নিজস্ব প্রতিবেদক : রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থান চট্টগ্রাম গুডস পোর্ট ইয়ার্ড (সিজিপিওয়াই) কর্মকর্তাদের সঠিক নজরদারির অভাবে দিন দিন অনিরাপদ হয়ে পড়ছে। সক্রিয় হয়ে উঠেছে চোর সিন্ডিকেট। যাদের সাথে জড়িত কর্মচারিরাও। তাদের হাত করে চলছে সরকারি মালামাল হরিলুট।
তবে বিভিন্ন অভিযোগের পর এবার চোরচক্রের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে রেলওয়ের নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী আরএনবি। চোরচক্রের তৎপরতা রোধে বাড়ানো হচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনীর কার্যক্রম।
জানা গেছে, নগরীর বন্দর থানাধীন এলাকায় অবস্থিত সিজিপিওয়াইতে বন্দরে আসা রেলের পণ্য রাখা হয়। এখান থেকে চট্টগ্রাম বন্দর ও কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো (আইসিডি) পর্যন্ত কনটেইনার ট্রেন চলাচল করে। এছাড়াও এখান থেকে বিটিও (ট্যাংক ওয়াগন), বিসি ওয়াগন ও বিকেএইচ ওয়াগন দেশের বিভিন্ন স্থানে চলাচল করে। এতে একটি লোকোশেড ও সিপিএ (ট্রানজিট) ইয়ার্ড রয়েছে। গত কয়েক বছরে সিজিপিওয়াই ও এসআরবি স্টেশন এলাকায় রেলের মালামাল চুরি ও অপরাধমূলক কার্যক্রম বেড়েছে আগের চাইতে কয়েক গুণ। আর সরকার পতনের পর অপরাধীরা সবাই যেন বেশ বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। আইন-আদালত, প্রশাসন কাউকে পাত্তা দিচ্ছে না।
এ ব্যাপারে আরএনবি’র সদস্যরা জানান, তাদের কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করতে ওই সকল চোরচক্র বিভিন্ন ধরণের নাটক সাজাচ্ছে। যা আরএনবি’র কার্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে! এছাড়াও তারা লোকবল সংকটকে নিরাপত্তা ত্রুটির মূল কারণ হিসেবে দায়ী করেন।
লোকবল সংকটকে মূল কারণ দেখিয়ে এসআরবি স্টেশনের ইনচার্জ হাবিলদার পঙ্কজ রায় বলেন, আমাদের সদস্যরা নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নিজেরা নিরাপত্তাহীনতার মুখে পড়ছে। আমরা বিভিন্ন অভিযানে অংশ নিয়ে চোরচক্রের অনেক সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছি। তবে আমাদের লোকবল সংকটের কারণে এ পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়ছে।
আরএনবি সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামের সিজিপিওয়াই এলাকায় গেল ১৭ জানুয়ারি চোরচক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করে যৌথবাহিনী। তাদের মধ্যে একজন রেলওয়ের স্থায়ী এবং অপরজন অস্থায়ী কর্মচারী। এ ঘটনার পর গ্রেপ্তারকৃত দুইজনসহ মোট তিনজনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে রেল কর্তৃপক্ষ।
তবে এ বিষয়ে সিজিপিওয়াই চৌকির নায়েক দুলাল জানান, গেল ৫ মার্চ ভোরে সিজিপিওয়াই এলাকায় অবস্থানরত একটি ইঞ্জিন থেকে তিনটি ব্যাটারি চুরি হয়। এ সময় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে একজন এলএম ও একজন এএলএমকে বরখাস্ত করা হয়। তবে কিছু হলেই সবাই বলে আরএনবি সদ্যসরা কোনো কাজ করে না।
আরএনবি সদ্যসদের অভিযোগ, একটি স্বার্থান্বেষী মহল তাদের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার চেষ্টা করছে।
এ ব্যাপারে সিজিপিওয়াই এলাকার সিআই মো. আবু সুফিয়ান বলেন, যদি ইঞ্জিনের দায়িত্বে থাকা কর্মচারীদের অবহেলায় কোন চুরির ঘটনা ঘটে, তবে এই দোষ কার? তিনি বলেন, চুরি ঠেকাতে রেলওয়ের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীকে আরো বেশি দায়িত্বশীল হতে হবে। আমরা আমাদের কর্তব্য পালনে সদা প্রস্তুত এবং অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে বদ্ধপরিকর।
চাটগাঁ নিউজ/এইচএস/এসএ