চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: শুক্রবার (১১ জুলাই) বিকেলে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ঢাকা-কাঠমান্ডু ফ্লাইটে বোমা রয়েছে, অচেনা নম্বর থেকে ফোন করে এমনটাই জানানো হয়। বোমা থাকার আশঙ্কায় ফ্লাইটটিতে ৩ ঘণ্টা তল্লাশি চালানো হলেও শেষ পর্যন্ত কোনো বোমা পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। রবিবার (১২ জুলাই) সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) একেএম শহিদুর রহমান জানায়, ঘটনাটির সঙ্গে পারিবারিক বিষয় জড়িত। ছেলে যেন পরকীয়া প্রেমিকাকে নিয়ে কাঠমান্ডুতে যেতে না পারে, সেজন্য মা ফোন দিয়ে এ তথ্য জানান।
ডিজি একেএম শহিদুর রহমান বলেন, “গতকাল ঢাকা থেকে কাঠমান্ডুগামী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে বোমা রয়েছে এমন একটি ফোন কল করে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলকে জানানো হয়। যার ফলে যাত্রা স্থগিত করা হয় এবং তিন থেকে চার ঘণ্টা তল্লাশি করেও কিছু পাওয়া যায়নি। এই ঘটনায় বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ভাবমূর্তি দেশে ও আন্তর্জাতিকভাবে ক্ষুণ্ণ হয়েছে। এর আগেও এমন কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। টেলিফোনের মাধ্যমে বোমার খবর দেওয়া হয়, পরবর্তীতে তল্লাশি করে কিছু পাওয়া যায়নি।”
তিনি আরো বলেন, “এ ঘটনার পরপরই আমরা অনুসন্ধানে নামি। সারা রাত অভিযান পরিচালনা করে আমরা তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছি। এক্ষেত্রে সেনাবাহিনী ও অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা আমাদের সহযোগিতা করেছে। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। ঘটনার তদন্তে জানা যায়, ইমন নামে এক ব্যক্তি পরকীয়া প্রেমিকার সঙ্গে এই ফ্লাইটে করে নেপাল যাচ্ছিলেন। বিষয়টি ইমনের মা ও তার স্ত্রী জানতে পেরে তার যাত্রা বন্ধ করার চেষ্টা করেন। কোনো ভাবেই সফল না হয়ে ইমনেরই আরেক বন্ধু ইমরান তাদের পরামর্শ দেয় যে, এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলে ফোন করে যদি জানানো হয় বিমানে বোমা আছে তাহলে যাত্রাটা স্থগিত হয়ে যেতে পারে। সে অনুযায়ী ইমনের মা এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলে ফোন করে বিমানে বোমা থাকার তথ্য জানান।
ডিজি বলেন, “এই বিষয়ে আমরা দেশবাসীকে জানাতে চাই, এটি একটি গর্হিত কাজ। এসব কাজে দেশের এবং আমাদের জাতীয় এয়ারলাইন্সের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়। কোনোভাবেই যেন এ ধরনের কাজ ভবিষ্যতে না করা হয়। তবুও কেউ এমন কাজ করলে কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।”
বার (১১ জুলাই) বিকেলে বিজি-৩৭৩ ফ্লাইটটি ঢাকা থেকে কাঠমান্ডুর উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। তখন অচেনা নম্বর থেকে ফোনকলে বিমানে বোমা থাকার তথ্য পাওয়ায় বিমানটি তখনই ১৪২ যাত্রী ও ৭ জন ক্রু নিয়ে ট্যাক্সি করে। বিমান বাহিনীর টাস্ক ফোর্স ও এভসেক দ্রুত বিমানের চারপাশে নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলে এবং বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল ও এপিবিএনের ডগ স্কোয়াড ঘটনাস্থলে আসে। পরবর্তীতে র্যাবের বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দলের যৌথ কার্যক্রমে উড়োজাহাজের অভ্যন্তর ও লাগেজ পরীক্ষা করে। সকল যাত্রীদের নিরাপদে উড়োজাহাজ থেকে নামিয়ে স্ক্রিনিং শেষে ফের লাউঞ্জে পাঠানো হয়েছিল।
দীর্ঘ তিন ঘন্টা তল্লাশির পর রাত ৭টা ৫৮ মিনিটে এটি শেষ হয় তবে বিমানে কোনো ধরনের বিস্ফোরক বা সন্দেহজনক বস্তু পাওয়া যায়নি।
চাটগাঁ নিউজ/এমকেএন