চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: চরমপন্থি উগ্র মতবাদ এবং সন্ত্রাসবাদী আদর্শের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে আটক ৩৫ বাংলাদেশিকে নিয়ে নতুন তথ্য দিয়েছেন আল-জাজিরার অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের।
শনিবার (০৫ জুলাই) বিকেলে, নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে বেশ কিছু তথ্য শেয়ার করেন। যেখানে তিনি আটকদের একটি তালিকাও প্রকাশ করেছেন।
পোস্টে তিনি লেখেন— মালয়েশিয়া পুলিশ কর্তৃক ‘চরমপন্থি উগ্র মতবাদ’ এবং ‘সন্ত্রাসবাদী আদর্শ’-এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ৩৬ জনকে আটক করার কথা গত ২৭ জুন একটি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রকাশ করে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুতিওন ইসমাইল।
বিস্তারিত অনুসন্ধানে জানা যায়, আটক ব্যক্তিদের মধ্যে ৩৫ বাংলাদেশি নাগরিক এবং একজন ইন্দোনেশিয়ার নাগরিক ছিলেন এবং এ বছরেরই এপ্রিল-মে-জুন তিন মাস ধরে পৃথক বিভিন্ন অভিযানে এদের আটক করা হয়। আনুষ্ঠানিকভাবে পুরো বিষয়টি প্রকাশ করা হয় গত ২৭ জুন।
তিনি লেখেন, মালয়েশিয়ার স্পেশাল ব্রাঞ্চের কাউন্টার টেররিজম ডিভিশন যেসব বাংলাদেশিকে আটক করেছে, তাদের অভিবাসন সংক্রান্ত কাগজপত্র যাচাই করে নিশ্চিত করা হয় যে, আটক ৩৫ জনের মধ্যে ১৪ জন (সংযুক্ত তালিকায় ৬-১৯ নং) বাংলাদেশি নাগরিক, মালয়েশিয়াতে অবৈধভাবে বসবাস করছিলেন।
তিনি আরও লেখেন, তাদের কাছে দেশটিতে থাকার কোনো বৈধ কাগজপত্র না পাওয়ার কারণে এই ১৪ জনকে ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয় বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর জন্য এবং ইতোমধ্যে তালিকায় ৬ নম্বরে থাকা জাহেদ আহমেদ এবং ১০, ১১, ১৩, ১৫, ১৮ (ইমন মহিদউজ্জামান, আকরাম মো. ওয়াসিম, নজরুল ইসলাম, শেখ সালাম, মো. রেদওয়ানুল ইসলাম) কে বাংলাদেশে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং বাংলাদেশের নিরাপত্তা সংস্থা এদের সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে। তালিকায় ৬-১৯ নম্বর পর্যন্ত থাকা বাকি ৮ জনকে আগামী ৭ আগস্ট বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে।
সংযুক্ত তালিকার ১-৫ নম্বরে থাকা ব্যক্তিদের দেশটিতে প্রচলিত প্রিভেনশন অব টেররিজম অ্যাক্টের আওতায় আটক করে চার্জ গঠন করা হয়েছে এবং সিরিয়াল ২০-৩৫ নম্বরের বাংলাদেশি নাগরিকদের একই অ্যাক্টের আওতায় আটক দেখিয়ে বিশদ তদন্ত চলছে।
সায়ের লেখেন— এক সংবাদ সম্মেলনে মালয়েশিয়ার পুলিশ প্রধান বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে শ্রমিকদের মধ্যে ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিগোষ্ঠীর মতাদর্শ প্রচার এবং তহবিল সংগ্রহ করে, বাংলাদেশি শ্রমিকদের এমন একটি চক্র ভেঙে দিয়েছে মালয়েশীয় কর্তৃপক্ষ। এই চক্র আন্তর্জাতিক মানি ট্রান্সফার সার্ভিস ও ই-ওয়ালেট ব্যবহার করে সিরিয়া ও বাংলাদেশে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ‘আইএসের জন্য’ অর্থ পাঠাত। মালয়েশিয়া পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের কাউন্টার টেরোরিজম ডিভিশন তাদের অর্থ সংগ্রহের প্রমাণ পেয়েছে। তারা ঠিক কত অর্থ সংগ্রহ করেছে তা এখনো তদন্তাধীন। আমাদের ধারণা, সদস্য ফি এবং চাঁদা থেকেই এ অর্থ এসেছে বলে তিনি জানান।
পুলিশের বরাত দিয়ে মালয়েশিয়া স্টার পত্রিকা লিখেছে, ‘গেরাকান মিলিটান রেডিক্যাল বাংলাদেশ’ বা ‘জিএমআরবি’ নামে পরিচিত এই চক্র হোয়াটসঅ্যাপ ও টেলিগ্রামের মতো অ্যাপে সদস্য সংগ্রহ এবং উগ্র মতবাদের প্রচার করে আসছিল।
চাটগাঁ নিউজ/জেএইচ