চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা নাহিদ ইসলাম ও সারজিস আলমের পর এবার চট্টগ্রামের হাটহাজারীর আল-জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম মাদরাসায় গেলেন বিএনপির দুই শীর্ষ নেতা। এসময় তারা হেফাজতে ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা আমির প্রয়াত শাহ আহমদ শফী ও প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব প্রয়াত জুনায়েদ বাবুনগরীর কবর জিয়ারত এবং মাদরাসা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন।
শুক্রবার (১ আগস্ট) দুপুরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও সালাহউদ্দিন আহমেদ হাটহাজারী মাদরাসায় যান। এ সময় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিনও তাদের সঙ্গে ছিলেন।
কবর জিয়ারত ও মতবিনিময় শেষে হাটহাজারী মাদরাসায় যাবার প্রসঙ্গে নজরুল ইসলাম বলেন, চব্বিশের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যারা যুক্ত ছিলেন, আমরা তাদের সবার প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে যে মর্মান্তিক ঘটনা, যে হত্যাযজ্ঞ, তার শিকার যারা, হেফাজতে ইসলাম, তার মূল নেতৃত্ব এখানেই। যারা মূল নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, মওলানা আহমদ শফী সাহেব এবং মওলানা জুনায়েদ বাবুনগরী সাহেব, তাদের কবর জিয়ারত করে আত্মার মাগফেরাত কামনা করেছি। এখন যারা দায়িত্বশীল আছেন এই মাদরাসার, তাদের সঙ্গে আমাদের সাক্ষাৎ হয়েছে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে তাদের যে অবদান সেটা আমরা স্বীকার করি।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপির নেতৃত্বে ১৬ বছর ধরে চলা আন্দোলনে সবচেয়ে বেশি শহীদ হয়েছেন, সবচেয়ে বেশি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, মামলা ও হামলার শিকার হয়েছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। তবুও সবাইকে সঙ্গে নিয়ে আমরা লড়াই চালিয়ে গেছি।এই দাবিকে সামনে রেখে আলোচনা চলছে। গঠিত হয়েছে একটি ঐক্যবদ্ধ সংস্কার কমিশন। বিএনপির পক্ষ থেকে সেখানে সালাউদ্দিন আহমেদসহ কয়েকজন প্রতিনিধি কাজ করছেন। ‘জুলাই সনদ’-এর খসড়ায় দলের পক্ষ থেকে মতামতও দেওয়া হয়েছে। আশা করি, এটি শিগগিরই প্রকাশিত হবে।’
নজরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘আমরা ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হওয়ার পথে কোনো বাধা দেখছি না। নির্বাচন না-ও হতে পারে, এমন দুশ্চিন্তার তো কোনো কারণ নেই। আমরা অপেক্ষা করছি, সরকার এ ব্যাপারে শিগগিরই তাদের সুস্পষ্ট বক্তব্য নিয়ে আসবে এবং নির্বাচন কমিশনকে সে অনুযায়ী পরামর্শ দেবে।’
সালাহউদ্দিন আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো সুস্পষ্ট ঘোষণা পাইনি। পেলে তারপর আমরা মতামত জানাবো।’
জুলাই সনদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘জুলাই জাতীয় সনদের খসড়া জাতীয় ঐকমত্য কমিশন থেকে সব রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠানো হয়েছিল। জুলাই সনদের যেসব সুপারিশ ঐকমত্যের ভিত্তিতে সবাই গ্রহণ করেছে, সেগুলো উল্লেখ করে সনদ চূড়ান্ত হবে। এ সনদে যেসব সুপারিশ থাকবে সেগুলো দুই বছরের মধ্যে বাস্তবায়ন করবেন বলে সব রাজনৈতিক দল প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ঐকমত্য কমিশন এ ব্যাপারে অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতি চেয়েছিল। আমরা সেটা করেছি। এটা বাস্তবায়নের জন্য সংবিধান, আইন ও বিধিবিধানের যেসব সংশোধনী প্রয়োজন হবে, সেগুলো আমরা করবো বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি।’
সালাহউদ্দিন আহমেদ জানান, ঐকমত্য কমিশনের সংস্কারের ৮২৬টি প্রস্তাবের মধ্যে ৫১টি বাদে বাকি সবগুলোতে বিএনপি একমত হয়েছে। ১১৫টি প্রস্তাবে ভিন্নমত দিয়েছে।
এর আগে, গত ২০ জুলাই চট্টগ্রামে জুলাই পদযাত্রা কর্মসূচিতে এসে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম হাটহাজারী মাদরাসায় যান।
চাটগাঁ নিউজ/এসএ