এবার দলীয় পদ হারালেন চবির স্বঘোষিত সেই জমিদার!

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জমির মালিকানা নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করার অভিযোগে হাটহাজারী উপজেলা আমির মো. সিরাজুল ইসলামকে পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতের উত্তর জেলার আমীর মোহাম্মদ আলাউদ্দিন সিকদার। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় জামায়াতের অনুমোদন সাপেক্ষে ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলার কর্মপরিষদ বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এছাড়া আজ রোববার দুপুরে গণমাধ্যমে একটি বিবৃতিও পাঠানো হয়। সেখানে উল্লেখ করা হয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও জোবরা গ্রাম নিয়ে সিরাজুল ইসলাম অনাকাঙ্ক্ষিত বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের পৈতৃক সম্পত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত। আমরা জমিদার, জমিদারের ওপর কেউ হস্তক্ষেপ করবে, এটা আমরা মেনে নেব না।

জামায়াত মনে করে এ বক্তব্য মো. সিরাজুল ইসলামের নিজস্ব বক্তব্য। তার বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার বিক্ষুব্ধ হয়েছে এবং সংগঠন এ বক্তব্যকে বিনয় পরিপন্থী মনে করে। এতে সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। আমরা এজন্য দুঃখ প্রকাশ করছি। এ বক্তব্যের কারণে জামায়াতের চট্টগ্রাম উত্তর জেলা সিদ্ধান্ত নিয়ে তাকে হাটহাজারী উপজেলা আমিরের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, জামায়াত মনে করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও জোবরা গ্রাম কেউ কারো প্রতিপক্ষ নয়, পরস্পর পরিপূরক। এলাকাবাসী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে অতীত ঐতিহ্য ও সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশ বজায় ছিল, ভবিষ্যতেও এ ধরনের সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকবে এটাই আমরা প্রত্যাশা করি। সম্প্রতি অনাকাঙ্ক্ষিত একটি ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্র, ছাত্রী ও জোবরা গ্রামের অধিবাসী যারা আহত হয়েছেন, বাড়ি ঘরে সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে আমরা তাদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। এছাড়া এ ঘটনাকে পুঁজি করে কেউ যাতে অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো ঘটনা ঘটাতে না পারে, এ জন্য প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীসহ সবার সজাগ দৃষ্টি কামনা করছি।

জানা গেছে, হাটহাজারী উপজেলা জামায়াত নেতা মো. সিরাজুল ইসলাম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সেকশন অফিসার। ইতোমধ্যে তার দেওয়া বক্তব্যের ব্যাখ্যা চেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে তাকে তিন কার্য দিবসের মধ্যে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) স্থানীয়দের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় সিরাজুল ইসলাম একটি বক্তব্য দেন। তার বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে চবি শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষোভ দেখা দেয়।

বক্তব্যে তিনি বলেছিলেন, আমাদের সম্মান করতে হবে, আর সম্মান দেওয়ার মতো পরিবেশ আমরাই তৈরি করবো। বিশ্ববিদ্যালয় যদি আমাদের যথাযথ সম্মান না করে, তবে জনগণ হিসেবে যা করা প্রয়োজন আমরা তা সামনে করবো, ইনশাআল্লাহ।

প্রসঙ্গত, গত ৩০ ও ৩১ আগস্ট চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দাদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এর পরিপ্রেক্ষিতেই স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে ওই সভা করেন জামায়াত নেতা সিরাজুল ইসলাম।

চাটগাঁ নিউজ/জেএইচ

Scroll to Top