আইনজীবী আলিফ হত্যা: ৩৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গ্রহণ

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: চট্টগ্রাম আদালত এলাকায় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় পুলিশের জমা দেওয়া অভিযোগপত্র গ্রহণ করেছেন আদালত।

সোমবার (২৫ আগস্ট) বেলা ১১টায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এসএম আলাউদ্দীন গ্রহণযোগ্যতা শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। এ সময় মামলার বাদী ও অ্যাডভোকেট আলিফের বাবা জামাল উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।

বাদীপক্ষের নিয়োজিত আইনজীবী ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মো. রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী জানান, অভিযোগপত্রে ৩৮ জনকে আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়। তদন্ত কর্মকর্তা ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় এজাহারে উল্লিখিত আসামি গগন দাশ, বিশাল দাশ ও রাজকাপুরকে এবং সঠিক নাম-ঠিকানা না পাওয়ায় তদন্তে প্রাপ্ত সুকান্ত দত্তকে অব্যাহতির আবেদন করেন। সুকান্ত অস্ত্র, মাদক, চুরি, ডাকাতিসহ ৮টি মামলার আসামি। রিপোর্টেও তাকে দুর্ধর্ষ আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, ঘটনার সঙ্গে সুকান্ত দত্তের সম্পৃক্ততা রয়েছে মর্মে তদন্ত রিপোর্টে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে। ঘটনার পর মূল হত্যাকারীদের সঙ্গে তার ছবি ভাইরাল হয়েছে। সুতরাং তাকে আসামি হিসেবেই অন্তর্ভুক্ত রাখার আবেদন জানানো হয়। পরে আদালত এই আবেদন গ্রহণ করেন। সবমিলিয়ে আদালত সুকান্ত দত্তসহ মোট ৩৯ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করেন এবং পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ইস্যুর আদেশ দেন।

এর আগে গত ১০ আগস্ট আদালত বাদীর উপস্থিতিতে রিপোর্ট শুনানির জন্য সমন জারি করেন। সেই আদেশ মোতাবেক ২৫ আগস্ট বাদী জামাল উদ্দিন আদালতে হাজির হন এবং তদন্তপ্রাপ্ত আসামি নারাজি দাখিল করবেন না মর্মে আদালতকে অবহিত করেন।

চার্জশিটে বর্ণিত আসামিদের মধ্যে রয়েছে— চন্দন দাশ মেথর, রিপন দাশ, রাজীব ভট্টাচার্য্য, শুভ কান্তি দাশ, আমান দাশ, বুঞ্জা, রনব, বিধান, বিকাশ, রমিত প্রকাশ দাস, রুমিত দাস, নয়ন দাশ, ওমকার দাশ, বিশাল, লালা দাশ, সামীর, সোহেল দাশ, শিব কুমার, বিগলাল, পরাশ, গণেশ, ওম দাস, পপি, অজয়, দেবী চরণ, দেব, জয়, লালা মেথর, দুর্লভ দাশ, সুমিত দাশ, সনু দাস, সকু দাশ, ভাজন, আশিক, শাহিত, শিবা দাস ও দ্বীপ দাশ।

গত বছরের ২৬ নভেম্বর ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে যাওয়ার সময় শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষায়িত গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা চিম্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার করে। পরদিন কোতোয়ালি থানায় দায়ের হওয়া রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হয় তাকে। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে চিন্ময় কৃষ্ণকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এ নিয়ে বিক্ষোভ করেন ইসকন অনুসারীরা।

এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান বিক্ষোভকারীরা। ওইদিন দুপুরের পর বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে আদালত এলাকায় মসজিদ-দোকানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হামলা চালায়।

একপর্যায়ে ওইদিন বিকেলে আদালতের প্রধান ফটকের বিপরীতে রঙ্গম কনভেনশন হলের গলিতে একদল ইসকন অনুসারীর হাতে খুন হন অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফ।

এ ঘটনায় গত বছরের ২৯ নভেম্বর দিবাগত রাতে নগরের কোতোয়ালি থানায় ভুক্তভোগী আইনজীবী সাইফুলের বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন। এতে এজাহারে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। পাশাপাশি একই ঘটনায় পুলিশসহ ভুক্তভোগীরা বাদী হয়ে আরও চারটি মামলা করেন কোতোয়ালি থানায়।

চাটগাঁ নিউজ/জেএইচ

Scroll to Top