বান্দরবান প্রতিনিধি : মিয়ানমারের অভ্যন্তরে রাখাইন রাজ্যে চলমান সংঘাতময় পরিস্থিতির জের ধরে বাংলাদেশে পালিয়ে এসে নতুন করে আশ্রয় নিয়েছেন দেশটির আরও ৪৬ সেনা ও বিজিপি সদস্য। এই ৪৬ জনের মধ্যে বিজিপির ছাড়াও সেনা সদস্য রয়েছেন। তবে কোন বাহিনীর কত জন তা এখন বলা যাচ্ছে না।
বুধবার (১৭ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১টার দিকে নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের ৪৪নং পিলার সাপমরা ঝিরি ও আশারতলী সীমান্ত দিয়ে প্রাণ বাঁচাতে আরও ৪৬ জান্তা সদস্য বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন। তাদেরকে নিরস্ত্র করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) হেফাজতে রয়েছেন।
এ নিয়ে গত এক মাসে নাইক্ষ্যংছড়ির সীমান্ত দিয়ে ২৬০ জন মিয়ানমারের বিজিপি ও সেনা সদস্য পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) জনসংযোগ কর্মকর্তা (পিআরও) শরিফুল ইসলাম তিনি জানান, মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি), সেনাবাহিনী ও ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাসহ মিয়ানমারের মোট ২৬০ জন সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন।
বিজিবি সূত্র জানা যায়, পালিয়ে আশ্রয় নেওয়া সীমান্তরক্ষীর (বিজিপি) সদস্যদের ১১ বিজিবির ব্যাটালিয়ন–সংলগ্ন বিজিবি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রাখা হয়েছে। তাদের পরিচয় শনাক্তের পাশাপাশি তথ্যভান্ডার তৈরির কাজ চলছে। এরপর তাদের স্বদেশে ফেরতের প্রক্রিয়া শুরু হবে।
সীমান্তের একাধিক সূত্র জানায়, টানা আড়াই-তিন মাস ধরে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছে দেশটির সশস্ত্র গোষ্ঠি আরাকান আর্মি (এএ)। তুমুল যুদ্ধে ইতিমধ্যে মংডু টাউনশীপের উত্তর-দক্ষিণ, পূর্ব পাশের রাচিডং টাউনশীপসহ ১২ থেকে ১৫টি থানা ও পুলিশ ক্যাম্প দখলে নিয়েছে আরাকান আর্মি।
মাস ধরে বুচিডং ও মংডু টাউনশীপ দখলের জন্য শক্ত মহড়া প্রয়োগ করছে বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি। দখলে নেওয়া সীমান্ত চৌকি ও পুলিশ ক্যাম্পগুলো পুনরুদ্ধারে সরকার বাহিনী বিমান হামলা ও শক্তিশালী মর্টারশেল নিক্ষেপ করেছে। এ সংঘাতময় পরিস্থিতি দিন দিন নতুন নতুন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে মঙ্গলবার বিকেলে বিজিবির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, কোনো প্রকার জটিলতা সৃষ্টি না হলে চলতি এপ্রিলেই মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা জান্তা সদস্যদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হতে পারে।
উল্লেখ্য, গত ২ ফেব্রুয়ারি রাত থেকে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সীমান্তের ওপারে আরাকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির সংঘর্ষ শুরু হয়। এর জের ধরে ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশে পালিয়ে আসে বিজিপির সদস্যসহ ৩৩০ জন। যার মধ্যে ৩০২ জন বিজিপি সদস্য, ৪ জন বিজিপি পরিবারের সদস্য, ২ জন সেনাসদস্য, ১৮ জন ইমিগ্রেশন সদস্য ও ৪ জন বেসামরিক নাগরিক। বাংলাদেশে পালিয়ে আসা মিয়ানমারের সেনাসহ ৩৩০ জনকে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে ফেরত পাঠানো হয়।
চাটগাঁ নিউজ/এসএ