নিজস্ব প্রতিবেদক: ছয় দফা দাবিতে চট্টগ্রামে আমরণ অনশনের ডাক দিয়েছে কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের আওতাভুক্ত শিক্ষার্থীদের জোট কারিগরি ছাত্র আন্দোলন।
এরই অংশ হিসেবে আজ সোমবার (২১ এপ্রিল) বেলা ১২ টায় নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিন করে জামাল খান চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে জমায়েত হয় শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা রাস্তার একপাশ অবরোধ করে আন্দোলন শুরু করে।
এ সময় শিক্ষার্থীরা জানান, ৬ দফা দাবি পূরণের লক্ষ্যে তারা মাঠে নেমেছেন। তাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা রাজপথ ছাড়বেন না। আমরণ অনশন করবেন শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনকারী এক শিক্ষার্থী ফারহা লিয়াকত বিনতে ইলা বলেন, প্রধান উপদেষ্টা যতক্ষন পর্যন্ত আমাদের দাবি মেনে নিবেন না ততক্ষন পর্যন্ত এই আমরণ অনশন চলমান থাকবে।
চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী শিহাব উদ্দীন বলেন, আমাদের দাবি অযৌক্তিক না, আমরা আমাদের অধিকার আদায়ে আন্দোলন করছি। আমাদের ছয় দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন-অনশন চলবে।
কারিগরি শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবিগুলো হলো-
১। জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের অবৈধ পদোন্নতির রায় হাইকোর্ট কর্তৃর্ক বাতিল করতে হবে। পাশাপাশি, ক্রাফট ইন্সট্রাক্টর পদবি পরিবতর্ন ও মামলার সাথে সংশ্লিষ্টদের স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করতে হবে। ২০২১ সালে রাতের আঁধারে নিয়োগপ্রাপ্ত ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের নিয়োগ সম্পূর্ণভাবে বাতিল এবং সেই বিতর্কিত নিয়োগবিধি অবিলম্বে সংশোধন করতে হবে।
২। ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে যেকোনো বয়সে ভর্তির সুযোগ বাতিল সহ উন্নত বিশ্বের আদলে চার বছর মেয়াদি মানসম্পন্ন কারিকুলাম নিশ্চিত করে একাডেমিক কার্যক্রম পরবর্তী প্রবিধান থেকে পর্যায়ক্রমিক ভাবে সম্পূর্ণ ইংরেজি মাধ্যমে চালু করতে হবে।
৩। উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও সমমান (১০ম গ্রেড) এর পদ চার বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং ও মনোটেকনোলজি (সার্ভেয়িং) হতে পাশকৃত শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত থাকা সত্ত্বেও, যেসব সরকারি, রাষ্ট্রায়ত্ত, স্বায়ত্তশাসিত ও স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের নিম্নস্থ পদে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৪। কারিগরি সেক্টর পরিচালনায় পরিচালক, সহকারী পরিচালক, বোর্ড চেয়ারম্যান, উপসচিব, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও অধ্যক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সকল পদে কারিগরি শিক্ষা বহির্ভূত জনবল নিয়োগ নিষিদ্ধ করতে হবে এবং তা আইনানুগভাবে নিশ্চিত করতে হবে। এই পদগুলোতে অনতিবিলম্বে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল নিয়োগ এবং সকল শুন্য পদে দক্ষ শিক্ষক ও ল্যাব সহকারি নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে।
৫। কারিগরি শিক্ষায় বৈষম্য ও দুরাবস্থা দূর করার পাশাপাশি দক্ষ জনসম্পদ তৈরীতে ” কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয়” নামে স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করে দ্রুত সময়ের মধ্যে কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন করতে হবে।
৬। পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক ইন্সটিটিউট হতে পাসকৃত শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগের লক্ষ্যে একটি উন্নতমানের টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। পাশাপাশি, নির্মানাধীন চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ (নড়াইল, নাটোর, খাগড়াছড়ি ও ঠাকুরগাঁও) এ পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক হতে পাশকৃত শিক্ষার্থীদের জন্য অস্থায়ী ক্যাম্পাস ও ডুয়েটের আওতাভুক্ত একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে আগামী সেশন থেকে শতভাগ সিটে ভর্তির সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।
চাটগাঁ নিউজ/এইচএস/এমকেএন