সরকারি জমিতে ‘শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম’, গুঁড়িয়ে দিল প্রশাসন

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : নগরীর উত্তর কাট্টলীতে সাগর উপকূলে সাবেক চট্টগ্রাম সিটি মেয়র এম মনজুর আলমের নির্মাণ করা ‘শেখ রাসেল  মিনি স্টেডিয়াম’ গুঁড়িয়ে দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) প্রায় ৪০ একর জমি দখল করে সাবেক মেয়র, আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্যসহ প্রভাবশালীরা ওই স্টেডিয়াম ও বিভিন্ন বাণিজ্যিক স্থাপনা গড়ে তুলেছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

অভিযানের নেতৃত্ব দেওয়া চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের কাট্টলী সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) হুছাইন মুহাম্মদ জানান, নগরীর উত্তর হালিশহর থেকে উত্তর কাট্টলীর বাংলাবাজার পর্যন্ত সাগর উপকূলের অংশ দখলমুক্ত করতে টানা আরও দুইদিন অভিযান চালানো হবে।

জেলা প্রশাসন সূত্রে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক প্রভাব খাটিয়ে নগরীর টোল রোডসংলগ্ন সাগর উপকূলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রায় ৩২০ কোটি টাকা মূল্যের ৪০ একর জমি দীর্ঘদিন ধরে দখলে রেখেছেন একাধিক ব্যক্তি। ‘দখলবাজি’ আড়াল করতে গত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও মোস্তফা হাকিম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম মনজুর আলমের উদ্যোগে হোসনে আরা মনজুর ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের অর্থায়নে গড়ে তোলা হয়েছিল। স্টেডিয়ামটির দৈর্ঘ্য ছিল ৩৩০ ফুট ও প্রস্থ ২০০ ফুট। ২০২২ সালের ১৯ অক্টোবর শেখ রাসেলের জন্মদিনে স্টেডিয়ামটি উদ্বোধন করা হয়।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শওকত ইবনে সাহীদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘মিনি স্টেডিয়ামের পুরোটাই সরকারি খাসজমির ওপর নির্মাণ করা হয়েছিল। স্টেডিয়ামের সঙ্গে মোস্তফা হাকিম গ্রুপ একটি কাভার্ডভ্যান ও স্কেভেটর ইয়ার্ড বানিয়েছিল। স্টেডিয়ামের অপর পাশে প্রায় পৌনে তিন একর জায়গা ভরাট করে তারা চীনের একটি প্রতিষ্ঠানকে ভাড়া দিয়েছিল। এর সবগুলোই সরকারি খাসজমিতে করা হয়েছিল। অভিযানে আমরা সবগুলো স্থাপনা পুরোপুরি গুঁড়িয়ে দিয়েছি।’

জানা গেছে, সাবেক সিটি মেয়র মনজুরের ভাতিজা চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড, উত্তর কাট্টলী) থেকে নির্বাচিত দুইবারের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য দিদারুল আলম তার রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে মিনি স্টেডিয়ামটি গড়ে তুলেছিলেন। পাশাপাশি প্রায় সাত একর সরকারি খাসজমিতে নির্মাণ করেন বিভিন্ন বাণিজ্যিক স্থাপনা।

এ বিষয়ে পাউবো কর্মকর্তা শওকত ইবনে সাহীদ বলেন, ‘আমাদের টার্গেট মোট ৪০ একর জমি দখলমুক্ত করা। প্রথমদিনে আমরা ১২ একরের মতো করেছি। ১৫ জুলাই পর্যন্ত অভিযান চলবে। অবৈধ সব স্থাপনা উচ্ছেদের পর দখলমুক্ত জমিতে পিলার দিয়ে সীমানা নির্ধারণ করে দেওয়া হবে। এরপর সেখানে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে পরিকল্পিত বনায়ন করা হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘পাউবো’র সেই ৪০ একর জমি উদ্ধারে রোববার (১৩ জুলাই) থেকে অভিযান শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। নগরীর উত্তর কাট্টলীতে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত প্রথমদিনের অভিযানে প্রায় ১২ একর জমি দখলমুক্ত করা হয়েছে।

অভিযানে আরও ছিলেন নগরীর পতেঙ্গা সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফারিস্তা করিম, জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার মো. মঈনুল হাসান এবং পাউবো’র চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী শওকত ইবনে সাহীদ।

চাটগাঁ নিউজ/এসএ

 

Scroll to Top