চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: সাবেক পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উ শৈ সিং এবং তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ ও সন্দেহভাজন লেনদেনের অভিযোগ এনে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ রোববার (৩ আগস্ট) রাজধানীতে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এসব মামলা করা হয়। বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন।
জানা গেছে, ক্ষমতায় থাকাকালে নিজের ও স্ত্রীর নামে কোটি কোটি টাকার সম্পদ গড়েছেন সাবেক পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উ শৈ সিং। তার বিরুদ্ধে প্রায় সাড়ে ১১ কোটি টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদের মালিকানা এবং ৭৪ কোটি টাকার সন্দেহভাজন লেনদেনের অভিযোগ এনেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে বীর বাহাদুর ও তার স্ত্রী মে হ্লা প্রু’র বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছে সংস্থাটি।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, বীর বাহাদুর উ শৈ সিংয়ের নামে থাকা ১৩টি ব্যাংক হিসাবে মোট জমা হয়েছে ৩২ কোটি ১৬ লাখ ৫৮ হাজার ৪০২ টাকা। একই সময়ে এই হিসাবগুলো থেকে উত্তোলন করা হয়েছে ২৬ কোটি ২৪ লাখ ২৫ হাজার ১০৫ টাকা। সবমিলিয়ে মোট ৫৮ কোটি ৪০ লাখ ৮৩ হাজার ৫০৭ টাকার লেনদেনকে সন্দেহজনক হিসেবে চিহ্নিত করেছে দুদক।
এছাড়া দুদকের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে, বীর বাহাদুরের নামে রয়েছে ৯ কোটি ১৭ লাখ ৮৬ হাজার ৪৬৪ টাকার অবৈধ সম্পদ, যা তার বৈধ আয়ের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছে সংস্থাটি। এই অভিযোগের ভিত্তিতেই তার বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদের মামলা করা হয়েছে।
তবে শুধু মন্ত্রী নন, তার স্ত্রী মে হ্লা প্রু’র বিরুদ্ধেও এসেছে বিপুল অঙ্কের টাকার লেনদেনের অভিযোগ। দুদকের দ্বিতীয় মামলায় বলা হয়েছে, মে হ্লা প্রু’র নামে থাকা ৬টি ব্যাংক হিসাবে ৯ কোটি ৩০ লাখ ৭২ হাজার ২৩ টাকা জমা এবং ৬ কোটি ২৮ লাখ ৯ হাজার ১৬১ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। সবমিলিয়ে প্রায় ১৫ কোটি ৫৮ লাখ ৮১ হাজার টাকার আর্থিক লেনদেনকে সন্দেহজনক বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।
এছাড়া তার বিরুদ্ধে ৩ কোটি ৩৫ লাখ ৯৪ হাজার ৭৪ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগও আনা হয়েছে। এসব সম্পদের উৎস সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য না থাকায় এবং তার আয় বিবরণের সঙ্গে এসব সম্পদের সামঞ্জস্য না থাকায় দুদক মামলা দায়ের করেছে। এই মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে মে হ্লা প্রু’কে এবং সহযোগী হিসেবে রাখা হয়েছে তার স্বামী বীর বাহাদুরকে।
এই দুই মামলায় দুদক ‘দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪’-এর ২৭(১) ধারা, ‘মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২’-এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা এবং দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় অভিযোগ এনেছে।
চাটগাঁ নিউজ/জেএইচ/এসএ