে যে, শুধুমাত্র চাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দিতেই তাদের ছাত্রত্ব ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
চবি শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোহাম্মদ আলী বলেন, নির্বাচন কমিশনের অধিকাংশ সদস্য সরাসরি একটি বিশেষ দলের রাজনীতির সাথে জড়িত। এ অবস্থায় সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো পরিবেশ থাকতে পারে না।
তিনি আরো বলেন, কমিশনে দায়িত্বে থাকা প্রফেসর ড. জাহিদুর রহমান চৌধুরী প্রকাশ্যে ছাত্রশিবিরসহ মতাদর্শবিরোধী সকলের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ পোষণ করেন। এমন একজন শিক্ষক কমিশনে থাকলে নির্বাচনের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে কমিশনকে ঢেলে সাজাতে হবে।
ছাত্রশিবিরের অভিযোগ, চাকসুর গঠনতন্ত্রে সভাপতি হিসেবে উপাচার্যকে একচ্ছত্র ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, যা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের স্বাধীনভাবে কাজ করতে বাধাগ্রস্ত করবে। যুগোপযোগী ও প্রাসঙ্গিক সম্পাদক পদ সংযোজন না করে অপ্রয়োজনীয় বেশকিছু সহ-সম্পাদক পদ রাখা হয়েছে, যা অবিলম্বে সংশোধনের দাবি জানায় সংগঠনটি।
সংবাদ সম্মেলনে চাকসুর ‘দপ্তর সম্পাদক’ পদ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে ছাত্রশিবির। সংগঠনটির দাবি, এ পদ কেবল পুরুষদের জন্য বিশেষায়িত করা হয়েছিলো এবং পরে প্রশাসনের একাংশ শিবিরকে দায়ী করে তাদের মদদপুষ্ট ছাত্র সংগঠনকে দিয়ে প্রোপাগাণ্ডা চালিয়েছে। অথচ ছাত্রশিবিরের এর সঙ্গে দূরতম সম্পর্কও নেই। প্রশাসনকে অবশ্যই প্রকাশ করতে হবে- কেন গঠনতন্ত্র সংশোধন কমিটি এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো এবং নারীবিদ্বেষী এই কাজের উদ্দেশ্য কী ছিলো। পাশাপাশি দায়ীদের স্ব স্ব পদ থেকে পদত্যাগেরও দাবি জানায় সংগঠনটি।
ছাত্রশিবির সভাপতি আরও বলেন, কোনো আলোচনা ছাড়াই প্রশাসন একটি বিশেষ সংগঠনকে সুবিধা দিতে ভোটার ও প্রার্থীদের বয়সসীমা তুলে নিয়েছে। নির্দিষ্ট দলের নেতাদের ছাত্রত্ব ফিরিয়ে দিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দিতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ধরনের একপেশে পদক্ষেপের স্পষ্ট ব্যাখ্যা আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রশাসনকে দিতে হবে।
ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের বিচার না করায় তারাও ক্যাম্পাসে অবাধ বিচরণ করছে এবং নির্বাচনের প্রস্তুতিও নিচ্ছে বলে অভিযোগ ছাত্রশিবিরের। তারা মনে করে, জুলাই বিপ্লব-পরবর্তী ক্যাম্পাসের জন্য এর চেয়ে লজ্জাজনক কিছু হতে পারে না। দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. আল আমিন ন্যূনতম বিচার না করে জুলাইয়ের সঙ্গে বেঈমানি করেছেন বলেও মন্তব্য করে সংগঠনটি।
চাটগাঁ নিউজ/জেএইচ