সীতাকুণ্ডের সেই কোহিনুর শিপইয়ার্ডে দ্বিতীয় দফা অভিযান

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের উত্তর সলিমপুর সাগর উপকূলে গড়ে উঠা কোহিনুর শিপব্রেকিং ইয়ার্ড দ্বিতীয় দফায় উচ্ছেদ অভিযান করা হয়েছে। উচ্ছেদ করা জায়গায় রোপন করা হচ্ছে গাছ।

আজ বুধবার (২ জুলাই) সকাল থেকে শুরু হওয়া উদ্ধার অভিযান চলছে বিকেল পর্যন্ত। তিনটি স্কেভেটর দিয়ে ভাঙা হয়েছে। এরইমধ্যে একটি বহুতল ও দুইটি একতলা ভবন। এই ভবনগুলো গত ২৫ জুন প্রথম দফায় আংশিক ভাঙা হয়েছিলো। অভিযানে সেনাবাহিনী, পুলিশ র‍্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

অভিযানের নেতৃত্বে  ছিলেন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মাহমুদ হাসান।

জানা গেছে, উচ্ছেদ অভিযানে গড়ে উঠা শিপইয়ার্ডের লিজ নিয়ে দীর্ঘদিন প্রশাসন ও মালিক পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিলো। জেলা প্রশাসন এ জায়গা উত্তর ছলিমপুর মৌজার হিসাবে কোহিনুর স্টীল শিপইয়ার্ড নামে লিজ নিয়ে স্থাপনা করেছিলেন আবুল কাসেম নামের এক ব্যক্তি। তিনি ‘রাজা কাসেম’ নামে পরিচিত।

২০২২ সালে লিজ প্রাপ্তির পর ইয়ার্ড মালিক গ্রীন শিপইয়ার্ড গড়ে তুলতে বহুতল ভবন সহ বিভিন্ন স্থাপনা গড়ে তুলেন। জায়গাটিতে জাহাজভাঙা কারখানা স্থাপনের জন্য দুবার ইজারার অনুমতি দিয়েছিল। আপত্তির পর আবার ইজারা বাতিল করা হয়। ইয়ার্ড মালিক উচ্চ আদালতে আপিল করেন। বর্তমানে মামলাগুলো চলমান আছে বলে জানান ইয়ার্ড মালিক।

উচ্ছেদ অভিযানে থাকা সীতাকুণ্ডের সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ্ আল মামুন বলেন, ইয়ার্ডটি তুলাতলী মৌজায় গড়ে উঠেছে। তুলাতলী মৌজা জাহাজ ভাঙা শিল্পে সংযুক্ত নেই। তাই এ মৌজায় গড়ে ওঠা ইয়ার্ড সম্পূর্ণ অবৈধ। ফলে অবৈধ স্থাপনা ভাঙা হচ্ছে।

উচ্ছেদের পাশাপাশি সীতাকুণ্ডের সলিমপুর এলাকার তুলাতলী মৌজার জায়গাটিতে আজ বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে বৃক্ষরোপণ শুরু করেছে বন বিভাগ। এ জন্য বিভিন্ন প্রজাতির দুই হাজার গাছ নিয়ে যাওয়া হয়েছে ওই জায়গায়। প্রথম দফায় সেখানে দুই হাজার বিভিন্ন গাছের চারা রোপণ করা হবে। সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফখরুল ইসলাম বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। তিনি বলেন, ‘উদ্ধার করা জায়গায় বৃক্ষরোপণ শুরু করা হয়েছে। এ জন্য চারা এনেছে বন বিভাগ।’

‎কোহিনুর স্টীল শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড এর মালিক এম. এ. কাশেম রাজা বলেন, ২০২২ সালে সরকারি নীতিমালার আলোকে জায়গাটি লিজ নেয়া হয়। ইজারা শর্তে গ্রিন শিপইয়ার্ড করা বাধ্যতামূলক উল্লেখ করা হয়। তাই গ্রিন শিপ ইয়ার্ড নির্মাণ কাজ শুরু করি। তৈরি করেন গ্রীন শিপ ইয়ার্ডের নীতিমালার আলোকে বর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন অত্যাবশ্যকীয় স্থাপনা। এ অবকাঠামোগুলো তৈরির জন্য সংশ্লিষ্ট সকল সরকারি দপ্তরের অনুমোদন নেন। এতে তার বিপুল পরিমান ব্যয় হয়।

বর্তমানে যে ভবনটি ভাঙ্গা হচ্ছে তা সেটি প্রশাসনের পক্ষ থেকে তুলাতলী মৌজায় দাবি করা হলেও আসলে সেটি উত্তর সলিমপুর মৌজায় অবস্থিত। পূর্বের সরকারি দায়িত্বরত বিভিন্ন ঊর্ধতন কর্মকর্তার সার্ভে রিপোর্ট তার কাছে রয়েছে বলে দাবি করেন।

চাটগাঁ নিউজ/জেএইচ

Scroll to Top