চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমান বলেছেন, ছেলেরা নতুন দল করছে, করবে। আমি অভিনন্দন জানাই। কিন্তু যদি কিংস পার্টি করে। গাছের টাও খামু, তলার টাও কুড়ামু। সেই দল কিন্তু বাংলাদেশে হবে না। করতে দেওয়া হবে না। আমার সন্তানেরা তোমাদেরকে আমি স্নেহ করি। রাজপথে আসো, ক্ষেতের আইলে আসো, শ্রমিকের বস্তিতে আসো, গরিবের কুঁড়েঘরে আসো, সেইখানে এসে রাজনৈতিক দল কর। তোমাদেরকে আমরা অভিনন্দন জানাই। কিন্তু রাজ সিংহাসনে বসে, রাজ মুকুট মাথায় দিয়ে- হাম কি হনুরে, সেই দল করতে দেওয়া হবে না।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজশাহী নগরীর বাটার মোড়ে চার দফা দাবিতে কেন্দ্রঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজশাহী জেলা বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ফজলুর রহমান বলেন, ৫ আগস্টের আগে এক মাস আন্দোলন হলো। ১৫ বছর সংগ্রাম করলাম আমরা। ক্ষেত বিএনপির, বীজ ফেলল বিএনপি, চারা লাগালো বিএনপি, পানি দিল বিএনপি, ধান হলুদ করল বিএনপি। ধান হলুদ করার পরে এক মাসে ধান কেটে দিল ছাত্র-জনতা। তারা এখন দাবি করে সব ধান নাকি তাদের ঘরে উঠবে। আমাদের কিশোরগঞ্জে যারা ধান কাটে তাদের বলা হয় দাওয়াল। আটটা কাটলে একটা পাবে। কিন্তু তারা এখন সব দাবি করছে।
তিনি বলেন, যে সংগঠনটি আগামী দিনে আপনাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে চায়, সেই সংগঠনের জনসভায় মাত্র দুই থেকে তিনজন লোক বক্তৃতা করেন দুই ঘণ্টা করে। তাদের ওয়াজেকেরামরা সারারাত বক্তৃতা করেন। বক্তৃতা হলো পীর সাহেবের দাওয়াতে চোরের মতো। এতে কলব জারি হয়। আল্লাহকে চেনা যায়। নিজেকে চেনা যায়। বক্তৃতা না শুনলে রাজনীতিও চিনবেন না, নিজেকেও চিনবেন না। শুধু স্লোগান দিয়ে আসবেন টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া, সবাই বলে জিয়া জিয়া। টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া সবাই বলে খালেদা জিয়া। মধ্যে শুধু তারেক ভাই তারেক ভাই। এতে রাজনীতি হবে না। এই দেশের দায়িত্ব যে যতই কিছু বলুক বিএনপি এবং তারেক রহমানকেই নিতে হবে। তাহলে নিজেদের বিল্ডিংয়ের পিলার হিসেবে তৈরি করেন। এটা না হলে বাঁশের ফালা দিয়ে বাংলাদেশ রক্ষা করতে পারবেন না। সেই বাঁশ যতই শক্ত থাকুক।
ফজলুর রহমান বলেন, আপনারা আজ থেকে আট মাস আগে কোথায় ছিলেন। আমি বা এমপি বা মহাসচিব যদি এখানে আসতো এই মিটিংটা করতে পারত? শেখ হাসিনারা এই মিটিংটা করতে দিত? কোথায় ছিলেন সাত মাস আগে, আট মাস আগে? ৫ আগস্টের আগে কোথায় ছিলেন? কেউ ছিলেন জেলখানায়, কেউ ছিলেন কুঁড়েঘরে-বস্তিতে, লুকিয়ে ছিলেন। কেউ ঢাকায় গিয়ে কৃষকের ছেলে রিকশা চালাতেন। কেউ দিনের পর দিন মাসের পর মাস পালায়ে থাকতেন। ২৫ হাজার কর্মী একসঙ্গে জেল খেটেছে। পৃথিবীর ইতিহাসে কোনো রাজনৈতিক দলের একসঙ্গে ২৫ হাজার কর্মী বছরের পর বছর জেল খাটে নাই। সেই বিএনপির ত্যাগী ও পাগলা কর্মী আপনারা। আপানারা তিন বছর জেলখানায় থাকার পরে গেট খুলে বের হয়েছেন। সামনে দেখছেন মিছিল যাচ্ছে বিএনপির। মার কাছে যান নাই, বাবার কাছে যান নাই, ওই মিছিলে ঢুকে আবার অ্যারেস্ট হয়েছেন। এই হলো বিএনপির নেতাকর্মী।
তিনি বলেন, গত ১৫ বছর দিনের পর দিন মাসের মাস আপানারা জেল খেটেছেন। ইলিয়াস আলীর মতো ১২ নেতারা গুম হয়ে গেছে। মারা গেছে, ২ হাজার গুলি খেয়েছে। ৫০ লাখ কর্মীর নামে মামলা হয়েছে। ২৮ অক্টোবর ২০২৪ সাল। ঢাকার মহাসমাবেশে ১০ লাখ মানুষের মহাসমাবেশে আজরাইল জল্লাদের শক্তি গুলি করেছে। ১০ মিনিটের গাজা উপাত্যকা বানিয়ে দিয়েছে। মরেছে গন্ডায় গন্ডায়, রক্তাক্ত হয়েছে হাজারে হাজার, জেলখানায় গিয়েছে হাজারে হাজার তারপরও স্লোগান দিয়েছি- এক দফা এক দাবি, শেখ হাসিনা তুই কবে যাবি। আমরা সেই জিয়াউর রহমানের কর্মী। আমরা দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার কর্মী।
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাইদ চাঁদের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সৈয়দ শাহীন শওকত। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির রাজশাহী মহানগরের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী ঈশা, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল হুদা ও সদস্য সচিব মামুন-অর-রশিদ মামুন।
চাটগাঁ নিউজ/এমকেএন

 
															
 
								




