আনোয়ারা প্রতিনিধি: বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটি চট্টগ্রাম বিভাগীয় ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাড. আহমেদ আজম খান বলেন, আমরা যে ৫ আগস্ট তৈরি করেছি তার পিছনে কাজ করেছে আগামীর রাষ্ট্রনায়ক তারেক রহমান।
আমরা মনে করেছিলাম নির্বাচন হবে। বাংলাদেশের জনগণ যখন নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করছে ঠিক সেই মুহুর্তে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে ষড়যন্ত্রকারীরা। ষড়যন্ত্রকারীরা বলছে আগে সংস্কার পরে নির্বাচন। আমরা বলি সংস্কারের জন্য এক বছর সময়, সংস্কারতো নির্বাচিত সরকার করবে। যারা সরকারে আসবে তারা সংস্কার করবে। ৫ আগস্ট আমরা যে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচারী সরকারকে বিদায় করেছি, ড. ইউনূসকে সম্মান করি, সম্মানের সাথে ক্ষমতা হস্তান্তর করে নির্বাচন দিন। ষড়যন্ত্রকারীরা আমাদের পথে নামতে বাধ্য করেছে।
আজ শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকালে চট্টগ্রামের আনোয়ারা সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আইন-শৃঙ্খলার উন্নতি, নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখা, দ্রুত গণতান্ত্রিক যাত্রাপথে উত্তরণের জন্য নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা এবং রাষ্ট্রের পতিত ফ্যাসিবাদের নানা চক্রান্তের অপচেষ্টা মোকাবেলাসহ বিভিন্ন জন-দাবীতে দক্ষিণ জেলা বিএনপির জনসমাবেশের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অ্যাড. আহমেদ আজম খান বলেন, আগামী নির্বাচন হবে অত্যন্ত কঠিন। এ নির্বাচন রাতে হবেনা, কারচুপি হবেনা, নির্বাচনে জনগণ ভোট দেবে। এ নির্বাচনে চট্টগ্রামের ১৬টি আসন তারেক রহমানকে উপহার দিতে হবে। কাল থেকেই নির্বাচনের প্রস্ততি নিন। ঘরে ঘরে মানুষের কাছে গিয়ে ভোট ভিক্ষা করুন।
তিনি আরো বলেন, আগামী ৫ আগস্ট এক বছর পূর্ণ হবে। ৫ অক্টোবর নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করুন আর ৫ ডিসেম্বর নির্বাচন হবে। যারা সরকারে যাবে তারা সংস্কার করবে। নইলে দেখেননি! ৫ আগস্ট কিভাবে জনগণ ফ্যাসিস্ট সরকারকে পালাতে বাধ্য করেছে! ষড়যন্ত্রকারীরা তা মনে রাখুন। আর কোন তালবাহানা নয়, নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করুন।
জনসমাবেশে দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক ইদ্রিস মিয়ার সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব লায়ন মোঃ হেলাল উদ্দিনের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী চট্টগ্রাম বিভাগীয় ভাইস চেয়ারম্যান এড. আহমেদ আজম খান, প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হারুনুর রশিদ (ভিপি হারুন) ও ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন।
অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক মহসিন জিল্লুর, সাবেক সংসদ সদস্য গাজী শাহজাহান জুয়েল, মহানগর বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব মোস্তাক আহমেদ খান, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ন আহ্বায়ক আলী আব্বাস, যুগ্ন আহ্বায়ক মিশকাতুল ইসলাম পাপ্পা, উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাস্টার রফিক, যুগ্ন আহ্বায়ক ছরোয়ার হোসেন, জাগির আহমদ, দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রবিউল আলম রবি, সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম সবুজ, ইসমাইল বিন মনির, শহীদুল ইসলাম সায়েমসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরা।
এদিকে জনসভাকে ঘিরে নেতা কর্মীরা দুপুর থেকে মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে আসা শুরু করে। ১৬ বছর পর দলের এমন আয়োজনে গত এক সপ্তাহ ধরে চলছে নেতা কর্মীদের মাঝে আনন্দ উচ্ছাস। নতুন করে উজ্জীবিত হয়ে উঠে দলের নেতা কর্মীরা।
দক্ষিণ জেলা বিএনপির সমাবেশ উপলক্ষে বিভিন্ন উপজেলা সদর, ইউনিয়ন পর্যায়ে বিএনপি ও তার সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে দুপুর থেকে আনোয়ারা ছাড়াও বাঁশখালী, কর্ণফুলী, পটিয়া, চন্দনাইশ, সাতকানিয়া, বোয়ালখালী ও লোহাগাড়া থেকে নেতা-কর্মীরা গাড়ির বহর নিয়ে সমাবেশে আসতে শুরু করেন। বেলা গড়াতেই সমাবেশস্থল কানায় কানায় ভরে যায়। এসময় আসপাশের সড়কসহ প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে সমাবেশের রেশ।
চাটগাঁ নিউজ/সাজ্জাদ/জেএইচ