উপদেষ্টা হয়েও পাথর উত্তোলন বন্ধ করতে পারলাম না: রিজওয়ানা

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: সম্প্রতি নজিরবিহীন লুটপাট হয়েছে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ ‘সাদাপাথর’ এলাকায়। একসময় মনোমুগ্ধকর এই পর্যটনকেন্দ্রটি এখন প্রায় বিবর্ণ ও ক্ষতবিক্ষত হয়ে পড়েছে। এ বিষয়ে বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান গভীর হতাশা প্রকাশ করেছেন।

সোমবার (১১ আগস্ট) এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, ‘আগের ৪ বছর জাফলং-এ পাথর উত্তোলন বন্ধ রাখতে পেরেছিলাম, এখন আমি উপদেষ্টা হয়েও পারলাম না।’

ক্ষোভ প্রকাশ করে রিজওয়ানা হাসান বলেন, পাথর উত্তোলনে সর্বদলীয় ঐক্য দেখছি। একটি সুন্দর জিনিস কীভাবে অসুন্দর করে ফেলতে হয়, সেটা শিখতে হলে বাংলাদেশে আসতে হবে। চোখের সামনে অপূর্ব সুন্দর জাফলং নষ্ট হয়ে গেল, ধ্বংসলীলা দেখলাম।

তিনি আরও বলেন, শুনলাম, এই পাথরগুলো নাকি তুলতেই হবে। কেন তুলতে হবে? কারও কাছে কোনো পরিসংখ্যান নেই। অথচ পরিসংখ্যান বলছে, দেশের চাহিদার মাত্র ৬ ভাগ পূরণ হয় এসব পাথর তুলে, বাকি ৯৪ ভাগ আমদানি করতে হয়। ৯৪ ভাগ আমদানি করতে পারলে বাকি ৬ ভাগ কেন পারলাম না!

উপদেষ্টা প্রশ্ন তোলেন, ‘কেন আমরা ভিয়েতনামে গিয়ে নদীর ইকো ট্যুরিজম দেখি, অথচ জাফলং-এ একটি ইকো ট্যুরিজম করতে পারলাম না! আমরা যেমন সৌন্দর্যমণ্ডিত জাফলং দেখেছি, নতুন প্রজন্ম কেন তা দেখতে পাবে না? সেখানে আবার রাজনৈতিক ঐক্য দেখলাম।’

তিনি আরও জানান, ‘সিলেটে দুজন উপদেষ্টা গিয়েছিলাম, সেখানে পাথর তুলতে সর্বদলীয় ঐক্য দেখলাম। জাফলং রক্ষা করব বলে কোনো ঐক্য দেখলাম না। জাফলং ধ্বংস করে দিয়ে কীসের উন্নয়ন হচ্ছে? আমরা যদি পাথর না তুলে ইকো ট্যুরিজম করি, তবে আয় হবে বেশি। একজন ডিসি বলেছিলেন, ইকো ট্যুরিজমে আমরা পাথর তোলা থেকে বেশি আয় করতে পারব। সারাদিন পানিতে নেমে পাথর তোলাকে কর্মসংস্থান বলা যায় না, এটা স্পষ্ট শোষণ।’

ধলাই নদীর উৎসমুখে সীমান্তের জিরো লাইন সংলগ্ন ১০ নম্বর এলাকায় অবস্থিত ‘সাদাপাথর’ প্রতিবছর হাজারো পর্যটকের আকর্ষণকেন্দ্র ছিল। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে দিন-রাত লুটপাট চলছে। প্রতিরাতে অন্তত শতাধিক গাড়ি পাথর কোম্পানীগঞ্জ থেকে বের হয়ে যেতে দেখেছেন তারা। এ লুটের নেতৃত্বে স্থানীয় এক প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা জড়িত বলেও অভিযোগ রয়েছে।

চাটগাঁ নিউজ/এমকেএন

Scroll to Top