৬ দফার ইংরেজী অনুবাদক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন খালেদ চৌধুরী আর নেই

সিপ্লাস ডেস্ক: ৬ দফার ইংরেজী অনুবাদক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন খালেদ চৌধুরী আর নেই (ইন্নালিল্লাহী ওয়া ইন্না ইলাহী রাজিউন)। তিনি ১৩ আগষ্ট (রবিবার) দুপুর ১২ টায় চট্টগ্রাম নগরীর সুগন্ধা আবাসিক এলাকার নিজ বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। তিনি দীর্ঘদিন বার্ধক্য জনিত রোগে ভুগছিলেন। পারিবারিক সুত্রে জানা গেছে, আসরের পর সুগন্ধা জামে মসজিদে ১ম নামাজে জানাযা ও এশার নামাজের পর তাঁর নিজ এলাকা হাটহাজারী উপজেলার নাঙ্গলমোড়া ইউনিয়নের মুকিম চৌধুরী বাড়ির নিজ বাড়ীতে ২য় নামাজে জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী হিসেবে তৎকালীন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের শিক্ষা ও পাঠচক্র সম্পাদক ছিলেন তিনি। ঐ অবস্থায় চট্টগ্রামের মেধাবী ছাত্র হিসেবে তৎকালীন স্পীকার ফজলুল কাদের চৌধুরী তাঁকে ডেকে নিয়ে ব্যক্তিগত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন।

জানা গেছে, ১৯৬৬ সালে যখন চারদিকে ৬ দফা আন্দোলন চলছিলো সে সময় এই ৬ দফা লেখা হয়েছিলো বাংলাতে। পরবর্তীতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের নির্দেশে ৬ দফার ইংরেজী অনুবাদের দায়িত্ব দেয়া হয় তৎকালীন ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দদেরকে। আর শিক্ষা ও পাঠচক্র সম্পাদক থাকায় এই ৬ দফা দাবীগুলোর সরাসরি ইংরেজী অনুবাদ করে দিয়েছিলেন অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন।

অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন খালেদ চৌধুরীর পুরনো ছবি

হাটহাজারী উপজেলার নাঙ্গলমোড়া ইউনিয়নের মুকিম চৌধুরী বাড়ির কৃতিসন্তান অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন খালেদ চৌধুরী একাধারে ছিলেন লেখক, শিক্ষক ও রাজনীতিবিদ। তিনি হাটহাজারী থানা আওয়ামী লীগের সদস্য ছিলেন। এর আগে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন।

তিনি চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজে দীর্ঘজীবন শিক্ষকতা করেছেন । মৃত্যুকালে তিনি ৩ মেয়ে আর ১ ছেলেসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। গুনি এই মানুষের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন চট্টগ্রামের অসংখ্য ব্যক্তিবর্গ, নিজেদের ফেসবুকে জানিয়েছেন শোকবার্তা।

সিপ্লাসটিভির সম্পাদক আলমগীর অপু তাঁর ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, আমার দেখা লেখাপড়া জানা মানুষগুলোর মধ্যে উনি অসাধারণ এবং সত্যিকার মানুষগুলোর মধ্যে অন্যতম একজন ব্যক্তি ছিলেন। আমি উনাকে চাচা ডাকতাম। সেই ১৯৯৪ সালে এইচএসসি পড়তে শহরে এসে উনার সাথে যে পরিচয় হয়েছিলো, আজ অবধি সম্পর্কটা বাবা ছেলের মতোই ছিলো। এই সেদিন চারদিন আগে হাসপাতালে শুয়া অবস্থায় উনি তেমন কথা বলছিলেন না বলে, উনার ছেলে রাসেল আমাকে জানালে আমি দেখতে গেলাম। আমাকে দেখে অন্যরকম আনন্দ উপভোগ করেছিলেন। আমি বলেছিলাম চাচা সুস্থ হয়ে উঠুন, আবার লেখালেখিতে নামতে হবে। সেদিন বলেছিলেন, হেসেছিলেন, আবার লেখালেখি চলবে কথা দিয়েছিলেন কিন্তু আজ সেই ক্ষুরধার কলমটি নিভে গেলেন! উনার নামাজে জানাজা বাদে আসর সুগন্ধা জামে মসজিদ আর বাদ এশা নাঙ্গলমোড়া নিজ বাড়িতে এবং সেখানেই দাফন হবে।

Scroll to Top