ফটিকছড়ি প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার হারুয়ালছড়িতে পুলিশ পরিচয়ে ১৭ বছরের এক কিশোর অপহরণের অভিযোগে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। অপহৃত কিশোর সাজু কুমার ত্রিপুরা ভূজপুর থানাধীন হারুয়ালছড়ি ইউনিয়নের রাঙ্গাপানি চা-বাগান এলাকার বাসিন্দা। তার বাবা দিলীপ কুমার ত্রিপুরা স্থানীয় বাজারে মুদি দোকান চালান।
পরিবারের অভিযোগ অনুযায়ী, গত ৯ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে তিনজন ব্যক্তি দোকানে এসে নিজেদের পুলিশ পরিচয় দেন। তাদের মধ্যে একজন পুলিশের পোশাক পরিহিত, বাকিরা সিভিল ড্রেসে ছিলেন। প্রথমে তারা পান-সিগারেট কিনে সাজুকে ডেকে নেন এবং এক আসামির বাড়ি দেখানোর কথা বলে সাথে যেতে বলেন। সাজু রাজি হলে জোরপূর্বক তাকে একটি সাদা প্রাইভেটকারে তুলে দক্ষিণ দিকে নিয়ে যায়।
সাজুর চিৎকারে তার বড় ভাই রাজু ত্রিপুরা বিষয়টি প্রত্যক্ষ করেন এবং বাবাকে খবর দেন। এরপর পরিবার ভূজপুর, ফটিকছড়ি ও হাটহাজারী থানায় যোগাযোগ করলেও কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ করেন। এমনকি ঘটনার পর কোনো পুলিশ টিম তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে যায়নি বলেও পরিবারের দাবি।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খবরটি ছড়িয়ে পড়ার পর মুক্তিপণ হিসেবে ৪০ লাখ টাকা দাবি করা হয়েছে এমন গুঞ্জন ছড়ালেও, কে দাবি করেছে, কাকে করেছে তা নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় তীব্র আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
ঘটনার দুইদিন পর ১১ আগস্ট বিকেলে সাজুকে বিবিরহাট বাস স্টেশন এলাকায় দেখা যায়। ভূজপুর থানা পুলিশ দাবি করেছে, তাদের অভিযান দেখে অপহরণকারীরা তাকে ছেড়ে যায়। পরে পুলিশ সাজুকে উদ্ধার করে হেফাজতে নেয়।
ভূজপুর থানার ওসি মাহবুবুল আলম বলেন, সংবাদ পাওয়ার পর অভিযান শুরু করি। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চালানো হয়। পুলিশের তৎপরতা দেখে অপহরণকারীরা সাজুকে বিবিরহাটে নামিয়ে দিয়ে যায়। আমরা তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে এসেছি। অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তিনি মুক্তিপণ দাবির বিষয়ে অবগত নন বলে জানান এবং লিখিত অভিযোগেও বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি বলে জানান।
সব মিলিয়ে, এটি প্রকৃতপক্ষে অপহরণ নাকি অন্য কোনো রহস্যজনক ঘটনা তা এখনও স্পষ্ট নয়। স্থানীয়দের মুখে মুখে এখন প্রশ্ন— এটা কি পুলিশের নামে খেলা, নাকি অন্য কারও চক্রান্ত? যার উত্তর সময়ই দেবে।
চাটগাঁ নিউজ/আনোয়ার/এমকেএন