আবদুল্লাহ আল নোমানের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ নেতাকর্মীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান, সাবেক মন্ত্রী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল্লাহ আল নোমানের মৃত্যুর শোকে স্তব্ধ চট্টগ্রামসহ সারাদেশ। শোকে মূহ্যমান হয়ে পড়েছেন বিএনপির লাখো নেতাকর্মী। ৫ আগস্ট পরবর্তী সুসময়ে এসে এমন একজন বর্ষীয়ান নেতার প্রয়াণ কোনভাবে মেনে নিতে পারছেন না তারা।

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে আবদুল্লাহ আল নোমানের মৃত্যুর খবর শুনে কাজীর দেউড়ির নসিমন ভবনে বিএনপির চট্টগ্রাম মহানগর শাখার দলীয় কার্যালয়ে এসে উপস্থিত হন শত শত নেতাকর্মী। নেতাকর্মীদের হৃদয়ে বেজে চলেছে শুধু প্রিয় নেতার প্রয়াণের করুণ রাগিনী। নেতাকর্মীদেরকে এসময় প্রিয় নেতার কর্মময় রাজনৈতিক জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে স্মৃতিচারণ করতে দেখা যায়।

প্রিয় নেতা আবদুল্লাহ আল নোমানের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র নগর বিএনপির সদস্য ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, আবদুল্লাহ আল নোমান নিজেই একটি প্রতিষ্ঠান। তিনি শুধু রাজনীতিবিদ নন, দেশমাতৃকাকে পাকিস্তানি বাহিনীর কবল থেকে রক্ষা করার জন্য তিনি ১৯৭১ সালে হাতে তুলে নিয়েছিলেন অস্ত্র। তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি একাধারে স্যোসাল এক্টিভিটস, স্যোসাল রিফর্মার। একজন পরিপূর্ণ রাজনীতিবিদ ছিলেন তিনি। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের আজকের এই অবস্থানের পিছনে তাঁর অনেক শ্রম, মেধা ছিল। তাঁর মৃত্যুতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল একটি পিলার হারিয়েছে। আল্লাহতা’লার কাছে দোয়া কামনা করছি, হাজার হাজার নেতাকর্মী সৃষ্টির কারিগর এ প্রিয় নেতার মৃত্যু শোক সহ্য করার শক্তি দান করুন।

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ প্রিয় নেতার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, নোমান ভাই ছিলেন কর্মী সৃষ্টির কারিগর। তার হাত ধরে শত শত নেতাকর্মী রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন। তিনি ছিলেন কিংবদন্তি একজন নেতা। চট্টগ্রামে বিএনপিকে শক্তিশালী করার জন্য তিনি আজীবন আন্দোলন সংগ্রাম করে গেছেন। দলের জন্য উনার অবদান ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। এমন একজন নেতাকে হারিয়ে আজ আমরা অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছি। আগামী শুক্রবার বাদ জুমা জমিয়তুল ফালাহ জামে মসজিদে প্রিয় নেতার জানাযায় অংশগ্রহণের জন্য সবাইকে অনুরোধ জানাচ্ছি।

নগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী বেলাল উদ্দিন বলেন, নোমান ভাই আমাদের রাজনৈতিক শিক্ষক। তার মত দক্ষ,যোগ্য সংগঠক নেই এটা ভাবতেই মন কেমন করছে। তার কাছ থেকে আমরা প্রতিনিয়ত শিখেছি। আন্দোলন সংগ্রামের উত্তাল দিনগুলোতে তিনি ছিলেন আমাদের পথ প্রদর্শক। বেশি মনে পড়বে যে বিষয়টি সেটি হচ্ছে, তিনি ছিলেন রাজপথের লড়াকু নেতা। দলের দুঃসময়ে আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে একপর্যায়ে শারীরিক ভাবেই তিনি ভেঙ্গে পড়েছেন। প্রিয় নেতার শূণ্যতা আমাদের পূরণ হবার নয়।

নগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আহমেদুল আলম চৌধুরী রাসেল প্রিয় নেতার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, আবদুল্লাহ আল নোমানের মত নেতারা বার বার আসেন না। তাঁরা একবারই আসেন। চট্টগ্রামের প্রতি ছিল তাঁর অগাধ ভালবাসা। দলের প্রতি তাঁর কমিটমেন্ট ছিল। অনেকেই রাজনীতি করে, অনেকেই নেতৃত্ব দেন। কিন্তু দলের প্রতি কমিটমেন্ট, নেতাকর্মীদের প্রতি কমিটমেন্ট সবার থাকে না। নোমান ভাইয়ের মৃত্যুতে আমাদের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল।

নগর বিএনপির সদস্য কামরুল ইসলাম বলেন, দলকে ঐক্যবদ্ধ করা, সুসংগঠিত করা, দলকে আন্দোলন সংগ্রামের জন্য তৈরি করা-এসমস্ত গুণাবলীতে বলীয়ান ছিলেন আবদুল্লাহ আল নোমান। তিনি ছিলেন একজন আপাদমস্তক রাজনীতিবিদ। দলের প্রতি,দেশের মানুষের প্রতি তাঁর খুব টান ছিল। প্রিয় নেতাকে হারিয়ে আজ আমরা বাকরুদ্ধ।

চাটগাঁ নিউজ/ইউডি/জেএইচ

Scroll to Top