“৯০ বছর বয়সেও চশমা ছাড়া নকশি কাঁথা সেলাই করেন আশালতা”

ঝুলন দত্ত: কাপ্তাই প্রতিনিধি: চট্টগ্রাম মহানগর এলাকার উত্তর কাট্রলির প্রশান্তি আবাসিক এলাকার মীনা হাউজ এর তৃতীয় তলা। রবিবার (১৯ মে) রাত সাড়ে ৮ টায় দেখা মেলে ৯০ বছর বয়সী আশালতা বড়ুয়ার। তিনি তাঁর মেয়ে সাধনা বড়ুয়া এবং মেয়ের জামাই অবসরপ্রাপ্ত সওজ এর কর্মকর্তা কমল বিন্দু বড়ুয়ার বাসায় থাকেন। এসময় চশমা ছাড়া হুইল চেয়ারে বসে আশালতা বড়ুয়াকে নকশি কাঁথা সেলাই করতে দেখা যায়।

কথা হয় এই প্রতিবেদকের সাথে আশালতা বড়ুয়ার।হুইল চেয়ারে বসে তিনি বলেন, সেই ছোট বেলা হতে আমি হাতের কাজের পারদর্শী ছিলাম। ১১ বছর বয়সে বিয়ে হবার পর ফটিকছড়ি হাইদচকিয়া শশুড় বাড়িতে সংসারের ফাঁকে ফাঁকে আমি কাঁথা সেলাই সহ নানা রকম হাতের কাজ করতাম। আমার স্বামী অনেক বছর আগে মারা যান। একটা এক্সিডেন্টে আমার ডান পায়ে আঘাত পাই। বিগত ৮ বছর ধরে আমি মেয়ের বাসায় হুইল চেয়ারে বসে এই কাঁথা সেলাই করছি। আমার এক ছেলে ছিল সেই মারা গেছে, তাই মেয়ে আমাকে তাঁর বাসায় নিয়ে আসে। আমি কোনরকম চশমা ছাড়া কাঁথা সেলাই করতে পারি। একটা কাঁথা সেলাই করতে ১৫ থেকে ২০ দিন সময় লাগে। এই পর্যন্ত শত শত কাঁথা আমি সেলাই করেছি। এটা আমার আনন্দ লাগে। মেয়ে, নাতি এবং তাদের ছেলে মেয়েদের এই কাঁথা গুলো দিয়ে দিই। সেলাই করতে না পারলে আমার সময় কাটে না।

৯০ বছর বয়সী আশালতা বড়ুয়া, যিনি এখনো চশমা ব্যবহার না করেই কাঁথা সেলাই সহ সব কাজ করেন।

এসময় কথা হয় আশালতা বড়ুয়ার নাতনি বেতার শিল্পী ও শিক্ষক পপি বড়ুয়ার সাথে। তিনি বলেন, আমার দিদা অনেক সুন্দর করে কাঁথা সেলাই করতে পারেন। সুন্দর সুন্দর নকশি কাঁথা সেলাই করেন তিনি। দিদা বসে থাকতে পছন্দ করেন না। কাঁথা সেলাই করতে না পারলে তাঁর মাথা খারাপ হয়ে যায়, অস্থির অস্থির লাগে তাঁর। তিনি চশমা ব্যবহার ছাড়া কাঁথা সেলাই করেন।

আশালতা বড়ুয়ার নাতনির ছেলে অনিরুদ্ধ উপল বলেন, আমি উনাকে বড় মা ডাকি। উনি অবসর সময়ে কাঁথা সেলাই করেন। এটা আমাদের বাঙালি সংস্কৃতির মধ্যে পড়ে।

চাটগাঁ নিউজ/জেডি/আইএস

Scroll to Top