স্ত্রীকে ১১ টুকরো করা স্বামী গ্রেপ্তার, নেপথ্যে যা জানা গেল

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানার রৌফাবাদ এলাকায় স্ত্রীকে হত্যার পর লাশ নৃশংসভাবে ১১ টুকরো করা সেই পলাতক স্বামীকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। ঘাতক সে স্বামীর নাম মো. সুমন (৩৫)। মূলত স্ত্রীকে পরকীয়া সন্দেহে এমন হত্যাকাণ্ড ঘটায় বলে জানিয়েছে র‍্যাব।

সুমন কুমিল্লা জেলার সদর দক্ষিণ সুয়াগাজী এলাকার মো.সুন্দর আলীর ছেলে বলে। তার আট বছর বয়সী একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।

র‌্যাব-৭ জানায়, গত ৯ জুলাই রৌফাবাদ পাহাড়িকা হাউজিং সোসাইটির একটি ফ্ল্যাটে ধারালো অস্ত্র দিয়ে নৃশংসভাবে কুপিয়ে নিজ স্ত্রীকে হত্যা করে লাশ ১১ টুকরো করে ঘরের বিভিন্ন স্থানে ফেলে রেখে গুম করার চেষ্টা করে ঘাতক স্বামী।

পরবর্তীতে সিকিউরিটি গার্ড মশিউর রহমান ফ্ল্যাট বাসা থেকে দুর্গন্ধ ও অস্বাভাবিক নড়াচড়া এবং পানির ফ্ল্যাশের শব্দ শুনে ১০ম তলায় ঘাতক সুমনের ভাড়াকৃত ফ্ল্যাটে গিয়ে ডাকাডাকি করলে প্রায় ৩০ মিনিট পর সুমন বাসার দরজা খুলে।

বাসায় অস্বাভাবিক নড়াচড়া ও পানির শব্দের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে সুমন এলোমেলো কথাবার্তা বলে ও সিকিউরিটি গার্ডকে বাসায় প্রবেশ করতে বাধা দেয়।

পরে জোরপূর্বক বাসায় ঢুকে রুমের বিভিন্ন স্থানে রক্তের দাগ, বাথরুমের ভিতরে রক্তমাখা কাপড় এবং কমোডে মাংস দেখতে পেয়ে বাসা বাহির থেকে তালাবদ্ধ করে দেয়। এসময় ঘাতক সুমন বাসার গ্রীল ভেঙ্গে পালিয়ে যায়।

পরবর্তীতে সিকিউরিটি গার্ড মশিউর এবং স্থানীয় লোকজন বায়েজিদ থানা পুলিশকে সংবাদ দিলে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহত ফাতেমা বেগমের (৩২) ক্ষত-বিক্ষত শরীরের অংশবিশেষ এবং রুমের খাটের নিচ হতে পায়ের অংশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় ফাতেমার বড় ভাই মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন রুবেল বাদী হয়ে বায়েজিদ বোস্তামী থানায় মামলা করেন।

র‌্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক এ আর এম মোজাফ্ফর হোসেন জানান— ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার বিজয়নগর থানার ফুলবাড়িয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামী মো. সুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ১০ বছর পূর্বে তাদের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। এরপর সুমন কর্মসংস্থানের জন্য সৌদি আরব যায় ও ভিসা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে ২০২৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে দেশে ফিরে এসে চট্টগ্রাম মহানগরে নিজের ক্রয়কৃত একটি পিকআপ চালাতে শুরু করে।

তিনি আরও জানান, দেশে ফিরে আসার পর থেকে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায় সময় ঝগড়া লেগে থাকতো। এ নিয়ে একাধিকবার উভয় পরিবারের মধ্যে আপোষ মিমাংসা করা হয়। গত ৯ জুলাই রাতে অজ্ঞাতনামা ৬ থেকে ৭ জন যুবক তার বাসায় আসাকে কেন্দ্র করে আবারও বাগবিতণ্ডায় জড়ায় তারা। এক পর্যায়ে সুমন বাসায় থাকা দুটি ধারালো চাকু দিয়ে স্ত্রীর শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে এবং মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরবর্তীতে লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে ১১ টুকরো করে।

চাটগাঁ নিউজ/জেএইচ

Scroll to Top