সজীব ওয়াজেদ জয়কে সভাপতি করে দল পুনর্গঠনের পথে আ.লীগ

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগের পরবর্তী সভাপতি হতে যাচ্ছেন সজীব ওয়াজেদ জয়। গোপন বৈঠকে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন শেখ হাসিনা।

আগে থেকেই আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় অংশের সংস্কার পন্থীদের অপছন্দের তালিকায় ছিলেন হাসিনা পুত্র জয়। দেশের রাজনীতিতে তার যোগাযোগের ঘনিষ্ঠতা নেই। এমনকি তাকে নিয়ে, বিগত সরকারের সময়ের নানা অভিযোগে এখনো বিতর্ক চলছে। এছাড়া শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নেয়ার সঙ্গে সঙ্গে দল ত্যাগ করার ঘোষণা দিয়েছিলেন জয়। এরকম আচরণকে ‘স্বার্থপর’ উল্লেখ করে সমালোচনা চলে দলটির ভেতরেই। এমন অবস্থায় ৪৪ বছর ধরে দলটির নেতৃত্ব দেওয়া হাসিনা এবার হাল তুলে দিচ্ছেন নিজের পুত্রের হাতে।

ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষিত এই দলটি এখন নেতৃত্ব সংকটে ভুগছে। পাশাপাশি জুলাই গণহত্যায় সংশ্লিষ্টতা নিয়েও আন্তর্জাতিক চাপের মুখে রয়েছে দলটি। একের পর এক হাজির হচ্ছে শেখ হাসিনার কল রেকর্ডের প্রমাণনাদি। আর কয়েক মাসের মধ্যে তার চূড়ান্ত শাস্তি হতে পারে বলেও আশঙ্কা করছে দলটি।

দলীয় একাধিক সূত্র জানায়, ২৫ জুলাই ভারতে অবস্থানরত আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা ও পরিবারের ঘনিষ্ঠ কয়েকজনকে নিয়ে একটি বিশেষ বৈঠক হয়। সেই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, দলটির আগামী সভাপতি হবেন সজীব ওয়াজেদ জয়। এর আগে বিভিন্ন সময়ে ভার্চুয়াল বৈঠকের মাধ্যমে জেলা আওয়ামী লীগ ও কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে পরামর্শ করেন শেখ হাসিনা। সবকিছু বিবেচনায় রেখেই জয়কেই দলের দায়িত্ব দেওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

দলের একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, নিষিদ্ধ ঘোষিত এই সংগঠনের নতুন সাধারণ সম্পাদক হিসেবে একজন দক্ষ ও তরুণ নেতাকে খোঁজা হচ্ছে, যিনি ভবিষ্যতের রাজনৈতিক বাস্তবতায় দলের জন্য কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবেন। এই পরিবর্তনের প্রস্তুতি হিসেবে দুই প্রভাবশালী নেতাকে দলের জন্য একটি রাজনৈতিক তহবিল গঠনের দায়িত্বও দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বলা হয়, নতুন নেতৃত্বে পুরনো ও পরীক্ষিত নেতারাও থাকবেন, তবে বেশ কিছু নতুন মুখ যুক্ত হবেন কেন্দ্রীয় কমিটিতে।

২০২৪ এর ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার গণ অভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতা হারায় আওয়ামী লীগ। এর পর পরই ভারতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা, আত্মগোপনে চলে যায় দলটির মন্ত্রী এমপিরা। একই সময়ে অনেককেই গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে দলটির রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে তাদের বিচার এখন চলমান।

এতে মূলত দলটির সাংগঠনিক কাঠামো ভেঙে পড়ে এবং কার্যক্রম পরিচালনায় তারা কাঠামোগত বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়। এর মধ্যে জুলাই গণহত্যার ঘটনায় দলটির বহু নেতা ও ইউনিটের নাম আন্তর্জাতিক মহলে উঠে আসে, যা আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তিকে আরও সংকটে ফেলেছে। এই প্রেক্ষাপটে নতুন নেতৃত্বের মাধ্যমে দলকে পুনর্গঠনের চেষ্টা করছে শেখ পরিবার।

তবে এবারও নেতৃত্ব শেখ পরিবারের প্রধান ব্যক্তির হাতেই থাকলো। এমন নেতৃত্ব কতটুকু মানবে আওয়ামী লীগ? এই প্রশ্ন এখন উঠেছে। দলটির সিনিয়র নেতারা মনে করছেন জয় অনভিজ্ঞ এবং নানা কর্মকাণ্ডে সমালোচিত। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে তার বাড়ি কেনার বিষয়টি উঠে আসে। যা দুদক জব্দ করার নির্দেশ দেয়। এ ঘটনায়ও অস্ত্রের হুমকি দিয়ে স্ট্যাটাস দেন জয়।

সূত্র: বাংলাদেশ টাইমস

চাটগাঁ নিউজ/এমকেএন/জেএইচ

Scroll to Top