চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: আগামী ৩ মে ঢাকায় মহাসমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ।শাপলা চত্বরে গণহত্যা, পিলখানা হত্যাকাণ্ড, গুম-খুন, মোদীবিরোধী আন্দোলন ও ছাত্রজনতার ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনসহ আওয়ামী লীগের আমলে দায়ের করা সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে এই মহাসমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
এছাড়াও আগামী জুন মাসে সারাদেশের সকল জেলা ও মহানগরের প্রতিনিধিদের নিয়ে জাতীয় কনভেনশন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
শুক্রবার (২৮ মার্চ) হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় খাস কমিটির এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিকেল ৩টায় জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা মিলনায়তনে সংগঠনের মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমানের সভাপতিত্বে এ বিষয়ে জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে উপস্থিত ছিলেন— কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির মাওলানা মাহফুজুল হক, ড. আহমদ আবদুল কাদের, মাওলানা আহমাদ আলী কাসেমী, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জুনাইদ আল হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মাদ মামুনুল হক, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, অর্থ সম্পাদক মাওলানা মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী, প্রচার সম্পাদক মুফতি কেফায়েতুল্লাহ আজহারী প্রমূখ।
সভায় গৃহীত প্রস্তাবে বলা হয়, জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনের প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগকে রাষ্ট্রীয়ভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে। ফ্যাসিস্ট হাসিনা ও তার দল এদেশে ষোলটি বছর মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে। বাংলাদেশের মাটিতে অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে গিয়ে আওয়ামী লীগ দল হিসেবেই সন্ত্রাস ও মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত ছিল। দেশে ঘুম, খুন, সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল।
২০০৯ সালের সন্ত্রাস দমন আইনে প্রশাসনিক আদেশের মাধ্যমে এবং ১৯৭৮ সালের ‘দ্য পলিটিক্যাল পার্টিস অর্ডিন্যান্স’, অনুযায়ী সরকার চাইলে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে পারবে। এই দাবি আদায়ে দেশের স্বার্থেই সব মত-পথ ও ঘরানার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধ লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।
হেফাজত নেতারা ইসলাম দেশ ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সকল ইসলামী দল ও ওলামায়ে কেরামের ঐক্যর ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ‘বাংলাদেশের সাধারণ মুসলমানরা একটি বিভীষিকাময় পরিস্থিতিতে বাস করছে। সমাজে, রাষ্ট্রে, সব জায়গায় ইসলাম ও ইসলামপ্রিয় জনগণকে কোণঠাসা করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চলছে। দেশের সাস্কৃতিক অঙ্গনেও বইছে বিজাতীয় সংস্কৃতির আগ্রাসন। ভারত থেকে গাঁজা ফেনসিডিল ও মাদক দ্রব্যের পাশাপাশি অশ্লীলতাও আসছে বন্যার পানির মত। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ অফিস আদালতে বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্টরা জোরেশোরে কাজ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সবকিছু মিলিয়ে দেশের মুসলমানরা এক ভয়ংকর পরিস্থিতির মধ্যে বসবাস করছে। তাই জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে আলেম সমাজ ও ইসলামী শক্তির ঐক্যের বিকল্প নেই।’
হেফাজত নেতারা আরও বলেন, ‘দেশের অধিকাংশ মানুষ গরীব, অভাবের সংসার। কষ্টে দিনযাপন করছে। অভাবীকে খাবার দেওয়া, অসুস্থ মুসলিম ভাইয়ের সেবা করা কিংবা কেউ বিপদে পড়লে তাদেরকে সাহায্য করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। ইসলাম আমাদেরকে এটাই শিক্ষা দিয়েছেন ।
আমাদের আশেপাশে যারা গরীব অসহায় দরিদ্র রয়েছে, যারা চলাফেরা করতে পারেনা কিংবা তাদের কোনো আয়ের উৎস নেই তাদের সামর্থ অনুযায়ী সাহায্য করুন। ৫ মে শাপলা, ২১ সালে শহিদ ও আহত পরিবারকে সাহায্য করুন।’
চাটগাঁ নিউজ/জেএইচ