চাটগাঁনিউজ ডেস্ক: আজ শিল্পী অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম এর সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী। বাংলাদেশের ইতিহাসে স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে কোন চিত্রশিল্পী হিসেবে প্রথম একক প্রদর্শনী করেছিলেন এই গুণী শিল্পী। যৌবনেই নানা চিত্রকর্ম আর লেখনী দিয়ে এই শিল্পী জায়গা করে নিয়েছিলেন শিল্প সমঝদারদের হৃদয়ে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ব্যাপক সমাদৃত হয়েছে তার অনেক চিত্রকর্ম। ২০১৮ সালের এই দিনে ৭৪ বছর বয়সে নিভৃতচারী ও প্রচারবিমুখ এই মহান শিল্পী চিরনিদ্রায় শায়িত হন।
শফিকুল ইসলাম ৩৩ বছর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগে অধ্যাপনা করেন। এছাড়া তিনি চারুকলা বিভাগের চেয়ারম্যান ও এএফ রহমান হলের প্রভোস্টের দায়িত্ব পালন করেন। যৌথভাবে নকশা করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শহিদ মিনারের।
বাংলাদেশের জন্মলগ্নে প্রথম একক চিত্র প্রদর্শনী করেন এই শিল্পী। ১৯৭২ সালে এই প্রদর্শনী উদ্দোধন করেন স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রধান সেনাপতি জেনারেল ওসমানী। দেশে ও বিদেশে তিনি চারটি একক প্রদর্শনী সহ মোট উনিশটি চিত্র প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করেন।১৯৮৯ সালে প্রকাশিত হয় তার লেখা মৌলিক গ্রন্থ “প্রাচ্যরীতির শিল্প”।
প্রখ্যাত শিল্পী রফিকুন নবী (রনবী) শিল্পীকে স্মরণ করে বলেন, শফিক ছিল অত্যন্ত নিভৃতচারী। তার মধ্যে একটা প্রচার বিমুখ ব্যাপার ছিল। প্রচারে না গেলেও খুবই মনোযোগী হয়ে কাজ করতো। আমি তার কিছু কিছু কাজ দেখেছি, খুবই অপূর্ব ও শক্তিশালী তার ড্রয়িংস। বেশিরভাগ কাজে আমি দেখেছি স্কেচ কেন্দ্রিক। একটা নিজস্ব ধরন তৈরি করে সে সেটার উপর কাজ করতো। আমি ওকে বলতাম প্রদর্শনী করে কাজ গুলো দেখাও মানুষকে। কিন্তু ওই যে বললাম সে তো প্রচার বিমুখ।
তিনি আরও বলেন, অনেক শিল্পী আন্তর্জাতিক যেসব প্রদর্শনী হয় সেগুলোতে অংশগ্রহণ করে পুরস্কৃত হয়েছে । এসব স্বীকৃত গুলো অনেকেরই আছে। শফিক সে সুযোগ নেয়নি, সেগুলো নিয়ে কখনো ভাবেনি।
১৯৪৪ সালে চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন অধ্যাপক শফিকুল।বাবা আলহাজ্ব এমদাদুর রহমান ছিলেন ব্রিটিশ সরকার এর আমলে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ বিভাগ এর প্রধান। ১৯৬৭ সালে বাংলাদেশ কলেজ অফ আর্টস এন্ড ক্রাফটস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.এফ.এ এবং ১৯৭৪ সালে মাস্টার্স অফ ফাইন আর্টস(এম.এ) করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।