আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্রে হামলা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এ ঘটনার পর বিশ্বজুড়ে তীব্র নিন্দার ঝড় বইছে। মুসলিম বিশ্বের পাশাপাশি অন্যতম আলোড়িত হয়েছে রাশিয়া।
দেশটির দার্শনিক থেকে শুরু করে রাজনীতিবিদ হামলার পূর্বাপর বিশ্লেষণে ব্যস্ত। তাদের দৃষ্টভঙ্গিতে উঠে এসেছে রাশিয়ার ভবিষ্যত অনিশ্চয়তাও।
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন হামলার পর মস্কোতে ভূ-রাজনৈতিক উদ্বেগ থেকে শুরু করে তিক্ত বিদ্রূপের প্রতিক্রিয়া সংগ্রহ করেছে সংবাদমাধ্যম ‘আরটি’। সেসব প্রতিক্রিয়ায় একটি বাক্য প্রতিধ্বনিত হয়েছে। তা হলো- যদি ইরান টিকে না থাকে, তাহলে রাশিয়াও নিরাপদ নয়।
প্রভাবশালী রুশ রাজনৈতিক দার্শনিক এবং ভূ-রাজনৈতিক বিশ্লেষক আলেকজান্ডার ডুগিন বলেন, কেউ কেউ এখনও এই ভ্রমের মধ্যে আছেন যে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ কোনোভাবে আমাদের পাশ কাটিয়ে যাবে। তা হবে না। আমরা ইতিমধ্যেই এর গভীরে রয়েছি। যুক্তরাষ্ট্র আমাদের মিত্র ইরানের বিরুদ্ধে বোমা হামলা চালিয়েছে। কিছুই তাদের থামায়নি। যদি কিছুই তাদের ইরানে বোমা হামলা থেকে না থামায়, তবে পরবর্তীতে আমাদের লক্ষ্যবস্তু করা থেকেও কিছুই তাদের থামাবে না। কোনো এক সময় তারা সিদ্ধান্ত নিতে পারে যে রাশিয়া ইরানের মতো পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী হওয়া উচিত নয় – অথবা হামলার জন্য অন্য কোনো অজুহাত খুঁজে পেতে পারে। কোনো ভুল করবেন না। আমরা যুদ্ধে রয়েছি।
রাশিয়া ইন গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্সের সম্পাদক ফিয়োদর লুকিয়ানভের মতে, আমেরিকার সঙ্গে সরাসরি সংঘর্ষে গেলে তা একটি দীর্ঘ যুদ্ধের দিকে গড়াতে পারে। তাই ইরান সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রকে লক্ষ্য না করেই ইসরায়েলের ওপর হামলা বাড়াতে পারে। ইসরায়েলও চাইবে ইরানে যেন শাসন পরিবর্তন নিশ্চিত হয়। এ নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে দ্বন্দ্ব বাড়বে।
ফেডারেশন কাউন্সিলের ভাইস স্পিকার কনস্টান্টিন কোসাচেভ বলেন, সুস্পষ্ট কথাটি বলি- ইরাক, লিবিয়া এবং এখন ইরান। এদের ওপর বোমা হামলা চালানো হয়েছে কারণ তারা পাল্টা আঘাত করতে পারেনি। হয় তাদের কাছে গণবিধ্বংসী অস্ত্র ছিল না, অথবা তারা এখনও তা তৈরি করেনি। কিছু ক্ষেত্রে, তারা কখনোই এর ইচ্ছাও করেনি। এদিকে, পশ্চিমা বিশ্ব সেই চারটি দেশকে স্পর্শ করছে না যারা নন-প্রলিফারেশন চুক্তির বাইরে রয়েছে। ভারত, পাকিস্তান, উত্তর কোরিয়া এবং ইসরায়েল আক্রান্ত হচ্ছে না। কেন? কারণ ইরাক, লিবিয়া এবং ইরানের বিপরীতে এই রাষ্ট্রগুলোর কাছে প্রকৃতপক্ষে পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। কিন্তু যদি হামলা করে বসে তবে রাশিয়াও কী নিরাপদ থাকবে?
চাটগাঁ নিউজ/জেএইচ