ইফতেকার নূর তিশন : ‘আমার চাকরি জীবনে দুর্নীতিতে ভরা এমন প্রতিষ্ঠান আমি আর দেখিনি’ বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) সচিব রবীন্দ্র চাকমা। চট্টগ্রামের আউটার রিংরোড ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের অনিয়ম দুর্নীতি খতিয়ে দেখতে সিডিএতে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অভিযানকালে এ মন্তব্য করেন সিডিএ সচিব।
তিনি বলেন, দুর্নীতি প্রায় প্রতিষ্ঠানে থাকে, তবে আমার দীর্ঘদিনের চাকরি জীবনে এমন দুর্নীতি-অনিয়মে ভরা প্রতিষ্ঠান দেখিনি। মূলত এই প্রতিষ্ঠানে বেতন-ভাতা নিয়ে বেশি অনিয়ম হচ্ছে। যা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
জানা গেছে, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে দুর্নীতি খতিয়ে দেখতে সিডিএতে অভিযান পরিচালনার জন্য মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রধান কার্যালয় থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনা অনুযায়ী আজ বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর থেকে অভিযান শুরু করে দুদকের একটি টিম। যে টিমের নেতৃত্ব দেন সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এর সহকারী পরিচালক সাঈদ ইমরান।
তারা প্রথমে প্রবেশ করেন প্রকল্প পরিচালক ও সিডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী রাজীব দাশের রুমে। সেখানে কিছুক্ষণ থেকে পরে বের হয়ে চলে যান সিডিএ সচিব রবীন্দ্র চাকমার রুমে। এমন সময়ে তিনি দুদক টিমের উদ্দেশে এই মন্তব্য করেন।
পরে রবীন্দ্র চাকমার কক্ষ থেকে বের হয়ে দুদক টিম চলে যায় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প পরিচালক ও সিডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী মো: মাহফুজুর রহমানের কক্ষে। এসময় মাহফুজুর রহমান দাবি করেন— তিনি সিডিএর বেতনের বাইরে কোন অর্থ গ্রহণ করেননি। এমনকি ভ্রমণ ভাতা পর্যন্ত নেননি।
তবে দুদকের দাবি— তাদের কাছে তথ্য আছে আউটার রিংরোড নির্মাণে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। এতে জড়িত সিডিএর ৮ কর্মকর্তা। তবে কারা এই ৮ কর্মকর্তা সেটি খোলাসা করেনি দুদক।
পরবর্তীতে দুদক টিম সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস্ ও সিডিএর নগর পরিকল্পাবিদ আবু ঈসা আনসারীর কক্ষে প্রবেশ করে। তবে এসময় তাদের কাউকে পাওয়া যায়নি। জানা গেছে অফিসিয়াল কাজে সিডিএর বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা ঢাকায় অবস্থান করছেন।
দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এর সহকারী পরিচালক সাঈদ ইমরান এসময় বলেন, নগরীর এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ও আউটার রিংরোড নিয়ে অনিয়ম দুর্নীতির অনুসন্ধানে এসে বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার সাথে কথা হয়েছে। যারা ঢাকায় আছেন তাদের সাথেও কথা বলতে হবে। আমরা উপরের নির্দশনা মোতাবেক দ্রুত সময়ের মধ্যে আমাদের প্রতিবেদন জমা দিব। পরে নেওয়া হবে আইনগত ব্যবস্থা।
উল্লেখ্য, নগরীর লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। যার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে যৌথভাবে কাজ করছে বাংলাদেশের ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড ও চীনের র্যাঙ্কিন গ্রুপ। ১৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ উড়াল সড়ক নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৪ হাজার ২৯৮ কোটি টাকা।
চাটগাঁ নিউজ/তিশন/জেএইচ/এসএ

															
								




